ঢাকা ০৫:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১২:৫৬:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৩৬৬ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক কৃষিমন্ত্রী, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মতিয়া চৌধুরীর প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ই অক্টোবর) সকাল ১০.৪৫ মিনিটে রাজধানীর মগবাজারের ইস্পাহানি কলোনিতে অবস্থিত মরহুমার বাসভবনে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম নামাজে জানাযা।

অগ্নিকন্যা হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিলো ৮২ বছর।

ছয়বার সংসদ সদস্য হয়েছেন মতিয়া চৌধুরী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদে তিনি ছিলেন সংসদ উপনেতা। আজ বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে দ্বিতীয় নামাজে জানাযার পর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়া চৌধুরী।

মতিয়া চৌধুরী বেশ কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

মতিয়া চৌধুরী পিরোজপুরে ১৯৪২ সালের ৩০ জুন জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মা নুরজাহান বেগম গৃহিণী। তার স্বামী খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমান।

মতিয়া চৌধুরীর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় বামপন্থী রাজনীতি দিয়ে। ইডেন কলেজের ছাত্রী থাকাকালে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে জড়িত হন। ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলনেসম্মুখসারির সংগঠক ছিলেন তিনি।

‘৬০ এর দশকে পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনেমতিয়া চৌধুরী সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। সেই আমলে চারবার কারাবরণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর ১৯৬৩ সালে তিনি রোকেয়া হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরের বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ সালে ছাত্র ইউনিয়ন মতাদর্শিক কারণে বিভক্ত হলে মতিয়া চৌধুরী একাংশের সভাপতি নির্বাচিত হন।

জ্বালাময়ী বক্তৃতার কারণে অগ্নিকন্যা হিসাবে ছাত্র-জনতার কাছে পরিচিতি পেয়েছিলেন মতিয়া চৌধুরী। ১৯৬৭ সালে তিনি যোগ দেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আইয়ুব খানের পতন হলে কারামুক্ত হয়ে রাজনীতিতে আবার সক্রিয় হন। মতিয়া চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনী গঠনে তিনি ভূমিকা রাখেন।

পরবর্তীতে মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৯৬, ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ শাসনামলে কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন মতিয়া চৌধুরী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি শেরপুর-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ঐ সংসদে সংসদ উপনেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত

আপডেট সময় : ১২:৫৬:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক কৃষিমন্ত্রী, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মতিয়া চৌধুরীর প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ই অক্টোবর) সকাল ১০.৪৫ মিনিটে রাজধানীর মগবাজারের ইস্পাহানি কলোনিতে অবস্থিত মরহুমার বাসভবনে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম নামাজে জানাযা।

অগ্নিকন্যা হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিলো ৮২ বছর।

ছয়বার সংসদ সদস্য হয়েছেন মতিয়া চৌধুরী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদে তিনি ছিলেন সংসদ উপনেতা। আজ বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে দ্বিতীয় নামাজে জানাযার পর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়া চৌধুরী।

মতিয়া চৌধুরী বেশ কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

মতিয়া চৌধুরী পিরোজপুরে ১৯৪২ সালের ৩০ জুন জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মা নুরজাহান বেগম গৃহিণী। তার স্বামী খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমান।

মতিয়া চৌধুরীর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় বামপন্থী রাজনীতি দিয়ে। ইডেন কলেজের ছাত্রী থাকাকালে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে জড়িত হন। ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলনেসম্মুখসারির সংগঠক ছিলেন তিনি।

‘৬০ এর দশকে পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনেমতিয়া চৌধুরী সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। সেই আমলে চারবার কারাবরণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর ১৯৬৩ সালে তিনি রোকেয়া হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরের বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ সালে ছাত্র ইউনিয়ন মতাদর্শিক কারণে বিভক্ত হলে মতিয়া চৌধুরী একাংশের সভাপতি নির্বাচিত হন।

জ্বালাময়ী বক্তৃতার কারণে অগ্নিকন্যা হিসাবে ছাত্র-জনতার কাছে পরিচিতি পেয়েছিলেন মতিয়া চৌধুরী। ১৯৬৭ সালে তিনি যোগ দেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আইয়ুব খানের পতন হলে কারামুক্ত হয়ে রাজনীতিতে আবার সক্রিয় হন। মতিয়া চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনী গঠনে তিনি ভূমিকা রাখেন।

পরবর্তীতে মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৯৬, ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ শাসনামলে কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন মতিয়া চৌধুরী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি শেরপুর-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ঐ সংসদে সংসদ উপনেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন।