ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা চিহ্নিত করতে তালিকা যাচাই বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে এই কোটায় চাকরিপ্রাপ্তদের তালিকা করা হচ্ছে। যাচাই–বাছাই করা হচ্ছে তাঁদের সনদ। যাদের সনদ ভুয়া বলে প্রমাণিত হলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
দেশে এখন পর্যন্ত নিবন্ধিত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১ লাখ ৯৫ হাজার। আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তিন মেয়াদে ১৮ হাজার ব্যক্তির নামে মুক্তিযোদ্ধার গেজেট জারি করে মন্ত্রণালয়।
এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী মন্ত্রী, নেতারা মুক্তিযোদ্ধা সনদের জন্য আবেদন করেন। যাঁদের অনেককে যাচাই–বাছাই ছাড়া গেজেটভুক্তও করা হয়। সেই সঙ্গে টাকার বিনিময়ে সনদ দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
ইতিহাস গবেষকেরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকার মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বললেও এই সময়ই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদের অভিযোগ ওঠে বেশি। সেই সঙ্গে গত ১৬ বছরেও তারা মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা করেনি।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে মন্ত্রী-সচিব থেকে শুরু করে সরকার সমর্থক শিক্ষকসহ অনেক মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির চেষ্টা করেছে। অনেকে এই তালিকাভুক্ত হয়েও গিয়েছে।
এসব ভুয়া সনদ চিহ্নিতের কাজ শুরু করেছে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়। মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা জেলা, উপজেলা পর্যায়ে উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। সেসব এলাকার মানুষ চিহ্নিত করবে।
মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা সত্যিকার অর্থে যুদ্ধ করেছিলেন। তাঁদের নিজ এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচিত। তাঁদের কথা এলাকার সকলেই জানে। তবে যারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা জনগণই তাদের চিহ্নিত করবে।
এদিকে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যারা সরকারি চাকরি নিয়েছে তাদের তালিকা করছে মন্ত্রণালয়। এসব সনদও যাচাই–বাছাই করা হবে।
মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক উপদেষ্টা আরও বলেন, আসল মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার মধ্যেই মিলে আছে ভুয়াদের নাম। এগুলোই যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু হচ্ছে। এরইমধ্যে ৭৬ জন গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাকে চিহ্নিত করা হয়েছে যাদের জন্ম মুক্তিযুদ্ধের পরে।