ঢাকা ০৬:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দেশের বাইরেও সম্পদের পাহাড় সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলকের

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:৩৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৩৫১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে আইসিটি খাতে হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন নামে-বেনামে স্ত্রী, শ্যালকসহ পরিবারের সদস্যদের নামেও তিনি বিপুল সম্পদ গড়েছেন বলে জানা গেছে। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে নিজ এলাকা সিংড়া উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এবং দেশের বাইরেও সম্পদের মালিক হয়েছেন পলক।

সিংড়ায় দৃশ্যমান সম্পদগুলোর মধ্যে পলকের বড় ছেলে অপূর্ব জুনাইদের নামে জামতলী-বামিহাল সংলগ্ন চওড়া গ্রামে ৪২ বিঘা জমি, পুকুর এবং আমবাগান রয়েছে। পলকের মা জামিলার নামে রয়েছে সুকাশ ইউনিয়নে ৩৬ বিঘা জমির পুকুর ও বাগান। এ ছাড়া সিংড়া পৌর এলাকার উপশহর অঞ্চলে পলকের স্ত্রী আরিফা জেসমিন কনিকা এবং শ্যালক লুৎফুল হাবীবের নামে দুটি বিল্ডিং বাড়ি ও চাঁদপুর রাস্তাসংলগ্ন ৫ কোটি টাকা মূল্যের জমি রয়েছে।

পলকের বড় ছেলে অপূর্ব জুনাইদের নামে জামতলী-বামিহাল রাস্তাসংলগ্ন চওড়া গ্রামে লিটন নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৪২ বিঘা পুকুর ও আমবাগান কিনেছেন, যা চওড়া মৌজার দাগ নম্বর ১৯০, ১৯১, ১৯২, ১৯৩, ১৯৮, ১৯৯, ২০০, ২০১, ২০২, ২১১, ২১৪, ২১৫, ২৯৩, ৩০৮, ৩০৯, ৩৪৪, ৫৬২। মা জামিলার নামে সুকাশ ইউনিয়নে আগমুরশন গ্রামে হেদায়েতুল্যা প্রামাণিকের কাছ থেকে ৩৬ বিঘা পুকুরসহ বাগান কিনেছেন (খতিয়ান নম্বর ২০৮, জেএল নম্বর ১১৩, আগমুরশন মৌজার দাগ নম্বর ৭০২, ৭৯৬, ৭৯৭, ৭৯৮, ৭৯৯, ৮০০ ও ৮০১।

এর সাতটি দাগে ১২ একর ২৯ শতক জায়গার মধ্যে ১২ একরই জামিলার নামে কেনা)। সিংড়া পৌরসভার উপশহর এলাকায় স্ত্রী আরিফা জেসমিন কনিকা ও শ্যালক লুৎফুল হাবীবের নামে রয়েছে দুই কোটি টাকা মূল্যের দুটি পৃথক বিল্ডিং বাড়ি। শহরের মাদারীপুর ও চাঁদপুর রাস্তাসংলগ্ন এলাকায় স্ত্রীর নামে প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের ১৫ শতক মার্কেটের জায়গা কিনেছেন (কাটাপুকুরিয়া মৌজার দাগ নম্বর ৩৫১)।

সূত্রমতে, এছাড়া ঢাকা শহরেও বিভিন্ন নামে কোটি কোটি টাকার ফ্ল্যাট-বাড়ি, গাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিনেছেন। দেশের বাইরে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে পলক দম্পতির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি-গাড়ি রয়েছে বলে তার নিকটাত্মীয়রা জানিয়েছেন। নিজ এলাকা শেরকোল ইউনিয়নে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে কয়েক কোটি টাকা লোপাট করেছেন পলক ও তার শ্যালক শেরকোল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফুল হাবীব রুবেল।

চওড়া গ্রামে ৪২ বিঘা পুকুর ও আমবাগান দেখাশোনার দায়িত্বে নিয়োজিত রেজাউল করিম বলেন, ‘এখানে পুকুর, আমবাগান, যা কিছু দেখছেন সব প্রতিমন্ত্রী পলকের বলে এলাকাবাসী জানে। পুকুর লিজ নিয়ে মাছচাষ করছেন বাঁশবাড়িয়া গ্রামের ফরিদ উদ্দিন। আমি এখানে দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছি।’ চওড়া গ্রামের গৃহিণী নাছিমা বেগম বলেন, একসময় পলককে এলাকায় ঠিকাদারি করতে দেখেছি।

সম্প্রতি, পলকের গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার স্ত্রী আরিফা জেসমিন কনিকা ও তাদের সন্তানরা দেশের বাইরে পাড়ি জমান। বিদেশ থেকে ফেসবুকে এক ভিডিওতে কনিকা সম্পদের ব্যাপারে অভিযোগগুলোকে ভিত্তিহীন দাবি করেন এবং মানবেতর জীবনযাপনের কথা জানান। তবে তার এই বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ।

এই অভিযোগগুলো তদন্তাধীন, তবে দেশের সম্পদ লুটপাট ও অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আইসিটি খাতের এই প্রভাবশালী সাবেক প্রতিমন্ত্রীর সম্পদ ও কর্মকাণ্ড ঘিরে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

দেশের বাইরেও সম্পদের পাহাড় সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলকের

আপডেট সময় : ১১:৩৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪

সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে আইসিটি খাতে হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন নামে-বেনামে স্ত্রী, শ্যালকসহ পরিবারের সদস্যদের নামেও তিনি বিপুল সম্পদ গড়েছেন বলে জানা গেছে। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে নিজ এলাকা সিংড়া উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এবং দেশের বাইরেও সম্পদের মালিক হয়েছেন পলক।

সিংড়ায় দৃশ্যমান সম্পদগুলোর মধ্যে পলকের বড় ছেলে অপূর্ব জুনাইদের নামে জামতলী-বামিহাল সংলগ্ন চওড়া গ্রামে ৪২ বিঘা জমি, পুকুর এবং আমবাগান রয়েছে। পলকের মা জামিলার নামে রয়েছে সুকাশ ইউনিয়নে ৩৬ বিঘা জমির পুকুর ও বাগান। এ ছাড়া সিংড়া পৌর এলাকার উপশহর অঞ্চলে পলকের স্ত্রী আরিফা জেসমিন কনিকা এবং শ্যালক লুৎফুল হাবীবের নামে দুটি বিল্ডিং বাড়ি ও চাঁদপুর রাস্তাসংলগ্ন ৫ কোটি টাকা মূল্যের জমি রয়েছে।

পলকের বড় ছেলে অপূর্ব জুনাইদের নামে জামতলী-বামিহাল রাস্তাসংলগ্ন চওড়া গ্রামে লিটন নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৪২ বিঘা পুকুর ও আমবাগান কিনেছেন, যা চওড়া মৌজার দাগ নম্বর ১৯০, ১৯১, ১৯২, ১৯৩, ১৯৮, ১৯৯, ২০০, ২০১, ২০২, ২১১, ২১৪, ২১৫, ২৯৩, ৩০৮, ৩০৯, ৩৪৪, ৫৬২। মা জামিলার নামে সুকাশ ইউনিয়নে আগমুরশন গ্রামে হেদায়েতুল্যা প্রামাণিকের কাছ থেকে ৩৬ বিঘা পুকুরসহ বাগান কিনেছেন (খতিয়ান নম্বর ২০৮, জেএল নম্বর ১১৩, আগমুরশন মৌজার দাগ নম্বর ৭০২, ৭৯৬, ৭৯৭, ৭৯৮, ৭৯৯, ৮০০ ও ৮০১।

এর সাতটি দাগে ১২ একর ২৯ শতক জায়গার মধ্যে ১২ একরই জামিলার নামে কেনা)। সিংড়া পৌরসভার উপশহর এলাকায় স্ত্রী আরিফা জেসমিন কনিকা ও শ্যালক লুৎফুল হাবীবের নামে রয়েছে দুই কোটি টাকা মূল্যের দুটি পৃথক বিল্ডিং বাড়ি। শহরের মাদারীপুর ও চাঁদপুর রাস্তাসংলগ্ন এলাকায় স্ত্রীর নামে প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের ১৫ শতক মার্কেটের জায়গা কিনেছেন (কাটাপুকুরিয়া মৌজার দাগ নম্বর ৩৫১)।

সূত্রমতে, এছাড়া ঢাকা শহরেও বিভিন্ন নামে কোটি কোটি টাকার ফ্ল্যাট-বাড়ি, গাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিনেছেন। দেশের বাইরে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে পলক দম্পতির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি-গাড়ি রয়েছে বলে তার নিকটাত্মীয়রা জানিয়েছেন। নিজ এলাকা শেরকোল ইউনিয়নে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে কয়েক কোটি টাকা লোপাট করেছেন পলক ও তার শ্যালক শেরকোল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফুল হাবীব রুবেল।

চওড়া গ্রামে ৪২ বিঘা পুকুর ও আমবাগান দেখাশোনার দায়িত্বে নিয়োজিত রেজাউল করিম বলেন, ‘এখানে পুকুর, আমবাগান, যা কিছু দেখছেন সব প্রতিমন্ত্রী পলকের বলে এলাকাবাসী জানে। পুকুর লিজ নিয়ে মাছচাষ করছেন বাঁশবাড়িয়া গ্রামের ফরিদ উদ্দিন। আমি এখানে দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছি।’ চওড়া গ্রামের গৃহিণী নাছিমা বেগম বলেন, একসময় পলককে এলাকায় ঠিকাদারি করতে দেখেছি।

সম্প্রতি, পলকের গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার স্ত্রী আরিফা জেসমিন কনিকা ও তাদের সন্তানরা দেশের বাইরে পাড়ি জমান। বিদেশ থেকে ফেসবুকে এক ভিডিওতে কনিকা সম্পদের ব্যাপারে অভিযোগগুলোকে ভিত্তিহীন দাবি করেন এবং মানবেতর জীবনযাপনের কথা জানান। তবে তার এই বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ।

এই অভিযোগগুলো তদন্তাধীন, তবে দেশের সম্পদ লুটপাট ও অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আইসিটি খাতের এই প্রভাবশালী সাবেক প্রতিমন্ত্রীর সম্পদ ও কর্মকাণ্ড ঘিরে ব্যাপক আলোচনা চলছে।