পুরোনো বন্ধু লিওনেল মেসির সঙ্গে একই ক্লাবে খেলবেন বলে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে এক দশকের সম্পর্ক ছিন্ন করে ২০২১ সালের গ্রীষ্মের দলবদলে বার্সেলোনায় নাম লেখান সের্হিও আগুয়েরো। কিন্তু মেসির সঙ্গে কাতালান ক্লাবটিতে খেলা হয়নি আগুয়েরোর। সেবারই বহু নাটকীয়তায় বার্সা ছাড়তে হয় মেসিকে। আগুয়েরো যে কাতালান ক্লাবটিতে বেশিদিন খেলতে পেরেছেন, এমন নয়। মাঠে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হয়ে ডাক্তারের পরামর্শে বুটজোড়া তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নেন সে বছরের ডিসেম্বরেই।
মাঝের এ সময়টাতে বার্সার জার্সিতে ৫ ম্যাচ খেলেছেন আগুয়েরো। হৃদ্যন্ত্রের সমস্যায় বার্সা ছাড়লেও কাতালান ক্লাবটির সঙ্গে আর্থিক বিষয় পুরোপুরি সুরাহা হয়নি সাবেক আর্জেন্টাইন তারকার। চুক্তি বাতিল প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এখনো বার্সার থেকে ৩.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাওনা আছে বলে অভিযোগ করে একটি মামলা করেছিলেন আগুয়েরো। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৩৮ কোটি ২৬ লাখ টাকারও বেশি। মামলাটি এখনো আদালতে চলমান অবস্থায় আছে। ক্রীড়া বিষয়ক সংবাদ মাধ্যম ইএসপিএন এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে।
ইএসপিএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বার্সার ২০২৩-২৪ মৌসুমের আর্থিক প্রতিবেদন দেখার সুযোগ পেয়েছে তারা। সেখানেই আগুয়েরোর পাওনা আদায়ে মামলার বিষয়টি উল্লেখ আছে। সে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ক্লাবের প্রাক্তন খেলোয়াড় সের্হিও আগুয়েরো ২০২৪ সালের ২৯ মে ৩ মিলিয়ন ইউরো দাবি করে একটি মামলা করেছেন। তাঁর (আগুয়েরোর) মতে, ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি শেষের অংশ হিসেবে এটা তাঁর পাওনা।’
বার্সার সে আর্থিক প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘২০২৪ সালের ২১ জুন পর্যন্ত, দুই পক্ষের মধ্যে কোনো আর্থিক সমঝোতা হয়নি। ক্লাব এখন পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য স্থানীয় আদালতের নির্দেশনার অপেক্ষা করছে।’
বার্সার আর্থিক প্রতিবেদনে ‘মামলা’ বা ‘মোকাদ্দমা’ নামের যে অধ্যায়টি আছে, সেখানে নয়টি কেসের মধ্যে আগুয়েরোর ব্যাপারটিও আছে বলে জানিয়েছে ইএসপিএন। শুধু আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার নয়, ‘স্কোরস স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট’ নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান বার্সার কাছে প্রায় ১০.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাওনা দাবি করেছে বলে বলা হয় ইএসপিএনের প্রতিবেদনে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১৩০ কোটি টাকারও বেশি।
গত মৌসুমে ফরাসি উইঙ্গার উসমান ডেম্বেলের বার্সা থেকে পারি সাঁ জামেইতে (পিএসজি) দল বদলের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ছিল প্রতিষ্ঠানটি। মূলত সে দলবদল সম্পন্ন করার অংশ হিসেবে এ পাওনা দাবি করে করেছে স্কোরস স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট। এ ঘটনাটিও সুরাহা করতে স্থানীয় আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে কাতালান ক্লাবটি। তবে বার্সার বিরুদ্ধে পাওনা আদায়ে আইনি লড়াইয়ের জন্য আগ্রহ দেখিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি, এমনটা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
বার্সার আর্থিক প্রতিবেদনটি এ সপ্তাহে ক্লাবের নির্বাচিত সদস্যদের কাছে পাঠানো হয়েছে। আগামী ১৯ অক্টোবর নির্দিষ্ট সদস্যদের নিয়ে বসবে বার্সার সাধারণ সভা। সেখানে বার্সার ২০২৩-২৪ মৌসুমের আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে চ্যালেঞ্জ জানানোর সুযোগ পাবেন তারা। সে সভায় সর্বশেষ মৌসুমে বার্সার ৯৯.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হবে।