ঢাকা ০৬:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

লক্ষ্মীপুরে ফিলিং স্টেশনে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত ৩, আহত ২০

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১১:৪৩:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৩৬৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

লক্ষ্মীপুরে একটি বাসে গ্যাস নেওয়ার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই তিন জন নিহত হয়েছেন। এতে আরও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের কয়েকজনের হাত-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর গুরুতর আহত ১০ জনকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল থেকে তাৎক্ষণিক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতরা হলেন– মো. হৃদয় (১৯), মো. ইউসুফ (৩২) ও সুজন (২৫)।

রোববার (১৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের ইসলাম মার্কেট এলাকায় গ্রীন লিপ সিএনজি ফিলিং স্টেশনে মেঘনা ক্ল্যাসিক বাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনজন নিহত এবং আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। সোমবার (১৪ অক্টোবর) ওই ফিলিং স্টেশনের কর্মী মো. হুমায়ুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রঞ্জিত কুমার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পৌঁছে নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তিনজন ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। বাসের গ্যাস সিলিন্ডারটি পুরোনো ও নিম্নমানের ছিল। তাই গ্যাস নেওয়ার সময় সিলিন্ডারটিতে বিস্ফোরণ ঘটে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বাসে থাকা গ্যাস সিলিন্ডারের ত্রুটির কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছে। এছাড়া ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসে ফোন দিলেও তারা ঘটনার প্রায় একঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে যায়।

লক্ষ্মীপুরে ফিলিং স্টেশনে বিস্ফোরণের ঘটনার আগে সিলিন্ডারে গ্যাস রিফিলের সময়ই বাসটি কেঁপে ওঠে। রিফিল কর্মী (নজেল ম্যান) দ্রুত সিলিন্ডারের নজেল খুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে। তবে সিলিন্ডারটি পুরোনো ও নিম্নমানের হওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

নিহতরা হলেন- মো. হৃদয় (১৯), মো. ইউসুফ (৩২) ও সুজন (২৫)। হৃদয় লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৩নং ওয়ার্ডের রাজিবপুর গ্রামের সিরাজের ছেলে ও পেশায় মোটর মেকানিক। ইউসুফ পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের মধ্য বাঞ্চানগর গ্রামের সুজা মিয়ার ছেলে ও সুজন সদর উপজেলার চরমনসা গ্রামের বটু মিয়ার ছেলে। অধিকাংশ আহতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে কারো হাত এবং কারো পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

আহতরা হলেন– মো. রকি, মোহাম্মদ ফাহাদ হোসেন, সিরাজ মিয়া, মো. হৃদয়, মো. সুমন, শান্ত খান ও আবদুল মালেকসহ অন্তত ২০ জন। এর মধ্যে ১০ জনের অবস্থায় আশঙ্কাজনক। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

গ্রিন লাইফ ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার মো. আল-আমিন বলেন, নিহত তিন জনই সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক। আহতরাও অটোরিকশায় গ্যাস নেওয়ার জন্য পাম্পে অপেক্ষারত ছিলেন। আহতদের মধ্যে বাস চালক ও তার সহকারীও রয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ৩ জন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক জানান, বাসের গ্যাস সিলিন্ডারটি পুরাতন ও নিম্নমানের ছিল। রিফিলের সময়ই বাসটি কেঁপে ওঠে, তারপরই বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় ৩ জন ঘটনাস্থলে মারা গেছেন। কয়েকজন হাত পা হারিয়েছেন। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পেয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা ও লক্ষ্মীপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জয়নাল আবেদিন বলেন, তিন জন ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। তাদের আমরা চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ পাইনি। আহত আছেন অন্তত ২০ জন। এর মধ্যে ১০ জনেরই কারো হাত, কারো পা নেই। এ ছাড়া অন্যরা ‍বুকসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পেয়েছেন। আমরা অধিকাংশ রোগীকে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দিয়েছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

লক্ষ্মীপুরে ফিলিং স্টেশনে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত ৩, আহত ২০

আপডেট সময় : ১১:৪৩:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

লক্ষ্মীপুরে একটি বাসে গ্যাস নেওয়ার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই তিন জন নিহত হয়েছেন। এতে আরও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের কয়েকজনের হাত-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর গুরুতর আহত ১০ জনকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল থেকে তাৎক্ষণিক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতরা হলেন– মো. হৃদয় (১৯), মো. ইউসুফ (৩২) ও সুজন (২৫)।

রোববার (১৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের ইসলাম মার্কেট এলাকায় গ্রীন লিপ সিএনজি ফিলিং স্টেশনে মেঘনা ক্ল্যাসিক বাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনজন নিহত এবং আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। সোমবার (১৪ অক্টোবর) ওই ফিলিং স্টেশনের কর্মী মো. হুমায়ুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রঞ্জিত কুমার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পৌঁছে নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তিনজন ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। বাসের গ্যাস সিলিন্ডারটি পুরোনো ও নিম্নমানের ছিল। তাই গ্যাস নেওয়ার সময় সিলিন্ডারটিতে বিস্ফোরণ ঘটে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বাসে থাকা গ্যাস সিলিন্ডারের ত্রুটির কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছে। এছাড়া ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসে ফোন দিলেও তারা ঘটনার প্রায় একঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে যায়।

লক্ষ্মীপুরে ফিলিং স্টেশনে বিস্ফোরণের ঘটনার আগে সিলিন্ডারে গ্যাস রিফিলের সময়ই বাসটি কেঁপে ওঠে। রিফিল কর্মী (নজেল ম্যান) দ্রুত সিলিন্ডারের নজেল খুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে। তবে সিলিন্ডারটি পুরোনো ও নিম্নমানের হওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

নিহতরা হলেন- মো. হৃদয় (১৯), মো. ইউসুফ (৩২) ও সুজন (২৫)। হৃদয় লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৩নং ওয়ার্ডের রাজিবপুর গ্রামের সিরাজের ছেলে ও পেশায় মোটর মেকানিক। ইউসুফ পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের মধ্য বাঞ্চানগর গ্রামের সুজা মিয়ার ছেলে ও সুজন সদর উপজেলার চরমনসা গ্রামের বটু মিয়ার ছেলে। অধিকাংশ আহতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে কারো হাত এবং কারো পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

আহতরা হলেন– মো. রকি, মোহাম্মদ ফাহাদ হোসেন, সিরাজ মিয়া, মো. হৃদয়, মো. সুমন, শান্ত খান ও আবদুল মালেকসহ অন্তত ২০ জন। এর মধ্যে ১০ জনের অবস্থায় আশঙ্কাজনক। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

গ্রিন লাইফ ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার মো. আল-আমিন বলেন, নিহত তিন জনই সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক। আহতরাও অটোরিকশায় গ্যাস নেওয়ার জন্য পাম্পে অপেক্ষারত ছিলেন। আহতদের মধ্যে বাস চালক ও তার সহকারীও রয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ৩ জন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক জানান, বাসের গ্যাস সিলিন্ডারটি পুরাতন ও নিম্নমানের ছিল। রিফিলের সময়ই বাসটি কেঁপে ওঠে, তারপরই বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় ৩ জন ঘটনাস্থলে মারা গেছেন। কয়েকজন হাত পা হারিয়েছেন। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পেয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা ও লক্ষ্মীপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জয়নাল আবেদিন বলেন, তিন জন ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। তাদের আমরা চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ পাইনি। আহত আছেন অন্তত ২০ জন। এর মধ্যে ১০ জনেরই কারো হাত, কারো পা নেই। এ ছাড়া অন্যরা ‍বুকসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পেয়েছেন। আমরা অধিকাংশ রোগীকে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দিয়েছি।