ঢাকা ০৯:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দুর্নীতিতে থমকে গেছে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০২:১৩:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৩৬২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বহুতল ভবনের ছাদে সৌরপ্যানেল স্থাপনে নতুন সম্ভাবনা থাকলেও নানা অনিয়মে থমকে আছে কাজ। ভবন মালিকরা মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করে প্যানেল বসালেও জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা যায়নি। এতে আগ্রহ হারিয়েছেন তারা। অন্যদিকে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিগত সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও দুর্নীতির কারণে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

সোলার প্যানেলর ফাঁকে রবির আলো যেন প্রাকৃতিক উৎসের নিখুঁত ক্যানভাস। আলোর খেলার এ পুরো আয়োজন নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে।

সৌর বিদ্যুতের প্রসারে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি ভবনের ছাদে ৩.৫ মেগাওয়াট সক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল বসানো হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ চাহিদার ১০ শতাংশ পূরণ হবে। যার মধ্যে দিয়ে প্রতিবছর সাশ্রয় হবে অর্ধ কোটি টাকা।

সৌরবিদ্যুৎ এ প্রকল্প বুয়েটের কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাবে প্রায় ৫৬ হাজার ৫০৭ টন। চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ চলে যাবে জাতীয় গ্রিডে এ প্রকল্পে আগামী ২৫ বছরে সাশ্রয় করবে হবে প্রায় ১২ কোটি টাকা। ২৫ বছরে বুয়েট নিজস্ব জনবল দিয়ে প্রকল্পটি পরিচালনা করলে এই পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ২৫ কোটি টাকা।

সৌর বিদ্যুৎ প্রজেক্টের অ্যাসিসটেন্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী এ এম আব্দুল্লাহ অনিক বলেন, ‘বুয়েট সোলার রুফটপ প্রজেক্টের প্রায় শেষ পর্যায়ে আছি আমরা। দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই আমরা এটা শেষ করতে পারবো।’

গত দেড় দশকে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বেড়েছে পাঁচ গুণের বেশি। সবশেষ ২০১৬ সালের মহাপরিকল্পনা অনুসারে, ২০২১ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার ১০ শতাংশ আসার কথা নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে। এরপর আরও দুই বছর পেরিয়ে গেলেও, এখন পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে মাত্র তিন শতাংশ। এর কারণ হিসেবে রাজনৈতিক দলের অদূরদর্শী সিদ্ধান্তকেই দায়ী করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ সালেক সুফি বলেন, ‘সরকারের রাজনৈতিক প্ল্যান সাকসেসফুল করার জন্য সবাইকে বিদ্যুৎ সরবরাহের আওতায় আনতে হবে, এটার জন্য পাওয়ার ট্রান্সমিশন গ্রিড সারাদেশে ছড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে সোলার সিস্টেম প্রোগ্রামটা মার খেয়ে গেছে। বিদ্যুৎ সেক্টরে অপশাসন ও দুর্নীতির কারণে আমরা এ সংকটের মধ্যে পড়েছি। আমাদের একটা নীতি থাকা উচিত ছিল।’

২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৪ হাজার ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। যদিও বর্তমানে উৎপাদন সক্ষমতা আছে মাত্র ১ হাজার ২২৬ মেগাওয়াট। যার মধ্যে ৯৯২ মেগাওয়াটই সৌরবিদ্যুৎ থেকে। বর্তমানে যে উৎপাদন সক্ষমতা, তার পুরোটা অবশ্য গ্রিডে যুক্ত নেই। কিন্তু কেনো?

জেটনেট-বিডির মেম্বার সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘অনেকেই যাচ্ছে নেট মেটারিং নেয়ার জন্য, কিন্তু তারা নেট মেটারিং তারা দিতে পাচ্ছে না। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এগুলোর অনুমোদন দিতে পাচ্ছে না। কারণ এটা যদি ব্যাপকভাবে হতে থাকে তাহলে আমাদের গ্রিড ফল করবে। সমস্যাটা আসলে টেকনিক্যাল জায়গায়। আমাদের ইনভেস্টমেন্টটা করা দরকার ছিল গ্রিডকে স্মার্ট করার জন্য।’

এ গবেষক জানালেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে দেশে যতটা কথা হচ্ছে, কাজ হচ্ছে তার তুলনায় কম। এর জন্য প্রয়োজন নীতিগত পরিবর্তন।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘প্ল্যানিংটা আসলে নতুন করে ভাবতে হবে। এবং বাংলাদেশের কনটেক্সটকে বুঝতে হবে। যে বাংলাদেশটা ইউরোপ না। যে ১৬ বা ১৭ শতাংশ গ্রামীণ চাহিদা আছে, এটা চাইলে পুরোটাই নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে সোর্স করা যেতে পারে। এটা দিয়ে কৃষি কাজও হবে, সোলার বা উইন্ডও হবে। এগুলো কিন্তু আমরা এক্সপেরিমেন্ট করছি না। আমরা মূল ফোকাস দিয়েছি মেগাপ্রজেক্টে।’

সারাদেশে বছরে অন্তত ২০ হাজার বহুতল ভবন নির্মিত হয়। এর মধ্যে রাজধানীতেই প্রায় চার হাজার। ভবনের আয়তন ছয় হাজার বর্গফুটের বেশি হলেই সোলার প্যানেল সংযোজনে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বাধ্য হয়েই সোলার প্যানেল বসান ভবন নির্মাতা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান। তবে অনেকটাই অকার্যকর থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রাহক কেন অর্থ খরচ করে সোলার বসাবে তা স্পষ্ট করতে হবে।

ক্যাপসের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘আমাদের যতটুকু বিদ্যুৎ প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি প্রডাকশন ক্যাপাসিটি নিয়ে আমাদের পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো বসে আছে। বাসাবাড়িতে আইপিএস ব্যবহার করছে। সেখানে মানুষ কনভেন্স না যে, কেন সে সোলার ব্যবহার করবে। তার কাছে ওই কথাটা পৌঁছায়নি যে বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের সোলার ব্যবহার করতে হবে।’

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ সালেক সুফি বলেন, ‘সোলারকে বাস্তবায়ন করতে হলে পেট্রোবাংলা বা পিডিবির মতো একটা পৃথক সংস্থা করতে হবে। পুরোপুরি দায়িত্ব দিতে হবে। যেন তারা সোলারের ইন্সটলেশন প্রোপার কোয়ালিটি মেনে করতে পারে।’

তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে সোলার প্যানেল স্থাপন করলে বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে সরকারের। সেই সঙ্গে পরিবেশে ও প্রতিবেশের প্রতি নিজের দায়িত্বটাও জানাতে হবে নাগরিকদের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এটা থেকে পরিবেশের কোনো দূষণ হয় না। এটাকে ক্লিন এনার্জি আমরা বলতে পারি। ফুয়েলের মাধ্যমে যে বিদ্যুৎ তৈরি হচ্ছে সেটা দিনদিন বাড়ছে। তাহলে নবায়নযোগ্য শক্তির মাধ্যমে অবশ্যই আমরা ফিজিবল সিস্টেম তৈরি করতে পারবো বলে আমি আশা করি।’

বাংলাদেশে প্রতি কিলোওয়াট সৌর বিদ্যুৎ ক্রয়ে চুক্তি হচ্ছে ৯ থেকে ১০ সেন্টে। অপরদিকে ভারতে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের দাম অনুমোদন হয় ৩ সেন্টে আর পাকিস্তানে ৫ সেন্ট। জীবাশ্ম জ্বালানির দামে অস্থিতিশীলতা, ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ও জলবায়ুর ক্ষতির কারণে নবায়নযোগ্য শক্তিই ভবিষ্যৎ পৃথিবীকে পথ দেখাচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

দুর্নীতিতে থমকে গেছে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উদ্যোগ

আপডেট সময় : ০২:১৩:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪

বহুতল ভবনের ছাদে সৌরপ্যানেল স্থাপনে নতুন সম্ভাবনা থাকলেও নানা অনিয়মে থমকে আছে কাজ। ভবন মালিকরা মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করে প্যানেল বসালেও জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা যায়নি। এতে আগ্রহ হারিয়েছেন তারা। অন্যদিকে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিগত সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও দুর্নীতির কারণে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

সোলার প্যানেলর ফাঁকে রবির আলো যেন প্রাকৃতিক উৎসের নিখুঁত ক্যানভাস। আলোর খেলার এ পুরো আয়োজন নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে।

সৌর বিদ্যুতের প্রসারে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি ভবনের ছাদে ৩.৫ মেগাওয়াট সক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল বসানো হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ চাহিদার ১০ শতাংশ পূরণ হবে। যার মধ্যে দিয়ে প্রতিবছর সাশ্রয় হবে অর্ধ কোটি টাকা।

সৌরবিদ্যুৎ এ প্রকল্প বুয়েটের কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাবে প্রায় ৫৬ হাজার ৫০৭ টন। চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ চলে যাবে জাতীয় গ্রিডে এ প্রকল্পে আগামী ২৫ বছরে সাশ্রয় করবে হবে প্রায় ১২ কোটি টাকা। ২৫ বছরে বুয়েট নিজস্ব জনবল দিয়ে প্রকল্পটি পরিচালনা করলে এই পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ২৫ কোটি টাকা।

সৌর বিদ্যুৎ প্রজেক্টের অ্যাসিসটেন্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী এ এম আব্দুল্লাহ অনিক বলেন, ‘বুয়েট সোলার রুফটপ প্রজেক্টের প্রায় শেষ পর্যায়ে আছি আমরা। দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই আমরা এটা শেষ করতে পারবো।’

গত দেড় দশকে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বেড়েছে পাঁচ গুণের বেশি। সবশেষ ২০১৬ সালের মহাপরিকল্পনা অনুসারে, ২০২১ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার ১০ শতাংশ আসার কথা নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে। এরপর আরও দুই বছর পেরিয়ে গেলেও, এখন পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে মাত্র তিন শতাংশ। এর কারণ হিসেবে রাজনৈতিক দলের অদূরদর্শী সিদ্ধান্তকেই দায়ী করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ সালেক সুফি বলেন, ‘সরকারের রাজনৈতিক প্ল্যান সাকসেসফুল করার জন্য সবাইকে বিদ্যুৎ সরবরাহের আওতায় আনতে হবে, এটার জন্য পাওয়ার ট্রান্সমিশন গ্রিড সারাদেশে ছড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে সোলার সিস্টেম প্রোগ্রামটা মার খেয়ে গেছে। বিদ্যুৎ সেক্টরে অপশাসন ও দুর্নীতির কারণে আমরা এ সংকটের মধ্যে পড়েছি। আমাদের একটা নীতি থাকা উচিত ছিল।’

২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৪ হাজার ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। যদিও বর্তমানে উৎপাদন সক্ষমতা আছে মাত্র ১ হাজার ২২৬ মেগাওয়াট। যার মধ্যে ৯৯২ মেগাওয়াটই সৌরবিদ্যুৎ থেকে। বর্তমানে যে উৎপাদন সক্ষমতা, তার পুরোটা অবশ্য গ্রিডে যুক্ত নেই। কিন্তু কেনো?

জেটনেট-বিডির মেম্বার সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘অনেকেই যাচ্ছে নেট মেটারিং নেয়ার জন্য, কিন্তু তারা নেট মেটারিং তারা দিতে পাচ্ছে না। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এগুলোর অনুমোদন দিতে পাচ্ছে না। কারণ এটা যদি ব্যাপকভাবে হতে থাকে তাহলে আমাদের গ্রিড ফল করবে। সমস্যাটা আসলে টেকনিক্যাল জায়গায়। আমাদের ইনভেস্টমেন্টটা করা দরকার ছিল গ্রিডকে স্মার্ট করার জন্য।’

এ গবেষক জানালেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে দেশে যতটা কথা হচ্ছে, কাজ হচ্ছে তার তুলনায় কম। এর জন্য প্রয়োজন নীতিগত পরিবর্তন।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘প্ল্যানিংটা আসলে নতুন করে ভাবতে হবে। এবং বাংলাদেশের কনটেক্সটকে বুঝতে হবে। যে বাংলাদেশটা ইউরোপ না। যে ১৬ বা ১৭ শতাংশ গ্রামীণ চাহিদা আছে, এটা চাইলে পুরোটাই নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে সোর্স করা যেতে পারে। এটা দিয়ে কৃষি কাজও হবে, সোলার বা উইন্ডও হবে। এগুলো কিন্তু আমরা এক্সপেরিমেন্ট করছি না। আমরা মূল ফোকাস দিয়েছি মেগাপ্রজেক্টে।’

সারাদেশে বছরে অন্তত ২০ হাজার বহুতল ভবন নির্মিত হয়। এর মধ্যে রাজধানীতেই প্রায় চার হাজার। ভবনের আয়তন ছয় হাজার বর্গফুটের বেশি হলেই সোলার প্যানেল সংযোজনে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বাধ্য হয়েই সোলার প্যানেল বসান ভবন নির্মাতা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান। তবে অনেকটাই অকার্যকর থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রাহক কেন অর্থ খরচ করে সোলার বসাবে তা স্পষ্ট করতে হবে।

ক্যাপসের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘আমাদের যতটুকু বিদ্যুৎ প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি প্রডাকশন ক্যাপাসিটি নিয়ে আমাদের পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো বসে আছে। বাসাবাড়িতে আইপিএস ব্যবহার করছে। সেখানে মানুষ কনভেন্স না যে, কেন সে সোলার ব্যবহার করবে। তার কাছে ওই কথাটা পৌঁছায়নি যে বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের সোলার ব্যবহার করতে হবে।’

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ সালেক সুফি বলেন, ‘সোলারকে বাস্তবায়ন করতে হলে পেট্রোবাংলা বা পিডিবির মতো একটা পৃথক সংস্থা করতে হবে। পুরোপুরি দায়িত্ব দিতে হবে। যেন তারা সোলারের ইন্সটলেশন প্রোপার কোয়ালিটি মেনে করতে পারে।’

তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে সোলার প্যানেল স্থাপন করলে বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে সরকারের। সেই সঙ্গে পরিবেশে ও প্রতিবেশের প্রতি নিজের দায়িত্বটাও জানাতে হবে নাগরিকদের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এটা থেকে পরিবেশের কোনো দূষণ হয় না। এটাকে ক্লিন এনার্জি আমরা বলতে পারি। ফুয়েলের মাধ্যমে যে বিদ্যুৎ তৈরি হচ্ছে সেটা দিনদিন বাড়ছে। তাহলে নবায়নযোগ্য শক্তির মাধ্যমে অবশ্যই আমরা ফিজিবল সিস্টেম তৈরি করতে পারবো বলে আমি আশা করি।’

বাংলাদেশে প্রতি কিলোওয়াট সৌর বিদ্যুৎ ক্রয়ে চুক্তি হচ্ছে ৯ থেকে ১০ সেন্টে। অপরদিকে ভারতে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের দাম অনুমোদন হয় ৩ সেন্টে আর পাকিস্তানে ৫ সেন্ট। জীবাশ্ম জ্বালানির দামে অস্থিতিশীলতা, ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ও জলবায়ুর ক্ষতির কারণে নবায়নযোগ্য শক্তিই ভবিষ্যৎ পৃথিবীকে পথ দেখাচ্ছে।