ঢাকা ১২:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

কূটনৈতিক যুদ্ধে ভারত-কানাডার সম্পর্ক চরমে

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:৪৫:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৩৬৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কূটনৈতিক যুদ্ধে ভারত ও কানাডার সম্পর্ক চরমে পৌঁছেছে। কানাডায় সহিংসতা ও অপরাধমূলক কাজ ছড়িয়ে পড়ার পেছনে ভারতকে দায়ী করে মন্তব্য করলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। পাল্টা আক্রমণে ভারত বলছে, দুই দেশের সম্পর্ক নষ্টের মূলে দায়ী ট্রুডো। এমন পরিস্থিতির মধ্যে শঙ্কায় আছেন কানাডায় বসবাসরত ভারতীয় শিক্ষার্থীদের পরিবার। এদিকে ভারতের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ আলোচনা নিয়ে আসলো যুক্তরাষ্ট্র।

যত সময় যাচ্ছে ততই অবনতির দিকে যাচ্ছে ভারত ও কানাডার কূটনৈতিক সম্পর্ক। খালিস্তানপন্থী নেতা হারদিপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ড নিয়ে পরস্পরকে দোষারোপ করেছে দুই দেশ। শুধু তাই নয়, কানাডায় সহিংসতা ও অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতকে দায়ী করছে ট্রুডো সরকার। এদিকে দিল্লির অভিযোগ, ট্রুডো নিজের গদি বাঁচাতে ভারতকে কলঙ্কিত করছে। কারণ কানাডায় বসবাসরত শিখদের সমর্থন ছাড়া তার সরকার টিকবে না।

এমন প্রেক্ষাপটে ভারতের বিরুদ্ধে কানাডার সার্বভৌমত্বের ওপর আগ্রাসী হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছেন জাস্টিন ট্রুডো। তার দাবি, ভারতের এজেন্টরা অপরাধী চক্রকে ব্যবহার করে কানাডায় বিভিন্ন সহিংসতা ও অপরাধমূলক কাজ করছে। যা ভারত সরকারের ভুল পদক্ষেপ।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি। ভারতের সঙ্গে উস্কানিমূলক সম্পর্ক বা সংঘাতে জড়াতে চায় না কানাডা। তবে কানাডায় বসবাসরত নাগরিকদের নিরাপত্তা ও দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপ করে ভারত সরকার ভয়ংকর ভুল করেছে।’

এমন মন্তব্যের জেরে ট্রুডোকে রীতিমতো তুলোধুনো করেছে নয়াদিল্লি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ভারত ও ভারতীয় কূটনীতিবিদদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুললেও বিশ্বাসযোগ্য কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি কানাডা। দুই দেশের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পেছনে ট্রুডোর দাম্ভিক আচরণকে দায়ী করেছে ভারত।

দিল্লির অভিযোগ, ২০২৫ সালে কানাডার আসন্ন নির্বাচনে ভোট কাড়তে ভারতকে ব্যবহার করে ফায়দা লুটার চেষ্টায় আছেন ট্রুডো। তিনি তথ্য প্রমাণ ছাড়াই শুধু গোয়েন্দা সূত্রের ওপর নির্ভর করে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। এসবই তার রাজনৈতিক চাল।

চলমান উত্তেজনার জেরে পাল্টাপাল্টি কূটনীতিকদের বহিষ্কারের ঘটনায় দুই দেশের সম্পর্ক এখন তলানিতে। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে আছেন কানাডায় বসবাসরত ভারতীয় শিক্ষার্থীরা। তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন অভিভাবকরা।

একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, ‘দুই দেশের কূটনৈতিক ঝামেলায় শঙ্কায় পড়েছে কানাডায় পড়াশোনা করা আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ। সেখানে চাকরি ও সুযোগ পেতেও তাদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে। কানাডায় থাকা আমাদের সন্তানদের সমস্যা নিয়ে আমরা সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় থাকি। তাদের নিয়ে আমাদের মধ্যে ভয় ঢুকেছে।’

ভারত-কানাডার উত্তেজনার মধ্যে এবার একই ধরনের অভিযোগ আলোচনায় নিয়ে এসেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী খালিস্তানপন্থী নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যার চেষ্টা করে ভারত। এ নিয়ে বুধবার (১৭ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট দেশের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছে। সম্প্রতি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে তলব করে মার্কিন একটি আদালত।

নিউজটি শেয়ার করুন

কূটনৈতিক যুদ্ধে ভারত-কানাডার সম্পর্ক চরমে

আপডেট সময় : ০৩:৪৫:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

কূটনৈতিক যুদ্ধে ভারত ও কানাডার সম্পর্ক চরমে পৌঁছেছে। কানাডায় সহিংসতা ও অপরাধমূলক কাজ ছড়িয়ে পড়ার পেছনে ভারতকে দায়ী করে মন্তব্য করলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। পাল্টা আক্রমণে ভারত বলছে, দুই দেশের সম্পর্ক নষ্টের মূলে দায়ী ট্রুডো। এমন পরিস্থিতির মধ্যে শঙ্কায় আছেন কানাডায় বসবাসরত ভারতীয় শিক্ষার্থীদের পরিবার। এদিকে ভারতের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ আলোচনা নিয়ে আসলো যুক্তরাষ্ট্র।

যত সময় যাচ্ছে ততই অবনতির দিকে যাচ্ছে ভারত ও কানাডার কূটনৈতিক সম্পর্ক। খালিস্তানপন্থী নেতা হারদিপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ড নিয়ে পরস্পরকে দোষারোপ করেছে দুই দেশ। শুধু তাই নয়, কানাডায় সহিংসতা ও অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতকে দায়ী করছে ট্রুডো সরকার। এদিকে দিল্লির অভিযোগ, ট্রুডো নিজের গদি বাঁচাতে ভারতকে কলঙ্কিত করছে। কারণ কানাডায় বসবাসরত শিখদের সমর্থন ছাড়া তার সরকার টিকবে না।

এমন প্রেক্ষাপটে ভারতের বিরুদ্ধে কানাডার সার্বভৌমত্বের ওপর আগ্রাসী হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছেন জাস্টিন ট্রুডো। তার দাবি, ভারতের এজেন্টরা অপরাধী চক্রকে ব্যবহার করে কানাডায় বিভিন্ন সহিংসতা ও অপরাধমূলক কাজ করছে। যা ভারত সরকারের ভুল পদক্ষেপ।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি। ভারতের সঙ্গে উস্কানিমূলক সম্পর্ক বা সংঘাতে জড়াতে চায় না কানাডা। তবে কানাডায় বসবাসরত নাগরিকদের নিরাপত্তা ও দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপ করে ভারত সরকার ভয়ংকর ভুল করেছে।’

এমন মন্তব্যের জেরে ট্রুডোকে রীতিমতো তুলোধুনো করেছে নয়াদিল্লি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ভারত ও ভারতীয় কূটনীতিবিদদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুললেও বিশ্বাসযোগ্য কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি কানাডা। দুই দেশের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পেছনে ট্রুডোর দাম্ভিক আচরণকে দায়ী করেছে ভারত।

দিল্লির অভিযোগ, ২০২৫ সালে কানাডার আসন্ন নির্বাচনে ভোট কাড়তে ভারতকে ব্যবহার করে ফায়দা লুটার চেষ্টায় আছেন ট্রুডো। তিনি তথ্য প্রমাণ ছাড়াই শুধু গোয়েন্দা সূত্রের ওপর নির্ভর করে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। এসবই তার রাজনৈতিক চাল।

চলমান উত্তেজনার জেরে পাল্টাপাল্টি কূটনীতিকদের বহিষ্কারের ঘটনায় দুই দেশের সম্পর্ক এখন তলানিতে। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে আছেন কানাডায় বসবাসরত ভারতীয় শিক্ষার্থীরা। তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন অভিভাবকরা।

একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, ‘দুই দেশের কূটনৈতিক ঝামেলায় শঙ্কায় পড়েছে কানাডায় পড়াশোনা করা আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ। সেখানে চাকরি ও সুযোগ পেতেও তাদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে। কানাডায় থাকা আমাদের সন্তানদের সমস্যা নিয়ে আমরা সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় থাকি। তাদের নিয়ে আমাদের মধ্যে ভয় ঢুকেছে।’

ভারত-কানাডার উত্তেজনার মধ্যে এবার একই ধরনের অভিযোগ আলোচনায় নিয়ে এসেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী খালিস্তানপন্থী নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যার চেষ্টা করে ভারত। এ নিয়ে বুধবার (১৭ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট দেশের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছে। সম্প্রতি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে তলব করে মার্কিন একটি আদালত।