অক্টোবরের শেষেও হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপ কমছে না। এ সময় ডেঙ্গু উপসর্গের সাথে শীতজনিত রোগ যুক্ত হওয়ায় বাড়ছে শারীরিক জটিলতা। চিকিৎসকরা বলছেন, মৃত্যুঝুঁকি এড়াতে জ্বর হলেই অবহেলা না করেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। এছাড়া রোগীর সাথে হাসপাতালে আসা স্বজনদেরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ তাদের।
ডেঙ্গু আক্রান্ত মেয়ের টেস্টের রিপোর্ট উল্টেপাল্টে বোঝার চেষ্টায় উত্তর গোড়ানের বাসিন্দা মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন। ১০ দিন ধরে মেয়েকে নিয়ে মুগদা হাসপাতালে তিনি, জানালেন এক মাস আগে নিজেও ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি ছিলেন বেসরকারি হাসপাতালে।
এ বছর অক্টোবরেও হাসপাতালে ডেঙ্গুর রোগীর চাপ কমছে না। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে ডেঙ্গুর উচ্চঝুঁকিতে থাকা এলাকার রোগীই বেশি আসছে হাসপাতালে। বেশিরভাগ রোগীই ভুগছে তীব্র জ্বর, বমি আর পানি শূন্যতায়।
রোগীর সাথে হাসপাতালে আসা অনেক স্বজনও আক্রান্ত হচ্ছেন ডেঙ্গুতে। মশা থেকে নিজেকে বাঁচাতে তাই কেউ কেউ আলাদাভাবে মশারি টানিয়ে আবার কেউ ভয় নিয়েই সেবা করে যাচ্ছেন প্রিয়জনের।
চিকিৎসকরা বলছেন, অক্টোবরে ডেঙ্গুর উপসর্গের সাথে শীতজনিত রোগ যুক্ত হওয়ায় শারীরিক জটিলতা বাড়ছে। ডেঙ্গুর মৌসুম না হওয়ায় জ্বরে ভুগলেও অবহেলা করছেন অনেকেই। এতে বাড়ছে প্রাণহানি। জ্বর হলে অবহেলা না করে প্রাথমিক অবস্থাতেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ তাদের।
মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সত্যজিৎ কুমার সাহা জানান, ডেঙ্গু টেস্ট নেগিটিভ আসলেও অনেকের ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা যায় তাই যেকোনো উপসর্গ দেখা দিলে অতি সত্বর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
ডিএনসিসি হাসপাতালের অ্যাডমিন অফিসার সাদিয়া সুলতানা বলেন, ‘আমরা কিন্তু এখন রোগীর সংখ্যা কমাতে পারছি না। এরই সঙ্গে রোগের তীব্রতাও বাড়ছে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অক্টোবরেও বৃষ্টিপাত হচ্ছে। মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায় এবার শীতেও দাপট থাকবে ডেঙ্গুর।
কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের কার্যক্রম আরও বেগবান করতে হবে, তা নাহলে এবার শীতের সময়েও ডেঙ্গুর প্রবণতা আরও দেখা যাবে।’
এ বছর অক্টোবরে ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত শতাধিক মৃত্যু হয়েছে আর আক্রান্ত প্রায় ২৬ হাজার।