ঢাকায় পা রেখেছেন নতুন কোচ ফিল সিমন্স
- আপডেট সময় : ১২:৩১:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪
- / ৩৬৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নতুন প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন সাবেক ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার ও সফল কোচ হিসেবে পরিচিত ফিল সিমন্স।
নতুন কোচ নিয়োগ দেওয়া প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা, আফগানিস্তান সিরিজ ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অন্তর্বর্তীকালীন হেড কোচ নিয়োগ দেওয়ার। নতুন অন্তর্বর্তীকালীন হেড কোচ হিসেবে ফিল সিমন্স চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত কাজ করবেন।’
খেলোয়াড়ি জীবনে সিমন্স ছিলেন ব্যাটিং অলরাউন্ডার। টুকটাক পেস বোলিং করতেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলেছেন ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত। নামের পাশে ২৬টি টেস্ট এবং ১৪৩ ওয়ানডে। টেস্টে তার আছে হাজারের ওপর রান, ওয়ানডেতে ৩৬৭৫। বল হাতে টেস্টে ৪টি এবং ওয়ানডেতে ৮৩ উইকেট শিকার করেছেন সিমন্স।
২০০২ সালে অবসরের পর কোচিংকে পেশা হিসেবে বেছে নেন সিমন্স। প্রথম কাজ জিম্বাবুয়ের হারারে-ভিত্তিক একটি একাডেমিতে। সেখান থেকেই পরিচয়ের সুবাদে ২০০৪ সালের মে মাসে জিম্বাবুয়ের হেড কোচ নির্বাচিত হন সিমন্স। ২০০৫ সালের আগস্ট মাসে সেই চাকরি হারান।
এরপর আয়ারল্যান্ডের হেড কোচ হিসেবে নিয়োগ পান সিমন্স। ওই চাকরির পরই কোচিং ক্যারিয়ার দাঁড়িয়ে যায় তার। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
২০০৭ সালের বিশ্বকাপের পর আয়ারল্যান্ডের হেড কোচ হন। সিমন্সের অধীনে আয়ারল্যান্ড বেশ কয়েকটি ট্রফি জিতেছে, আইসিসির প্রতিটি বড় ইভেন্টে কোয়ালিফাই করেছে।
২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। ২০১৫ বিশ্বকাপে তারা হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং জিম্বাবুয়েকে। বলতে গেলে সিমন্সের কোচিংয়েই জায়ান্ট কিলার উপাধি পায় আইরিশরা।
তাই এই কোচকে সহজে ছাড়তে চায়নি আয়ারল্যান্ড। ২২৪টি ম্যাচে তার কোচিংয়ে খেলেছে আইরিশরা, যা কিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোনো কোচের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় কোচিং করানোর রেকর্ড।
২০১৫ সালের মার্চে নিজের দেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে প্রস্তাব পান সিমন্স। হেড কোচের দায়িত্ব নিয়ে পরের বছরই (২০১৬) সালে ক্যারিবীয়দের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতান। অথচ তার দায়িত্ব নেওয়ার সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল রীতিমত ধুঁকছিল। সিমন্সই তাদের সেরা দশ র্যাংকিংয়ে ফিরিয়ে আনেন।
এরপর আফগানিস্তানের ব্যাটিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পান সিমন্স। সেখান থেকে ২০১৭ সালে দলটির হেড কোচও হয়ে যান। এরপর ২০১৯ সালের জুনে কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের কোচ হন সিমন্স।
সে বছরই অক্টোবর মাসে ফের তাকে হেড কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অস্ট্রেলিয়ায় ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর পদত্যাগ করেন সিমন্স। কিন্তু বোর্ডের অনুরোধে অস্ট্রেলিয়া সফরেও ক্যারিবীয়দের কোচিং করান তিনি।
২০২৩ সালে পাকিস্তান সুপার লিগের করাচি কিংসের হেড কোচ হিসেবে নিয়োগ পান সিমন্স। পরের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে পাপুয়া নিউগিনির স্পেশালিস্ট কোচ হিসেবে স্বল্পমেয়াদে কাজ করেন তিনি।
ফিল সিমন্সের আগমন বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। ক্রিকেট বোর্ড এবং ভক্তরা আশা করছেন, তার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাবে। সিমন্সের প্রথম চ্যালেঞ্জ হবে আসন্ন সিরিজের জন্য দলকে প্রস্তুত করা।
এদিকে, সিমন্সের কোচিংয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল আগামী মাসে একটি আন্তর্জাতিক সিরিজে অংশ নেবে। দলের খেলোয়াড়রা নতুন কোচের অধীনে কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছেন এবং ভক্তরা তার নেতৃত্বে দলের উন্নতি দেখতে অপেক্ষায় রয়েছেন।