ঢাকা ০৪:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নিজ দেশের জনগণের তোপের মুখে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:৪২:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৩৬৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ন্যাটোতে ইউক্রেনকে যুক্ত করাসহ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আরও জোরালো পদক্ষেপ নিলে চাপে পরে শান্তি আলোচনায় রাজি হবে রাশিয়া। পার্লামেন্টে এমনই এক বিজয় পরিকল্পনা তুলে ধরে ইউক্রেনীয়দেরই তোপের মুখে পরলেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেনীয়রা বলছেন, বিজয়ের জন্য শান্তি আলোচনা মানে রাশিয়াকে আরও শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ করে দেয়া। এই দিন দেখার জন্য স্বাধীনতাকামী তরুণরা প্রাণ বিলিয়ে দিচ্ছেন না বলেও দাবি তাদের।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ৯৬০দিন পেরিয়ে গেছে। তবুও লড়াই থামার কোনো লক্ষণ নেই। বরং আরও বেশি ঘোলাটে হচ্ছে পরিস্থিতি।

গেলো আগস্টে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ঢুকে হামলার শুরুতে সফলতা ধরা দিলেও বর্তমানে হিমশিম খাচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। রুশ বাহিনীর হামলা কৌশলের কাছে ধরাশায়ী হচ্ছে ইউক্রেনের যোদ্ধারা।

এ অবস্থায় ৫ নভেম্বর হতে যাওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগ মুহূর্তটা নিজেদের জন্য অনিশ্চিত সময় বলে উল্লেখ করলেন খোদ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বহুল প্রত্যাশিত ‘বিজয় পরিকল্পনা’ নিয়ে পার্লামেন্টে দেয়া বক্তব্যের সময় এমন মন্তব্য করে ইউক্রেনীয়দের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গিয়েও তুলে ধরেছেন বিজয় পরিকল্পনা।

পার্লামেন্টের ভাষণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নেয়া বিজয় পরিকল্পনায় পাঁচটি প্রধান পয়েন্ট তুলে ধরেন জেলেনস্কি। যা মিত্র দেশগুলোর সহায়তার উপর নির্ভরশীল। এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো নিঃশর্তভাবে কিয়েভকে ন্যাটোতে যোগ দেয়ার সুযোগ করে দেয়া। এছাড়া রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে দূরপাল্লার পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহারে বিধিনিষেধ তোলার আহ্বান জানিয়েছেন জেলেনস্কি। এমনকি ইউক্রেনজুড়ে অপারমাণবিক কৌশলগত প্রতিরোধ ব্যবস্থা স্থাপন করা। অংশীদারদের সঙ্গে যৌথভাবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ রক্ষা, ব্যবহার ও বিনিয়োগের মতো বিষয়ও এ পরিকল্পনায় যুক্ত করা হয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘আমাদের অংশীদারদের সাথে মিলে অবশ্যই বর্তমান পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে হবে, যাতে যুদ্ধ শেষ হয়। পুতিন যাই চাক না কেন, আমাদের সবাইকে অবশ্যই পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে হবে। রাশিয়া যাতে শান্তি চুক্তিতে বাধ্য হয়।’

এখন থেকেই যদি বিজয় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করা যায়, তবে আগামী বছরের মধ্যে যুদ্ধের অবসান ঘটানো সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। আর বিজয়ী হলে ইউক্রেনীয় সেনারা ন্যাটোর নিরাপত্তা বাড়াতে এবং ইউরোপে মার্কিন বাহিনীর বিকল্প হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে বলেও মনে করছেন তিনি। তবে জেলেনস্কির এই বিজয় পরিকল্পনায় ভরসা রাখতে পারছেন না ইউক্রেনীয়রাই। চাপে ফেলে রাশিয়াকে শান্তি আলোচনায় রাজি করানোর কথা বলে উল্টো জনগণের তোপের মুখে পড়েছেন জেলেনস্কি।

স্থানীয় একজন বলেন, ‘যে করেই হোক, শান্তি আলোচনার ঘোষণা দেয়া মানেই রাশিয়াকে আরও শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ করে দেয়া। আর এটির জন্য আমাদের স্বাধীনতাকামী তরুণরা প্রাণ দিচ্ছে না।’

ইউক্রেনের একজন বলেন, ‘প্রতিটি যুদ্ধ শান্তি আলোচনার মাধ্যমে শেষ হয়। তবে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা করতে হলে আমাদের আন্তর্জাতিক সমর্থনেরও প্রয়োজন আছে।’

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত কিয়েভকে অন্তত ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের সহায়তা দিয়েছে ওয়াশিংটন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন দিয়েছে সাড়ে ১২ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি।

নিউজটি শেয়ার করুন

নিজ দেশের জনগণের তোপের মুখে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি

আপডেট সময় : ০৩:৪২:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

ন্যাটোতে ইউক্রেনকে যুক্ত করাসহ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আরও জোরালো পদক্ষেপ নিলে চাপে পরে শান্তি আলোচনায় রাজি হবে রাশিয়া। পার্লামেন্টে এমনই এক বিজয় পরিকল্পনা তুলে ধরে ইউক্রেনীয়দেরই তোপের মুখে পরলেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেনীয়রা বলছেন, বিজয়ের জন্য শান্তি আলোচনা মানে রাশিয়াকে আরও শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ করে দেয়া। এই দিন দেখার জন্য স্বাধীনতাকামী তরুণরা প্রাণ বিলিয়ে দিচ্ছেন না বলেও দাবি তাদের।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ৯৬০দিন পেরিয়ে গেছে। তবুও লড়াই থামার কোনো লক্ষণ নেই। বরং আরও বেশি ঘোলাটে হচ্ছে পরিস্থিতি।

গেলো আগস্টে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ঢুকে হামলার শুরুতে সফলতা ধরা দিলেও বর্তমানে হিমশিম খাচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। রুশ বাহিনীর হামলা কৌশলের কাছে ধরাশায়ী হচ্ছে ইউক্রেনের যোদ্ধারা।

এ অবস্থায় ৫ নভেম্বর হতে যাওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগ মুহূর্তটা নিজেদের জন্য অনিশ্চিত সময় বলে উল্লেখ করলেন খোদ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বহুল প্রত্যাশিত ‘বিজয় পরিকল্পনা’ নিয়ে পার্লামেন্টে দেয়া বক্তব্যের সময় এমন মন্তব্য করে ইউক্রেনীয়দের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গিয়েও তুলে ধরেছেন বিজয় পরিকল্পনা।

পার্লামেন্টের ভাষণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নেয়া বিজয় পরিকল্পনায় পাঁচটি প্রধান পয়েন্ট তুলে ধরেন জেলেনস্কি। যা মিত্র দেশগুলোর সহায়তার উপর নির্ভরশীল। এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো নিঃশর্তভাবে কিয়েভকে ন্যাটোতে যোগ দেয়ার সুযোগ করে দেয়া। এছাড়া রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে দূরপাল্লার পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহারে বিধিনিষেধ তোলার আহ্বান জানিয়েছেন জেলেনস্কি। এমনকি ইউক্রেনজুড়ে অপারমাণবিক কৌশলগত প্রতিরোধ ব্যবস্থা স্থাপন করা। অংশীদারদের সঙ্গে যৌথভাবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ রক্ষা, ব্যবহার ও বিনিয়োগের মতো বিষয়ও এ পরিকল্পনায় যুক্ত করা হয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘আমাদের অংশীদারদের সাথে মিলে অবশ্যই বর্তমান পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে হবে, যাতে যুদ্ধ শেষ হয়। পুতিন যাই চাক না কেন, আমাদের সবাইকে অবশ্যই পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে হবে। রাশিয়া যাতে শান্তি চুক্তিতে বাধ্য হয়।’

এখন থেকেই যদি বিজয় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করা যায়, তবে আগামী বছরের মধ্যে যুদ্ধের অবসান ঘটানো সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। আর বিজয়ী হলে ইউক্রেনীয় সেনারা ন্যাটোর নিরাপত্তা বাড়াতে এবং ইউরোপে মার্কিন বাহিনীর বিকল্প হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে বলেও মনে করছেন তিনি। তবে জেলেনস্কির এই বিজয় পরিকল্পনায় ভরসা রাখতে পারছেন না ইউক্রেনীয়রাই। চাপে ফেলে রাশিয়াকে শান্তি আলোচনায় রাজি করানোর কথা বলে উল্টো জনগণের তোপের মুখে পড়েছেন জেলেনস্কি।

স্থানীয় একজন বলেন, ‘যে করেই হোক, শান্তি আলোচনার ঘোষণা দেয়া মানেই রাশিয়াকে আরও শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ করে দেয়া। আর এটির জন্য আমাদের স্বাধীনতাকামী তরুণরা প্রাণ দিচ্ছে না।’

ইউক্রেনের একজন বলেন, ‘প্রতিটি যুদ্ধ শান্তি আলোচনার মাধ্যমে শেষ হয়। তবে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা করতে হলে আমাদের আন্তর্জাতিক সমর্থনেরও প্রয়োজন আছে।’

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত কিয়েভকে অন্তত ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের সহায়তা দিয়েছে ওয়াশিংটন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন দিয়েছে সাড়ে ১২ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি।