ঢাকা ১২:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা শহীদুল কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০২:০৪:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৩৬০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৪৬ জনকে গুলি করে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে পুলিশি নিরাপত্তায় তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে গতকাল বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাতে তাকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আতঙ্কে এতদিন লুকিয়ে ছিলেন শহীদুল ইসলাম। অবৈধ পথে দেশত্যাগেরও পরিকল্পনা ছিলো তাঁর। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল।

গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। আর বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার ২০ জনকে হাজির করতে ২৭ অক্টোবর নির্দেশ দেন তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল। সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, আব্দুর রাজ্জাক, দীপু মনি, ফারুক খানসহ ১৪ জনকে ১৮ নভেম্বর হাজিরের নির্দেশ দেন। আর ২০ নভেম্বর হাজির করতে বলা হয় সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সেনা কমকর্তা জিয়াউল আহসানসহ আরও ৬ জনকে।

এছাড়া, সেদিন সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ১৭ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের মধ্য দিয়ে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। ওই দিন বিকালেই লাশে স্তূপে আরও লাশ তোলা এবং পরে পোড়ানোর একাধিক ভিডিও প্রকাশ্যে এলে সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

জানা গেছে, বীভৎস ও নারকীয় ওই ঘটনার নির্দেশদাতা হিসেবে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছিলেন শাহিদুল। ওই সময় তিনি ডিউটি করছিলেন সিভিল ড্রেসে। পরনে ছিল নীল রঙের পোলো শার্ট, কালো রঙের ট্রাউজার। এক হাতে ব্যান্ডেজ। ট্রাউজারের পকেটে ছিল ওয়্যারলেস সেট। প্রচণ্ড টেনশনে খেয়েছেন একের পর এক সিগারেট।

সেদিন ঘটনাস্থলে থাকা পরিদর্শক, উপপরিদর্শক এবং কনস্টেবল পদের প্রত্যক্ষদর্শী ৪ পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, লাশ ভ্যানে তোলার পূর্বপর ঘটনাজুড়ে যা কিছু ঘটেছে সব কিছুর নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম। তার নির্দেশেই মরদেহ পড়ানোর জন্য পেট্রোল জোগাড় করেছিলেন আশুলিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আরাফাত উদ্দিন ও আশুলিয়া থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মনির। প্লাস্টিকের বোতলে করে আনা হয়েছিল পেট্রোল। ৩ দফায় গাড়িটিতে ছিটানো হয় পেট্রোল।

নিউজটি শেয়ার করুন

আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা শহীদুল কারাগারে

আপডেট সময় : ০২:০৪:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪

আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৪৬ জনকে গুলি করে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে পুলিশি নিরাপত্তায় তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে গতকাল বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাতে তাকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আতঙ্কে এতদিন লুকিয়ে ছিলেন শহীদুল ইসলাম। অবৈধ পথে দেশত্যাগেরও পরিকল্পনা ছিলো তাঁর। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল।

গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। আর বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার ২০ জনকে হাজির করতে ২৭ অক্টোবর নির্দেশ দেন তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল। সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, আব্দুর রাজ্জাক, দীপু মনি, ফারুক খানসহ ১৪ জনকে ১৮ নভেম্বর হাজিরের নির্দেশ দেন। আর ২০ নভেম্বর হাজির করতে বলা হয় সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সেনা কমকর্তা জিয়াউল আহসানসহ আরও ৬ জনকে।

এছাড়া, সেদিন সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ১৭ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের মধ্য দিয়ে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। ওই দিন বিকালেই লাশে স্তূপে আরও লাশ তোলা এবং পরে পোড়ানোর একাধিক ভিডিও প্রকাশ্যে এলে সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

জানা গেছে, বীভৎস ও নারকীয় ওই ঘটনার নির্দেশদাতা হিসেবে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছিলেন শাহিদুল। ওই সময় তিনি ডিউটি করছিলেন সিভিল ড্রেসে। পরনে ছিল নীল রঙের পোলো শার্ট, কালো রঙের ট্রাউজার। এক হাতে ব্যান্ডেজ। ট্রাউজারের পকেটে ছিল ওয়্যারলেস সেট। প্রচণ্ড টেনশনে খেয়েছেন একের পর এক সিগারেট।

সেদিন ঘটনাস্থলে থাকা পরিদর্শক, উপপরিদর্শক এবং কনস্টেবল পদের প্রত্যক্ষদর্শী ৪ পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, লাশ ভ্যানে তোলার পূর্বপর ঘটনাজুড়ে যা কিছু ঘটেছে সব কিছুর নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম। তার নির্দেশেই মরদেহ পড়ানোর জন্য পেট্রোল জোগাড় করেছিলেন আশুলিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আরাফাত উদ্দিন ও আশুলিয়া থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মনির। প্লাস্টিকের বোতলে করে আনা হয়েছিল পেট্রোল। ৩ দফায় গাড়িটিতে ছিটানো হয় পেট্রোল।