পাল্টে যাচ্ছে রাজশাহী মেডিকেলের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা সেবা
- আপডেট সময় : ১২:৫৫:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪
- / ৩৬৮ বার পড়া হয়েছে
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) পাল্টে যাচ্ছে জরুরি বিভাগের চিকিৎসা সেবা। বিশ্বব্যাংক ও এআইবির অর্থায়নে প্রায় চার কোটি টাকায় নির্মাণ হচ্ছে আধুনিক সেবা ব্যবস্থা ওসেক। অবকাঠামো উন্নয়ন শেষে চলতি বছরেই শুরু করা যাবে সেবা কার্যক্রম। এতে ভোগান্তি কমবে জরুরি চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের।
পাল্টে যাচ্ছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিত্র। বিশ্বব্যাংক ও এআইবির অর্থায়নে চার কোটি টাকায় নির্মাণ হচ্ছে আধুনিক সেবা ব্যবস্থা। অবকাঠামোগত উন্নয়ন শেষে চলতি বছরেই সেবা কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলীরা।
রাজশাহী মেডিকেলের জরুরি বিভাগে কেউ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। কেউ আবার এসেছেন জ্বরে কাতর হয়ে। ছোট-বড় নানা সমস্যায় এখানে হন্তদন্ত অবস্থা রোগী ও স্বজনদের।
অন্যদিকে, চিকিৎসকের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের পর হাসপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তিপ্রত্যাশী রোগী ও স্বজনদের দীর্ঘলাইন। এতে ওয়ার্ডে বাড়ছে রোগীর চাপ। ব্যহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা।
জরুরী বিভাগের একন সেবক বলেন, ‘এই যে সাধারণ ইঞ্জুরি নিয়ে আমাদের এখানে আসে, কিন্তু তাদের সার্ভিস দেয়ার ব্যবস্থা না থাকায় একটু মেজর ইঞ্জুরি হলে সেটা ওয়ার্ডে রেফার করে দিই।’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ঢেলে সাজানো হচ্ছে জরুরি বিভাগকে। তৈরি করা হচ্ছে আধুনিক ওয়ানস্টপ ইমারজেন্সি এন্ড ক্যজুয়ালটি (ওসেক) বিভাগ। যেখানে রোগী পৌঁছানো মাত্রই পাবেন বিভিন্ন টেস্ট, আইসিউ সুবিধাসহ নানা ধরনের সেবা।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কে বিশ্বাস বলেন, ‘এটা হবে ‘অ্যা হসপিটাল, ইথ ইন অ্যা হসপিটাল’ অর্থাৎ একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালের মধ্যে আর একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল। যে রোগীগুলো এখন এই মুহুর্তে ওয়ার্ডে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে তার বড় একটা অংশ ওসেক থেকে চিকিৎসা সেবা নিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারবে।’
প্রায় তিন কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ওসেক বিভাগে থাকবে ১৪ শয্যার ক্যজুয়ালটি বিভাগ। থাকছে নার্সেস কর্ণার, মিনি অপারেশন থিয়েটার, পঁচ শয্যার আইসিইউ, দু’টি জরুরি মেডিকেল অফিসার রুমসহ অন্যান্য কক্ষ। যেগুলোয় বিদ্যুৎ, অক্সিজেন, ইলেট্রিসিটিসহ সকল প্রস্তুতি প্রায় ৯০ ভাগ শেষের পথে। এ বছরেই ওসেকের সেবা কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব বলে মনে করছে গণপূর্ত বিভাগ।
রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২ এর নিবাহী প্রকৌশলী আবু হায়াত মুহাম্মদ শাকিউল আজম বলেন, ‘কোভিড-১৯ রেসপন্স প্রজেক্টের আন্ডারে আমরা এটা বাস্তবায়স করছি। এই প্রজেক্টের মেয়াদ এই অর্থসবছরের ডিসেম্বর নাগাদ শেষ হবে। আমরা আশা করছি তার আগেই আমরা এটা হ্যান্ডওভার দিতে পারবো।’
এই ইউনিটটি দ্রুত চালু করতে, দক্ষ লোকবল নিয়োগে চাহিদাপত্র দিয়েছে মন্ত্রণালয়ে। ওসেক চালুর খবর স্বস্তি দিয়েছে দূর-দুরান্ত থেকে আসা রোগীর স্বজনদের।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কে বিশ্বাস বলেন, ‘বিশেষজ্ঞ সকল চিকিৎসকের সমন্বয়ে একটি সুনির্দিষ্ট দল গঠন করা হবে। এখানে যেরোগীগুলো আসবে, ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার অর্থাৎ তারা আসা মাত্রই যেন এখানে সর্বোচ্চ সেবাটা পায় আমরা এটাই সুনিশ্চিত করবো।’
রোগীর সাথে আসা একজন বলেন, ‘তারা যে উদ্যোগটা নিয়েছে সেটা প্রশংসনীয়। এটার প্রয়োজন আছে। অনেক দেশেই এরকম সিস্টেম আছে। এই সিস্টেম চালু হলে অল্প সময়ের মধ্যে রোগীর চিকিৎসাটা নিশ্চিত করা যাবে।’
হাসপাতালটিতে প্রতিদিন চিকিৎসার জন্য ভর্তি থাকে তিন হাজারের বেশি রোগী। শুধু জরুরি বিভাগেই চিকিৎসা নিতে আসেন এক হাজার ২০০ এরও বেশি রোগী। ওসেক বিভাগ চালু হলে একদিকে জরুরি বিভাগে কমবে রোগীর চাপ, অন্যদিকে ব্যয় কমবে বলে মনে করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।