মিঠুন চক্রবর্তীর প্রাক্তন স্ত্রী অভিনেত্রী হেলেনা মারা গেছেন
- আপডেট সময় : ১০:২৩:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪
- / ৩৫৮ বার পড়া হয়েছে
অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর প্রথম স্ত্রী হেলেনা লিউক মারা গেছেন। রোববার (৩ নভেম্বর) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তবে তাঁর মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। সামাজিক মাধ্যমে হেলেনার মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত করেছেন পশ্চিমবাংলার জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী-অভিনেত্রী কল্পনা আইয়ার।
১৯৮৫ সালে অমিতাভ বচ্চনের ‘মর্দ’ ছবিতে ব্রিটিশ রানির ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন হেলেনা। তাঁর সঙ্গে মিঠুন চক্রবর্তীর বিয়ে টিকেছিল মাত্র চার মাস। এরপরই তাঁদের ডিভোর্স হয়৷
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বরাতে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন মিঠুনের সাবেক স্ত্রী। তবে তাঁর ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল বলিউডেই।
শোনা যায় প্রেম সম্পর্কে আবদ্ধ হয়েই বিয়ে করেছিলেন তাঁরা। তবে সুখের হয়নি সংসার। একের পর এক ঝড় আসতে শুরু করে তাঁদের বৈবাহিক জীবনে। মিঠুন চক্রবর্তীকে নিয়ে তাঁর মনে জন্মেছিল তীব্র বিতৃষ্ণা। পরবর্তীতে যাঁর প্রকাশ পাওয়া গিয়েছিল সাক্ষাৎকারগুলোয়। একটি পুরনো সাক্ষাৎকারে মিঠুনের সঙ্গে বিয়ে প্রসঙ্গে হেলেনা তীব্র অস্বস্তি প্রকাশ করে বলেছিলেন, ঘটনাটি একটি ‘হেজি ড্রিম’। স্টারডাস্ট ম্যাগাজিনকে তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটি না হলেই ভাল হত। কিন্তু ওই ব্যক্তি আমায় বিশ্বাস করতে বাধ্য করেছিলেন যে উনিই আমার জন্য উপযুক্ত । দুর্ভাগ্যবশত এই কাজে সফল হন তিনি।’
এর পর মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে হেলেনার পুনর্মিলনের গুজবও রটেছিল। তবে এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, ‘তিনি আমার আশেপাশা থাকা একমাত্র ধনি ব্যক্তি হলেও আমি তার কাছে ফিরে যাব না। এমনকি আমি তার কাছ থেকে খোরপোষও দাবি করিনি। এটি একটি দুঃস্বপ্ন ছিল যা শেষ হয়েছে অবশেষে।’
একটি পুরনো সাক্ষাৎকারে হেলেনা মিঠুনের সঙ্গে চার মাস বয়সী বিয়েকে ‘ঝুলন্ত স্বপ্ন’ বলে অভিহিত করেছিলেন। তিনি স্টারডাস্ট ম্যাগাজিনকে বলেছিলেন, “আমি কেবল এটাই ভাবি, যদি এটা না ঘটত, তাহলে ভাল হত। উনিই আমায় মগজ ধোলাই করেছিলেন, যাতে আমি বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েছিলাম, যে তিনিই আমার জন্য শ্রেষ্ঠ পুরুষ। দুর্ভাগ্যক্রমে, তিনি সফল হয়েছেন।” অভিনেত্রী ভাগ করে নিয়েছিলেন, “আমি তার কাছে কোনওদিন ফিরে যাব না যদি সে সবচেয়ে ধনী লোকও হয়। আমি এমনকি খোরপোশের জন্যও জিজ্ঞাসা করিনি। এটি একটি দুঃস্বপ্ন ছিল এবং সেটা শেষ হয়ে গেছে।”
মিঠুন যিনি হেলেনার বাবাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি তাকে ‘পৃথিবীর নবম আশ্চর্য’-এর মতো ট্রিট করবেন, অবশেষে তাকে একা ছেড়ে দিলেন। তিনি সাক্ষাত্কারে আরও বলেছিলেন, “আমি সত্যিই তাকে বিশ্বাস করেছি যখন সে আমাকে বলেছিল যে সে আমাকে ভালবাসে। কিন্তু যখন আমি তাকে ভালো করে চিনতে পারলাম, তখন বুঝলাম সে নিজেকে ছাড়া কাউকে ভালোবাসে না। তিনি অত্যন্ত অপরিণত ছিলেন, এবং যদিও আমি তার থেকে কয়েক বছর ছোট ছিলাম, আমি অনেক বেশি পরিপক্ক ছিলাম। তিনি আমার প্রাক্তন প্রেমিক জাভেদকে ধূর্তভাবে দেখার জন্য আমাকে অভিযুক্ত করেছিলেন। আমি তাকে বোঝানোর চেষ্টা করতাম যে আমি তা করিনি, কিন্তু তার গভীর-মূল সন্দেহজনক প্রকৃতিকে নির্মূল করতে সফল হতে পারিনি। পরে আমি বুঝতে পারলাম তার একটা অপরাধবোধ আছে। সে নিজেই আমার আড়ালে অনেককেই বোকা বানাচ্ছিল এবং ভেবেছিল আমিও তাই করছি।”
হেলেনার শেষ ফেসবুক পোস্ট ছিল রোববার রাত ৯টা ২০ মিনিটে। শেষবার তিনি লেখেন, ‘কী রকম একটা অস্বস্তি অনূভূতি হচ্ছে, জানি না হঠাৎ এমন কেন লাগছে। খুবই ভারাক্রান্ত ও কনফিউজড লাগছে।’ তারপরই খবরে আসে তিনি মারা গেছেন। বেশ কিছু রিপোর্ট মারফত জানা গেছে যে, তাঁর শরীর ভালো ছিল না, কিন্তু তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ নেননি।
যুক্তরাষ্ট্রে ডেল্টা এয়ারলাইন্সে কাজ করতেন হেলেনা। এর আগে ‘দো গুলাব’, ‘আও প্যায়ার করে’ ও ‘ভাই আখির ভাই হোতা হ্যয়’ ছবিতেও কাজ করেছেন।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে মিঠুন চক্রবর্তীর স্ত্রী যোগিতা বালী। তাঁদের সংসারে দুই ছেলে রয়েছে।