প্রত্যাশা এখনো পূরণ করতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার: জামায়াতের আমির
- আপডেট সময় : ০১:৪৬:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪
- / ৩৬৪ বার পড়া হয়েছে
গত ৫ আগস্টের পর জাতি যে প্রত্যাশা করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার এখনো তা পূরণ করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন জামাতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সকালে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের রুকন সম্মেলন এ মন্তব্য করেন তিনি।
শফিকুর রহমান জানান, আওয়ামী লীগের আমলে গঠিত সিন্ডিকেটকারীরা এখনো বাজারে সক্রিয়। যারা সিন্ডিকেট করছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জামায়াত একটি বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেখানে সবার সমান অধিকার থাকবে।
জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা বলেন, যে চেতনার ভিত্তিতে এই বিপ্লব এসেছে তার বেশিরভাগ অপূরণ রয়ে গেছে। যারা দেশের দায়িত্বে আছেন তাদের দেশের জনগণ ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে এই দায়িত্ব দিয়েছে। আমরা তাদেরকে বলব ১৮ কোটি মানুষকে আপনাদের সম্মান করতে হবে। এই বিপ্লবের চেতনাকে ধারণ করে সমস্ত জঞ্জালকে পরিষ্কার করার জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে আপনাদের এগিয়ে যেতে হবে। এর কোনো বেশকম জনগণ দেখতে চায় না।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশবাসীর কাছে আমরা আহ্বান জানাতে চাই – আমরা এমন একটি দেশ চাই যেই দেশের টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, জাফলং থেকে সুন্দরবন আমার দেশের একজন মা, একজন বোন, একজন ঔরসজাত মেয়ে একাকী রাস্তা অতিক্রম করবে কিন্তু কোনো জালিমের চক্ষু তার দিকে তাকানোর সাহস পাবে না। আজকে সে দেশটি আমাদের নেই। ওই জায়গা তৈরি করতে চাই। আমরা মায়ের জাতিকে ওই জায়গায় নিতে চাই যেখানে একজন মা একজন বোন, একজন মেয়ে বলবে আমি এই দেশের গর্বিত নাগরিক। আমি ইজ্জত নিয়ে এ দেশে আছি। আমি আমার ইজ্জত ও অধিকার ফিরে পেয়েছি। আমরা একটি বৈষম্যহীন সমাজ চাই। সমাজের কোনো স্তরে আমরা বৈষম্য মানব না। তারপরেও কিছু বৈষম্য থেকে যায়। যার যেটুকু মর্যাদা দিয়ে আল্লাহ তৈরি করেছেন তার সেটুকু মর্যাদা রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে। মানুষের মধ্যে দল ও ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য চাই না। রাষ্ট্র সবার। এজন্য রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা, শান্তি, নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বও সবার। আমরা এ দেশে কোনো মেজরিটি, মাইনোরিটি মানি না। আল্লাহ আমাদের এই অধিকার দেননি। দ্বীন নিয়ে বাড়াবাড়ি চলবে না।
তিনি বলেন, তারা (আওয়ামী সরকার) মানুষকে উপহাস করে আনন্দ পেত। আল্লাহ তায়ালা তাদের পাওনা কিছুটা পাইয়ে দিয়েছেন। বাকি আরও কিছু পাওনা এ দেশের মানুষ দেখতে চায়। আর মূল পাওনা হবে কেয়ামতের ময়দানে। আমরাও যদি কোনো অন্যায় অপকর্ম করি তাহলে আমাদেরও কৃতকর্মের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
জামায়াত আমির বলেন, একটি শিশু জন্মের সঙ্গে সঙ্গে যেন পর্যাপ্ত খাবার পায়, চিকিৎসা পায়, বড় হলে যেন শিক্ষা পায়। শিক্ষা লাভ করার পরে সে যেন হাতের মধ্যে কাজ পায়। আমরা আর শিক্ষিত বেকার শুনতে চাই না। শিক্ষিত হলে বেকার হবে কেনো? আমরা যুবকদের হাতকে কর্মীর হাতে রূপান্তর করতে চাই। আমরা চাঁদাবাজ আর লুটেরার হাতে পরিণত করতে চাই না। খুনির হাতে পরিণত করতে চাই না। তাদের হাতের অবৈধ অস্ত্র তুলে দিতে চাই না। তারা এই জাতিকে তাদের স্বপ্নের মতো গড়ে তুলবে। আমরা এই যুবকদের স্যালুট জানাই। তোমাদের কাজ এখনো শেষ হয়নি। আমরাও বলতে চাই আবু সাইদ-মুগ্ধ- শেষ হয়নি যুদ্ধ। পূর্ণ মুক্তি যতদিন পর্যন্ত যতদিন না আসবে ততদিন এ যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। এ যুদ্ধে আমরাই জিতবো। এ যুদ্ধে বিপ্লবীরাই জিতবে ইনশাআল্লাহ।