ঢাকা ০৬:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ফের অস্থির পেঁয়াজের বাজার, বাড়ল ২৫-৩০ টাকা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:৩৯:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৩৬৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানিতে ন্যূনতম বিক্রয়মূল্য প্রত্যাহার ও শুল্ক কমানো এবং বাংলাদেশে আমদানি শুল্ক হ্রাসের সিদ্ধান্তে গত মাসে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কম ছিল। কিন্তু এখন আবার বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ সংকটের অজুহাতে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।

বরিশাল
পাঁচ দিনের ব্যবধানে বরিশালের বাজারে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। বিক্রেতারা জানান, দেশি পেঁয়াজ খুচরা বাজারে কেজিতে ২৫ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। এই পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৯৯ থেকে ১০০ টাকায়। গত সপ্তাহের চেয়ে পাইকারিতে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫ টাকা পর্যন্ত।

তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে দেশি পেঁয়াজের সংকট থাকায় বরিশালের পেঁয়াজপট্টিতে দেশি পেঁয়াজের সংকট রয়েছে। বাড়তি দামের কারণে অনেকেই আড়তে পেঁয়াজ তুলছেন না।

এদিকে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় হতাশ খুচরা বিক্রেতা ও সাধারণ ক্রেতারা। তাঁরা বলছেন, এভাবে দাম বাড়তে থাকলে তাঁদের ভোগান্তি আরও বাড়বে। যেখান থেকে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হচ্ছে সেসব জায়গায় অভিযান চালিয়ে দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।

যশোর
যশোরের শার্শা ও বেনাপোলে গত তিন দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে বেড়ে গেছে ৫ থেকে ১০ টাকা। সরবরাহ কমসহ আমদানি স্বল্পতার কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে বলে জানান ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বেনাপোল দিয়ে চলতি মাসে আসেনি পেঁয়াজের চালান। আমদানি বাড়লে দাম কমে আসবে।

দিনাজপুর
দিনাজপুরে সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা। দিনাজপুর বাহাদুর বাজারে পাইকারি দরে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি প্রকারভেদে ১০০ টাকা থেকে ১০৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ ১৩২ টাকা থেকে ১৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজের যথেষ্ট আমদানি হচ্ছে। তবে অতি মুনাফার জন্য আমদানিকারক এবং পাইকারি বিক্রেতাদের অসাধু সিন্ডিকেট পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়েছে। এক সপ্তাহ আগে পাইকারি বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০ থেকে ৯৫ টাকা দরে এবং দেশি পেঁয়াজ ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হতো।

ক্রেতারা বলছেন, পূজার সময় আমদানি বন্ধ থাকায় ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি কমে যাওয়ার অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু তাদের এই অভিযোগ সঠিক নয়। তারা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে অতি মুনাফা করছে। বাজারে কোনো মনিটরিং নেই। সরকার আমদানিকারক এবং পাইকারি ব্যবসায়ীদের গোডাউনে অভিযান চালালেই পেঁয়াজের দাম কমে যাবে।

হিলি স্থল বন্দরে আমদানি করা পেঁয়াজ প্রকারভেদে ৮৫ টাকা থেকে ১০৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

জেলার খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পূজার সময় আমদানি বন্ধ থাকায় ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি কমে যাওয়ার অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু তাদের এই অভিযোগ সঠিক নয়। আমদানিকারকেরা প্রচুর পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করে তা মজুত করেছে। তারা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে অতি মুনাফা করছে। বাজারে কোনো মনিটরিং নেই। সরকার আমদানিকারক এবং পাইকারি ব্যবসায়ীদের গুদামে অভিযান চালালেই পেঁয়াজের দাম কমে যাবে।

চট্টগ্রাম
এক সপ্তাহের ব্যবধানে চট্টগ্রামে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। ভারতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়া এবং বেনাপোল সীমান্তে অমি শাহের আগমনকে কেন্দ্র করে বন্দর বন্ধ থাকায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে, বলছেন বিক্রেতারা।

সোমবার নগরীর নানা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গেল বুধবার ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। যা খুচরা পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে ১১০ টাকায়।

পেঁয়াজ বিক্রেতা বিজয় চ্যাটার্জি বলেন, অমিত শাহের বেনাপোল সীমান্তে আসাকে আসাকে কেন্দ্র করে দেশে ঢুকছে না পেঁয়াজ। তা ছাড়া ভারতের নাসিক এলাকায় পেঁয়াজের দাম বাড়তি। তাই দেশে বেড়েছে দাম।

ফরিদপুর
ফরিদপুরে তিন দিনের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। আজ সোমবার সকালে শহরের হাজী শরিয়াতুল্লাহ বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১৪০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সিকদার এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. শাহজাহান সিকদার জানান, কৃষক পর্যায়ে দেশি পেঁয়াজের মজুত শেষের দিকে, যে কারণে বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। তাই গত তিন দিনে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। আর এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজ ২০ টাকা বেড়ে বর্তমানে ১৪০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।

জেলার পেঁয়াজ বাজার ও আড়ৎগুলোতে প্রশাসনের বিশেষ টাস্কফোর্স ও ভোক্তা অধিকার যৌথ অভিযান পরিচালনা করলেও তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ফের অস্থির পেঁয়াজের বাজার, বাড়ল ২৫-৩০ টাকা

আপডেট সময় : ০৩:৩৯:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪

ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানিতে ন্যূনতম বিক্রয়মূল্য প্রত্যাহার ও শুল্ক কমানো এবং বাংলাদেশে আমদানি শুল্ক হ্রাসের সিদ্ধান্তে গত মাসে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কম ছিল। কিন্তু এখন আবার বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ সংকটের অজুহাতে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।

বরিশাল
পাঁচ দিনের ব্যবধানে বরিশালের বাজারে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। বিক্রেতারা জানান, দেশি পেঁয়াজ খুচরা বাজারে কেজিতে ২৫ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। এই পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৯৯ থেকে ১০০ টাকায়। গত সপ্তাহের চেয়ে পাইকারিতে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫ টাকা পর্যন্ত।

তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে দেশি পেঁয়াজের সংকট থাকায় বরিশালের পেঁয়াজপট্টিতে দেশি পেঁয়াজের সংকট রয়েছে। বাড়তি দামের কারণে অনেকেই আড়তে পেঁয়াজ তুলছেন না।

এদিকে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় হতাশ খুচরা বিক্রেতা ও সাধারণ ক্রেতারা। তাঁরা বলছেন, এভাবে দাম বাড়তে থাকলে তাঁদের ভোগান্তি আরও বাড়বে। যেখান থেকে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হচ্ছে সেসব জায়গায় অভিযান চালিয়ে দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।

যশোর
যশোরের শার্শা ও বেনাপোলে গত তিন দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে বেড়ে গেছে ৫ থেকে ১০ টাকা। সরবরাহ কমসহ আমদানি স্বল্পতার কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে বলে জানান ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বেনাপোল দিয়ে চলতি মাসে আসেনি পেঁয়াজের চালান। আমদানি বাড়লে দাম কমে আসবে।

দিনাজপুর
দিনাজপুরে সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা। দিনাজপুর বাহাদুর বাজারে পাইকারি দরে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি প্রকারভেদে ১০০ টাকা থেকে ১০৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ ১৩২ টাকা থেকে ১৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজের যথেষ্ট আমদানি হচ্ছে। তবে অতি মুনাফার জন্য আমদানিকারক এবং পাইকারি বিক্রেতাদের অসাধু সিন্ডিকেট পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়েছে। এক সপ্তাহ আগে পাইকারি বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০ থেকে ৯৫ টাকা দরে এবং দেশি পেঁয়াজ ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হতো।

ক্রেতারা বলছেন, পূজার সময় আমদানি বন্ধ থাকায় ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি কমে যাওয়ার অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু তাদের এই অভিযোগ সঠিক নয়। তারা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে অতি মুনাফা করছে। বাজারে কোনো মনিটরিং নেই। সরকার আমদানিকারক এবং পাইকারি ব্যবসায়ীদের গোডাউনে অভিযান চালালেই পেঁয়াজের দাম কমে যাবে।

হিলি স্থল বন্দরে আমদানি করা পেঁয়াজ প্রকারভেদে ৮৫ টাকা থেকে ১০৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

জেলার খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পূজার সময় আমদানি বন্ধ থাকায় ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি কমে যাওয়ার অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু তাদের এই অভিযোগ সঠিক নয়। আমদানিকারকেরা প্রচুর পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করে তা মজুত করেছে। তারা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে অতি মুনাফা করছে। বাজারে কোনো মনিটরিং নেই। সরকার আমদানিকারক এবং পাইকারি ব্যবসায়ীদের গুদামে অভিযান চালালেই পেঁয়াজের দাম কমে যাবে।

চট্টগ্রাম
এক সপ্তাহের ব্যবধানে চট্টগ্রামে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। ভারতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়া এবং বেনাপোল সীমান্তে অমি শাহের আগমনকে কেন্দ্র করে বন্দর বন্ধ থাকায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে, বলছেন বিক্রেতারা।

সোমবার নগরীর নানা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গেল বুধবার ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। যা খুচরা পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে ১১০ টাকায়।

পেঁয়াজ বিক্রেতা বিজয় চ্যাটার্জি বলেন, অমিত শাহের বেনাপোল সীমান্তে আসাকে আসাকে কেন্দ্র করে দেশে ঢুকছে না পেঁয়াজ। তা ছাড়া ভারতের নাসিক এলাকায় পেঁয়াজের দাম বাড়তি। তাই দেশে বেড়েছে দাম।

ফরিদপুর
ফরিদপুরে তিন দিনের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। আজ সোমবার সকালে শহরের হাজী শরিয়াতুল্লাহ বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১৪০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সিকদার এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. শাহজাহান সিকদার জানান, কৃষক পর্যায়ে দেশি পেঁয়াজের মজুত শেষের দিকে, যে কারণে বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। তাই গত তিন দিনে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। আর এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজ ২০ টাকা বেড়ে বর্তমানে ১৪০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।

জেলার পেঁয়াজ বাজার ও আড়ৎগুলোতে প্রশাসনের বিশেষ টাস্কফোর্স ও ভোক্তা অধিকার যৌথ অভিযান পরিচালনা করলেও তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি।