ভিআইপি প্রটোকলে সাবেক স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী এবং তার স্বামীর পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ করেছে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস। বাসায় গিয়ে তাদের ছবি ও বায়োমেট্রিক গ্রহণ করা হয়েছে। এই বিষয়ে কোনো সঠিক জবাব দিতে পারছেন না পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা। জানা গেছে, লাল পাসপোর্ট বাতিল হওয়ায় সাধারণ পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন শিরিন শারমিন চৌধুরী।
বিকেল ৪টার পর পরই আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে সব ধরনের সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে এই সময়ে পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে আসা গ্রহীতার ভিড় কমে না। সেবাগ্রহীতাদের অনেকে এই সময়ে পাসপোর্ট অফিস সংশ্লিষ্টদের দ্বারা দুর্ব্যবহারের শিকার হন।
অথচ কাউকে কাউকে নির্ধারিত সময়ের পরেও বাসায় গিয়ে দেয়া হয় ভিআইপি সার্ভিস। তাও আবার গণঅভ্যুত্থানের মুখে পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের স্পীকার শিরিন শারমিন চৌধুরীর মত কাউকে। যিনি কী না হত্যা মামলার আসামি।
অনুসন্ধান বলছে, গত ৮ অক্টোবর বাসায় গিয়ে শিরিন শারমিন চৌধুরী এবং তার স্বামী সৈয়দ ইশতিয়াক হোসেনের পাসপোর্টের জন্য ছবি, চোখের আইরিশ এবং ১০ আঙ্গুলের ছাপ গ্রহণ করে পাসপোর্ট অফিসের মোবাইল টিম।
সার্ভারের তথ্য বলছে, অফিস সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর বিকেল ৫টা ১২ মিনিটে তাদের আবেদন গ্রহণ করা হয়। আবেদনের দু'দিন পরেই অর্থাৎ ১০ অক্টোবর পাসপোর্ট দু'টি জরুরিভাবে ইস্যু করার কথা।
একজন হত্যা মামলার আসামি কীভাবে এত ভিআইপি পাসপোর্ট সেবা পেলো? এ ব্যাপারে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘মোবাইল টিমের যে অথরিটি তারা জানতো বিষয়টা। তারা বায়োমেট্রিক্স নেয়ার পর ফর্মগুলো আমাদের অফিসে দেয়। তখন এখান থেকে এগুলো স্ক্যান করা হয়। এটা স্বাভাবিক আবেদনের মতো দেখছি না।'
যৌক্তিক কোনো জবাব নেই। তবে তিনি সার্ভার ঘেটে দেখাচ্ছেন শিরিন শারমিন চৌধুরীর পাসপোর্টের আবেদনে আবু জাফর মো. আব্দুল্লাহ নামের আরেক কর্মকর্তার স্বাক্ষর। পাসপোর্ট অফিসের সূত্র বলছে, আবু জাফর মো. আব্দুল্লাহকে দিয়ে এই কাজ করিয়ে তাকে দ্রুত ঢাকার বাইরে বদলি করে দেয়া হয়।
আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, 'এই বিষয়টা আপনাদের কাছে যেন ইম্পর্ট্যান্ট, তেমনি আমাদের কাছেও ইমপর্টেন্ট। এই তথ্য জানার রাইট বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের আছে। এই ইস্যুর জন্য আমাদের অফিস নির্দিষ্ট অফিসার অ্যাসাইন করেছেন।'
এই উপপরিচালক বলছেন, মোবাইল টিম কার অনুমতি নিয়ে শিরিন শারমিন চৌধুরীর বাসায় গিয়ে তাকে ভিআইপি প্রটোকল দিয়েছেন সেটি তিনি জানেন না। এরপর বিষয়টি জানতে মোবাইল টিমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে যায়। যদিও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
এসময় তিনি আমাদের কাছে দু'টি লিখিত প্রশ্ন রেখে দেন। এই কর্মকর্তা জানান, যত দ্রুত সম্ভব এর লিখিত ব্যাখ্যা দেবে তার টিম।