নাটক-সিনেমার প্রচারণার জন্য নানা অভিনব কৌশল অবলম্বন করেন তারকারা। কখনও কখনও কিছু কৌশলে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। যেমন, জরায়ু ক্যানসারের সচেতনতা তৈরি করতে মৃত্যুর গুজব পর্যন্ত ছড়িয়ে দিয়েছিলেন বলিউড অভিনেত্রী পুনম পাণ্ডে! এসব প্রচারণা অনেক সময় দর্শকদের জন্য বিভ্রান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সোমবার (২১ অক্টোবর) মধ্যরাতে জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান ফেসবুক লাইভে এসে এমনই একটি নাটকীয় কাণ্ড ঘটালেন; যা একদিকে দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে, আবার এ নিয়ে রয়েছে সমালোচনাও।
অভিনেত্রী লাইভে এসে এক ভৌতিক ঘটনার বর্ণনা দেন। তাঁর কথা শুনে ভক্তরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। কিন্তু পরে জানা যায়, পুরো ঘটনাটি ছিল সাজানো নাটক। এর আগে গায়ক তাহসান ও অভিনেত্রী ফারিণও একই ধরনের নাটকীয় প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন, যেখানে তারা একটি শপে আটকে পড়ার গল্প বলে দর্শকদের বোকা বানান।
ফেসবুক লাইভে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি বেশ কিছুদিন ধরে একটা বাজে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমি জানি না, এটা কেন হচ্ছে! তবে বিষয়টা কয়েকবার ঘটেছে দেখেই আজকে লাইভে এসেছি।’
এরপর ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে সাদিয়া বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগে আমি একটা শুট শেষ করে বাসায় ফিরছিলাম, তখন রাস্তায় যাওয়ার পথে দেখি পা থেকে মাথা পর্যন্ত একজন কালো কেউ আমার গাড়ির সামনে চলে আসে। এরপর গাড়ি থামিয়ে নেমে দেখি সেখানে কেউ নেই।’
অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘এরপরে আমরা নিরাপদে সেখান থেকে বাসায় চলে আসি। তবে চলে আসার পরেও বাসার বিপরীত দিকে আবারও সেই ব্যক্তিকে দেখতে পাই।’
এ সময় একটু থেমে সাদিয়া বলেন, ‘আমি কথা বলতে কাঁপছি। কিছুক্ষণ আগেও বারান্দা থেকে দেখেছি সেই ব্যক্তি আমার বাড়ির নিচে দাঁড়িয়ে আছে।’
এরপর মোবাইলটা হাতে নিয়ে বারান্দায় চলে যান এই অভিনেত্রী। সেখানে গিয়ে লাইভে কালো পোশাকে দাঁড়িয়ে থাকা সেই ব্যক্তিকে দেখান সাদিয়া। এ সময় পুরো চেহারায় আতঙ্কের ছাপ ছিল অভিনেত্রীর। রীতিমতো কান্না করতে শুরু করেন। বাড়িতে তিনি বাদে আর কেউ নেই উল্লেখ করে সাদিয়া বলেন, ‘দেখুন আপনারা, ওই ব্যক্তি নিচে দাঁড়িয়ে আছে। বাড়িতে আমি বাদে এখন কেউ নেই...’ বলেই কাঁদতে থাকেন তিনি।
একপর্যায়ে বারান্দার দরজা লাগিয়ে রুমে চলে আসেন সাদিয়া আয়মান। এ সময়ও তাঁর ফেসবুক লাইভটি চলছিল। লাইভ চলাকালীন অবস্থায় হঠাৎই আঁতকে ওঠেন অভিনেত্রী। একপর্যায়ে ‘ও মাই গড’, ‘ও মাই গড’ বলতে বলতে লাইভটি কেটে দেন তিনি।
এরপরই সাদিয়া আয়মানের কী হয়েছে? তিনি কি কোনো বিপদে পড়লেন? এমন নানা উদ্বেগে ফেসবুকজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভক্তরা অভিনেত্রীকে নিয়ে চিন্তিত হয়ে একের পর এক পোস্ট দিতে শুরু করেন। সকলেই ধারণা করে নেন, সাদিয়ার সঙ্গে খারাপ কিছু ঘটেছে।
তবে এর কিছুক্ষণ পরই ফেসবুক থেকে লাইভটি সরিয়ে নেন সাদিয়া আয়মান। ঘণ্টাখানেক বাদে একটি ওয়েব ফিল্মের পোস্টার শেয়ার করেন তিনি। ভক্তরাও বুঝে নেন, পুরো ঘটনাই ছিল সেই ওয়েব ফিল্মের প্রচারণার অংশ মাত্র। এরপরই শুরু হয় সমালোচনা।
অভিনেত্রীর এক ভক্ত লেখেন, ‘মায়াবী চেহারার মানুষটা মাঝরাতে এই নাটকটা কীভাবে করতে পারল! হতাশ হলাম এ রকম সস্তা প্রচারণায়। যেদিন সত্যি কালো মানুষটা আসবে সেদিন কি এমন লাইভ করতে পারবেন?’
মূলত ওটিটি প্ল্যাটফর্ম দীপ্ত প্লে’র একটি ওয়েব ফিল্মে কাজ করেছেন সাদিয়া। ‘বিভাবরী’ শিরোনামের সেই ফিল্মটি শিগগিরই আসছে প্রচারে। যেটি মূলত ঢাকার রহস্যজনক কিছু ঘটনাকে কেন্দ্র করে। সেই ওয়েব ফিল্মের প্রচারণার কৌশল হিসেবেই সাদিয়ার এই ‘ফেসবুক লাইভ’ নাটক।
বিভাবরীর পোস্টার শেয়ার করে দীপ্ত প্লে লিখেছে, ‘ঢাকার আনাচে-কানাচে যাদের দেখা যাচ্ছে, যাদের ভয়ে আমি আপনি অনেকেই ভীত, তাদের দেখা যাবে খুব দ্রুত... দীপ্ত প্লে অরিজিনাল ফিল্ম বিভাবরীতে। আসছে বিভাবরী অনেক ভয় আর অন্যরকম গল্প নিয়ে।’