যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার জাবালিয়া থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় অনেক ফিলিস্তিনিকে আটক করে পোশাক খুলে বসিয়ে রেখেছিল ইসরায়েলি বাহিনী। এ অবস্থায় তাদের ছবিও তুলেছে। এমন একটি ছবি হাতে এসেছে মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএনের।
সিএনএন জানিয়েছে, ছবিটি গত শুক্রবার প্রথম ইসরায়েল টেলিগ্রাম চ্যানেলে শেয়ার হয়। তবে ছবিটি কে তুলেছে, তা জানা যায়নি। ছবিতে থাকা পাঁচজনের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছে সিএনএন। তাঁরা বলেছেন, তাঁদের আটক করার সময় ইসরায়েলি সেনারা ছবিটি তুলেছেন।
ছবিতে যাদের দেখা গেছে, তাদের বেশির ভাগই পুরুষ। অনেকে অর্ধনগ্ন। অনেকে বয়স্ক, অনেকে আবার আহত। জাবালিয়া থেকে পালানোর সময় এ রকম অন্তত ২০০ ফিলিস্তিনি ধরা পড়েন ইসরায়েলি সেনাদের কাছে। এরপর তাদের অর্ধনগ্ন করে কয়েক ঘণ্টা তীব্র শীতের মধ্যে বসিয়ে রাখা হয় এবং ছবি তোলা হয়।
মুহাম্মাদ খালাফ নামে একজন সিএনএনকে বলেন, ‘স্ত্রী ও ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে নিরাপদ জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। তখন বেলা ১১টার মতো বাজে। এ সময় ইসরায়েলি সেনারা আমাদের আটক করেন। আমাদের মতো আরও অনেক নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ ও শিশুকে আটক করেছিল তারা।’
খালাফ বলেন, ‘বিকেল চারটার দিকে তারা নারী ও শিশুদের চলে যাওয়ার অনুমতি দেয়। কিন্তু আমাদের আটকে রাখে। এরপর কিছু সময় পর তারা আমাদের শরীরের পোশাক খুলে ফেলতে বলে। আমরা প্রাণভয়ে তাদের নির্দেশ মানি। তারা এ অবস্থায় কনকনে শীতের মধ্যে আমাদের কয়েক ঘণ্টা বসিয়ে রাখে। এরপর তারা আমাদের ছবি তোলে এবং ঠাট্টা উপহাস করতে থাকে।’
মোহাম্মাদ আবু ওয়ার্দ নামের আরেক ফিলিস্তিনি বলেন, তারা কারও কারও সর্বশেষ পোশাক অন্তর্বাস পর্যন্ত খুলে ফেলতে বাধ্য করেছিল।
প্রায় তিন সপ্তাহ আগে জাবালিয়ায় নতুন করে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এরপর থেকেই তারা সেখানকার ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছিল। সেই নির্দেশ মেনেই এই ফিলিস্তিনিরা জাবালিয়া ছেড়ে যাচ্ছিলেন। তবু তাদের আটক করে প্রচণ্ড শীতের মধ্যে নির্মম নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিল ইসরায়েল।
এ ছবির ব্যাপারে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি বলে জানিয়েছে সিএনএন। তবে তারা স্বীকার করেছে, গাজায় অভিযানের অংশ হিসেবে সেখানকার লোকদের নিয়মিত আটক করা হয় এবং নগ্ন করে তল্লাশি করা হয়।