ব্যাংকের লাইনে নয়, ঘরে বসেই আয়কর দিন: প্রধান উপদেষ্টা
- আপডেট সময় : ০১:৫১:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪
- / ৩৫১ বার পড়া হয়েছে
এখন থেকে ব্যাংকের লাইনের পরিবর্তে ঘরে বসেই আয়কর দেয়া যাবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।
বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন, ‘আপনাদের দেওয়া করই দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। অথচ সরকারের কাছে করের টাকা জমা দিতে নানা ঝামেলা পোহাতে হয়।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন থেকে ব্যাংকে লাইন দাঁড়িয়ে আয়কর জমা দেয়া বা রিটার্ন জমা দেয়ার ঝামেলা করতে হবে না। আপনি ঘরে বসেই আয়কর জমা দিয়ে রিটার্ন দাখিল করবেন, এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর শহরের সব সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী, সব তফশিলি ব্যাংক, মোবাইল ফোন অপারেটর এবং বেশকিছু বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য এভাবে আয়কর রিটার্ন দেওয়া এখন থেকে বাধ্যতামূলক করা হলো। এছাড়া দেশের বাকি সবাইকে অনলাইনে ই-রিটার্ন এবং আয়কর জমা দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হলো।’
ভিডিও বার্তায় ড. ইউনূস বলেন, ‘কোন প্রতিষ্ঠান কত বেশি আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দিচ্ছে তার ভিত্তিতে পুরস্কারের জন্য জেলায় জেলায়, শহরে শহরে প্রতিযোগিতা হোক।’
দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘আপনার আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধবকে শিখিয়ে দিন কীভাবে ঘরে বসে অনলাইনে আয়কর দেওয়া যায়। তরুণ তরুণীদের অনুরোধ করছি, এ ব্যাপারে করদাতাকে সাহায্য করার জন্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রস্তুতি এখান থেকেই শুরু হতে পারে। ক্রমে সব ধরনের কর অনলাইনে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এখন থেকে আয়কর দেওয়ার অভিজ্ঞতা মসৃণ ও জঞ্জালমুক্ত হোক, এই কামনা করছি।’
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেবেন যেভাবে
ই-রিটার্ন সিস্টেমটি ব্যবহারের সময় আপনার মোবাইল ফোন নম্বর যেটি বায়োমেট্রিকলি ভেরিফাইড এবং ই-টিন নম্বর প্রয়োজন হবে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র যেমন- বেতন সনদপত্র, বিনিয়োগ (সঞ্চয়পত্র, এফডিআর, ডিপিএস, জীবন বীমা ইত্যাদি), ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ফ্ল্যাট, জমির তথ্য ইত্যাদি সঙ্গে রাখতে হবে। না থাকলে আগে তুলে নিতে হবে। আপনার ডকুমেন্টস থেকে নিজস্ব অনেক তথ্য ই-রিটার্নে ইনপুট দিতে হবে।
রেজিস্ট্রেশন করবেন যেভাবে
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য প্রথমেই ই-রিটার্ন ওয়েবসাইটে https://etaxnbr.gov.bd/ প্রবেশ করতে হবে।
এবার ‘ই-রিটার্ন’ বাটনে ক্লিক করলে একটি নতুন উইন্ডো আসবে। সেখানে জানতে চাওয়া হবে আপনার অ্যাকাউন্ট আছে কি নাই। যদি থাকে তাহলে ‘আই হ্যাভ এন অ্যাকাউন্ট’ বাটনে ক্লিক করতে হবে আর না থাকলে ‘আই ডোন্ট হ্যাভ এন অ্যাকাউন্ট’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
রেজিস্ট্রেশন করার পূর্বে আপনার মোবাইল নম্বরটি বায়োমেট্রিক ভেরিফায়েড কি না, সেটা জানতে চাইবে। এ জন্য ‘আই ডোন্ট হ্যাভ এন অ্যাকাউন্ট’ বাটনে ক্লিক করার পর সেই অপশনটা পাবেন।
সেখানের ‘ওকে’ বাটনে ক্লিক করলে ‘সাইন আপ’ পেজ আসবে। এবার আপনার টিন নম্বর, মোবাইল নম্বর ও ক্যাপচা সঠিকভাবে দিয়ে ‘ভেরিফাই’ অপশনে ক্লিক করতে হবে।
আপনার দেওয়া ফোন নম্বরে যে ছয় অক্ষরের ওটিপি কোড যাবে সেটি এবার বসিয়ে একটি নতুন পাসওয়ার্ড দিয়ে দিতে হবে। নতুন পাসওয়ার্ডটি আবার দিয়ে সাবমিট করতে হবে। পাসওয়ার্ড অবশ্যই শক্তিশালী হতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করার সঙ্গে সঙ্গে আপনার একটি ই-রিটার্ন অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে।
রেজিস্ট্রেশনের সময় অবশ্যই নিজের নামের মোবাইল নম্বরটি ব্যবহার করতে হবে। অন্য কারো মোবাইল নম্বর ব্যবহার করার চেষ্টা করলে আপনার টিনটি ব্লক করে দেওয়া হতে পারে। আপনি আর ই-রিটার্ন সিস্টেমে রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন না।
সাইন ইন
রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে সাইন ইন করতে হবে। সাইন ইন পেজে আপনার টিন নম্বর, পাসওয়ার্ড ও ক্যাপচা দিয়ে সাইন ইন করতে হবে। আপনাকে ই-রিটার্নের ড্যাশবোর্ডে নিয়ে যাবে। এখানে ই-টিনের যাবতীয় তথ্য, রিটার্ন সাবমিশন ও ট্যাক্স রেকর্ডের সব তথ্য পাবেন।
রিটার্ন সাবমিশন
ই-রিটার্ন ড্যাশবোর্ডের ‘সাবমিশন’ অপশনের ভেতর দুটি রিটার্ন পেজ পাবেন। ‘রেগুলার ই-রিটার্ন’ ও ‘সিঙ্গেল পেজ রিটার্ন’।
বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, বার্ষিক করযোগ্য আয় পাঁচ লাখ টাকার কম হলেই ‘সিঙ্গেল পেজ রিটার্ন’ আয়কর বিবরণী জমা দিলেই হবে। এ ছাড়া সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ টাকার কম হতে হবে, এমন শর্তও রয়েছে। আর বেশি থাকলে ‘রেগুলার ই-রিটার্ন’।
সিঙ্গেল পেজ রিটার্ন
সিঙ্গেল পেজ রিটার্ন অপশনে ক্লিক করলে একটি পপ আপ আসবে। সেখানে এক পাতার রিটার্ন পূরণের শর্তাবলিগুলোতে টিক দিতে হবে।
বুঝতে সমস্যা হলে যা করবেন
রিটার্ন প্রস্তুত করার সময়, আপনি (?) চিহ্নে মাউস রেখে সিস্টেম সহায়তা পেতে পারেন। কল সেন্টারে (09643-717171) সরাসরি কল করেও সহায়তা নিতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।