ঢাকা ০৪:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

স্মার্ট টিভি আর বাড়ির খাবার না পেয়ে হতাশ ভিআইপি বন্দিরা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:২১:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৩৪২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর গণহত্যা, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অপরাধে গ্রেপ্তার সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা কারা কর্তৃপক্ষের কাছে স্মার্ট টিভি এবং বাড়িতে রান্না করা খাবার চেয়েছেন। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষের জবাব, কারাবিধি অনুযায়ী এ ধরনের সেবার সুযোগ নেই কারাগারে নেই।

ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের টেলিভিশন পাওয়ার সুযোগ থাকলেও এখনো কেউ নেননি। তবে তাঁদের কয়েকজন স্মার্ট টেলিভিশন চেয়েছেন। কিন্তু নিয়ম না থাকায় কারা কর্মকর্তারা এ বিষয়ে অপারগতা জানিয়েছেন। এ ছাড়া তাঁদের অনেকে আবদার করছেন নিয়মিত বাসা থেকে রান্না করা খাবার সরবরাহের, কিন্তু সেটিও নিয়মের মধ্যে না থাকায় দিতে পারছেন না কারা কর্মকর্তারা।

কারাগার সূত্র জানায়, বন্দি মন্ত্রী-এমপিরা বই পড়ে বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছেন। আর নির্ধারিত দুটি পত্রিকা পড়ে জানতে পারছেন দেশের খবরাখবর। হত্যাসহ বিভিন্ন মামলায় মন্ত্রী-এমপি ও বিভিন্ন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মিলিয়ে সারা দেশে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৬৭ জন ভিআইপি। এর মধ্যে ৩৪ জন ডিভিশন পেয়েছেন। বাকি ৩৩ জন এখনো ডিভিশন পাননি। তাঁদের ডিভিশনের আবেদন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে রয়েছে বলে কারাগারের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। সেখান থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর তাঁদের ডিভিশন দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

গ্রেপ্তারকৃত ৬৭ জনের মধ্যে ৬৩ জনই রয়েছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। এ কারাগারটিতে এখন পর্যন্ত ৩৯ জনকে ডিভিশন দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মন্ত্রী, এমপি ও বিভিন্ন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়েছেন। কারাবিধি অনুসারে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিরা সাধারণ বন্দির চেয়ে কিছু বেশি সুযোগ-সুবিধা পান।

এর মধ্যে চেয়ার, টেবিল, খাটও মেলে। খেতে পারেন চিকন চালের ভাত। ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিরা চাইলে বাড়ি থেকে টেলিভিশনও নিতে পারেন। তবে সেই টেলিভিশন হতে হবে সাধারণ টেলিভিশন, যাতে কোনো পোর্ট থাকতে পারবে না। দেওয়া হয় না ডিশলাইনও। ফলে টেলিভিশনে বাংলাদেশ টেলিভশন (বিটিভি) ছাড়া অন্য কোনো চ্যানেলও দেখার সুযোগ থাকে না।

কারাগারের এক কর্মকর্তা জানান, অন্তত চারজন মন্ত্রী ও কয়েকজন সংসদ সদস্য তাঁদের কাছে স্মার্ট টিভি চেয়েছেন। জবাবে কারাগার কর্তৃপক্ষ থেকে তাঁদের জানানো হয়েছে, কারাবিধি অনুযায়ী সে সুযোগ নেই। এতে তাঁরা হতাশ। এরপর তাঁরা সাধারণ টেলিভিশন নেওয়ারও আগ্রহ দেখাননি।

ওই কর্মকর্তা আরো জানান, বাড়ি থেকে রান্না করা খাবারের আবদারও করেন কয়েকজন মন্ত্রী ও এমপি। কারাগারে বাইরের খাবার দেওয়ার সুযোগ নেই জানানোর পর মন খারাপ করেন তাঁরা। দ্বিতীয়বার আর এসব আবদার করেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ মোতাহের হোসেন গতকাল বলেন, ‘তাঁদেরকে (মন্ত্রী-এমপি) কারাবিধি অনুসারে কারাগারে রাখা হয়েছে। তাঁরা প্রত্যেকেই সচেতন মানুষ। আইন সম্পর্কে জানেন। ডিভিশনপ্রাপ্তদের যা যা সুবিধা পাওয়ার কথা তা কারাবিধিতে উল্লেখ রয়েছে। সেই অনুযায়ী তাঁদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে বন্দি মন্ত্রী ও এমপিদের কারাগারে আলাদা সেলে রাখা হচ্ছে। তবে নিয়মানুযায়ী সকালে লকআপ খোলার পর একে অপরের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ রয়েছে। তাঁরা গল্প-গুজব করেও সময় কাটাচ্ছেন। একটি সূত্র জানায়, চাইলে তাঁরা দিনের বেলায় করিডরের দিকেও যেতে পারেন। তবে মন্ত্রী-এমপিরা পরিচিত মুখ হওয়ায় নিরাপত্তার কথা ভেবে তাঁরা নিজেরাই সাধারণ বন্দিদের সামনে যেতে চাচ্ছেন না। নিজেদের মধ্যে আলাপেই কিছুটা সময় পার করছেন।

কারা কর্মকর্তারা জানান, শুধু ভিআইপি নন, অন্য বন্দিরাও যদি কথাবার্তা বলার সুযোগ না পান, তাহলে কারাগারে অসুস্থ হয়ে যাবেন। এ কারণে নিয়মের মধ্যে কারাগারে কথাবার্তা বলার সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বন্দিদের মধ্যে বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেলে দুজন ভিআইপি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এঁদের একজন সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী ও ঠাকুরগাঁও-১ (সদর উপজেলা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) রমেশ চন্দ্র সেন। গ্রেপ্তারের পর তাঁকে ঠাকুরগাঁও কারাগারে রাখা হয়েছিল। সেখানে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর তাঁকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অধীনে বিএসএমএমইউয়ে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অন্যজন সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন সাবেক আইজিপি শহীদুল হক ও সদ্য সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনও। তবে তাঁদের দুজনকে যেখানে রাখা হয়েছে সেখানে একে অপরের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের সুযোগ নেই।

সংশ্লিষ্ট একজন কারা কর্মকর্তা জানান, ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিরা সাধারণ বন্দির চেয়ে দু-তিনটি পদের খাবার বেশি পান। এর মধ্যে রয়েছে চা, কলা ও পাউরুটি। দিনে একবার তাঁদের চা দেওয়া হয়। ডিভিশনপ্রাপ্ত মন্ত্রী-এমপিদের সকালবেলা একটি কলা ও ১০০ গ্রাম ওজনের পাউরুটি দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া দুপুরে ও রাতে তাঁদের জন্য চিকন চালের ভাতের সঙ্গে মাছ, মাংস ও সবজির ব্যবস্থা রয়েছে।

গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে রয়েছেন আনিসুল হক, সালমান এফ রহমান, এ বি তাজুল ইসলাম, জুনাইদ আহমেদ পলক, ড. আবদুর রাজ্জাক, সাধন চন্দ্র মজুমদার, ফরহাদ হোসেন, দীপু মনি, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, ইমরান আহমেদ, টিপু মুনশি, কাজী জাফর উল্যাহ, হাসানুল হক ইনু, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, শামসুল হক টুকু, রাশেদ খান মেনন, হাজি সেলিম, নজরুল ইসলাম মজুমদার, ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, সাদেক খান, তাজুল ইসলাম ও বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, আব্দুস সোবহান গোলাপ ও আহমদ হোসেন প্রমুখ।

এ ছাড়া রয়েছেন পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও শহীদুল হক, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার সাবেক পরিচালক কমোডর মনিরুল ইসলাম, ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হিল কাফী, সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সম্প্রতি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, পুলিশের সাবেক ডিসি মশিউর রহমানসহ আরো কয়েকজন।

নিউজটি শেয়ার করুন

স্মার্ট টিভি আর বাড়ির খাবার না পেয়ে হতাশ ভিআইপি বন্দিরা

আপডেট সময় : ১২:২১:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪

আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর গণহত্যা, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অপরাধে গ্রেপ্তার সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা কারা কর্তৃপক্ষের কাছে স্মার্ট টিভি এবং বাড়িতে রান্না করা খাবার চেয়েছেন। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষের জবাব, কারাবিধি অনুযায়ী এ ধরনের সেবার সুযোগ নেই কারাগারে নেই।

ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের টেলিভিশন পাওয়ার সুযোগ থাকলেও এখনো কেউ নেননি। তবে তাঁদের কয়েকজন স্মার্ট টেলিভিশন চেয়েছেন। কিন্তু নিয়ম না থাকায় কারা কর্মকর্তারা এ বিষয়ে অপারগতা জানিয়েছেন। এ ছাড়া তাঁদের অনেকে আবদার করছেন নিয়মিত বাসা থেকে রান্না করা খাবার সরবরাহের, কিন্তু সেটিও নিয়মের মধ্যে না থাকায় দিতে পারছেন না কারা কর্মকর্তারা।

কারাগার সূত্র জানায়, বন্দি মন্ত্রী-এমপিরা বই পড়ে বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছেন। আর নির্ধারিত দুটি পত্রিকা পড়ে জানতে পারছেন দেশের খবরাখবর। হত্যাসহ বিভিন্ন মামলায় মন্ত্রী-এমপি ও বিভিন্ন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মিলিয়ে সারা দেশে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৬৭ জন ভিআইপি। এর মধ্যে ৩৪ জন ডিভিশন পেয়েছেন। বাকি ৩৩ জন এখনো ডিভিশন পাননি। তাঁদের ডিভিশনের আবেদন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে রয়েছে বলে কারাগারের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। সেখান থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর তাঁদের ডিভিশন দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

গ্রেপ্তারকৃত ৬৭ জনের মধ্যে ৬৩ জনই রয়েছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। এ কারাগারটিতে এখন পর্যন্ত ৩৯ জনকে ডিভিশন দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মন্ত্রী, এমপি ও বিভিন্ন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়েছেন। কারাবিধি অনুসারে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিরা সাধারণ বন্দির চেয়ে কিছু বেশি সুযোগ-সুবিধা পান।

এর মধ্যে চেয়ার, টেবিল, খাটও মেলে। খেতে পারেন চিকন চালের ভাত। ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিরা চাইলে বাড়ি থেকে টেলিভিশনও নিতে পারেন। তবে সেই টেলিভিশন হতে হবে সাধারণ টেলিভিশন, যাতে কোনো পোর্ট থাকতে পারবে না। দেওয়া হয় না ডিশলাইনও। ফলে টেলিভিশনে বাংলাদেশ টেলিভশন (বিটিভি) ছাড়া অন্য কোনো চ্যানেলও দেখার সুযোগ থাকে না।

কারাগারের এক কর্মকর্তা জানান, অন্তত চারজন মন্ত্রী ও কয়েকজন সংসদ সদস্য তাঁদের কাছে স্মার্ট টিভি চেয়েছেন। জবাবে কারাগার কর্তৃপক্ষ থেকে তাঁদের জানানো হয়েছে, কারাবিধি অনুযায়ী সে সুযোগ নেই। এতে তাঁরা হতাশ। এরপর তাঁরা সাধারণ টেলিভিশন নেওয়ারও আগ্রহ দেখাননি।

ওই কর্মকর্তা আরো জানান, বাড়ি থেকে রান্না করা খাবারের আবদারও করেন কয়েকজন মন্ত্রী ও এমপি। কারাগারে বাইরের খাবার দেওয়ার সুযোগ নেই জানানোর পর মন খারাপ করেন তাঁরা। দ্বিতীয়বার আর এসব আবদার করেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ মোতাহের হোসেন গতকাল বলেন, ‘তাঁদেরকে (মন্ত্রী-এমপি) কারাবিধি অনুসারে কারাগারে রাখা হয়েছে। তাঁরা প্রত্যেকেই সচেতন মানুষ। আইন সম্পর্কে জানেন। ডিভিশনপ্রাপ্তদের যা যা সুবিধা পাওয়ার কথা তা কারাবিধিতে উল্লেখ রয়েছে। সেই অনুযায়ী তাঁদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে বন্দি মন্ত্রী ও এমপিদের কারাগারে আলাদা সেলে রাখা হচ্ছে। তবে নিয়মানুযায়ী সকালে লকআপ খোলার পর একে অপরের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ রয়েছে। তাঁরা গল্প-গুজব করেও সময় কাটাচ্ছেন। একটি সূত্র জানায়, চাইলে তাঁরা দিনের বেলায় করিডরের দিকেও যেতে পারেন। তবে মন্ত্রী-এমপিরা পরিচিত মুখ হওয়ায় নিরাপত্তার কথা ভেবে তাঁরা নিজেরাই সাধারণ বন্দিদের সামনে যেতে চাচ্ছেন না। নিজেদের মধ্যে আলাপেই কিছুটা সময় পার করছেন।

কারা কর্মকর্তারা জানান, শুধু ভিআইপি নন, অন্য বন্দিরাও যদি কথাবার্তা বলার সুযোগ না পান, তাহলে কারাগারে অসুস্থ হয়ে যাবেন। এ কারণে নিয়মের মধ্যে কারাগারে কথাবার্তা বলার সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বন্দিদের মধ্যে বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেলে দুজন ভিআইপি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এঁদের একজন সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী ও ঠাকুরগাঁও-১ (সদর উপজেলা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) রমেশ চন্দ্র সেন। গ্রেপ্তারের পর তাঁকে ঠাকুরগাঁও কারাগারে রাখা হয়েছিল। সেখানে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর তাঁকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অধীনে বিএসএমএমইউয়ে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অন্যজন সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন সাবেক আইজিপি শহীদুল হক ও সদ্য সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনও। তবে তাঁদের দুজনকে যেখানে রাখা হয়েছে সেখানে একে অপরের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের সুযোগ নেই।

সংশ্লিষ্ট একজন কারা কর্মকর্তা জানান, ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিরা সাধারণ বন্দির চেয়ে দু-তিনটি পদের খাবার বেশি পান। এর মধ্যে রয়েছে চা, কলা ও পাউরুটি। দিনে একবার তাঁদের চা দেওয়া হয়। ডিভিশনপ্রাপ্ত মন্ত্রী-এমপিদের সকালবেলা একটি কলা ও ১০০ গ্রাম ওজনের পাউরুটি দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া দুপুরে ও রাতে তাঁদের জন্য চিকন চালের ভাতের সঙ্গে মাছ, মাংস ও সবজির ব্যবস্থা রয়েছে।

গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে রয়েছেন আনিসুল হক, সালমান এফ রহমান, এ বি তাজুল ইসলাম, জুনাইদ আহমেদ পলক, ড. আবদুর রাজ্জাক, সাধন চন্দ্র মজুমদার, ফরহাদ হোসেন, দীপু মনি, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, ইমরান আহমেদ, টিপু মুনশি, কাজী জাফর উল্যাহ, হাসানুল হক ইনু, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, শামসুল হক টুকু, রাশেদ খান মেনন, হাজি সেলিম, নজরুল ইসলাম মজুমদার, ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, সাদেক খান, তাজুল ইসলাম ও বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, আব্দুস সোবহান গোলাপ ও আহমদ হোসেন প্রমুখ।

এ ছাড়া রয়েছেন পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও শহীদুল হক, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার সাবেক পরিচালক কমোডর মনিরুল ইসলাম, ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হিল কাফী, সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সম্প্রতি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, পুলিশের সাবেক ডিসি মশিউর রহমানসহ আরো কয়েকজন।