ম্যানচেস্টারের দুটি অংশ। একটা লাল, আরেকটা নীল। এর মধ্যে নীল অংশে বিষাদের ছায়া পড়লে নিশ্চিতভাবেই উৎসবের আমেজে লাল যেন আরও বেশি রক্তিম হয়ে হঠে। সে উৎসবের মাত্রা গতকাল মঙ্গলবার রাতে যে আরও বেশি হয়েছে, কোনো সন্দেহ ছাড়াই সেটা বলে দেওয়া যায়।
চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে স্পোর্তিং ক্লুব দো পর্তুগালের (স্পোর্তিং সিপি) কাছে গতকাল ৪-১ গোলে নাস্তানাবুদ হয়েছে ম্যান সিটি। আর সিটিকে উড়িয়ে দিতে স্পোর্তিংয়ের ডাগ আউট থেকে যিনি কলকাঠি নেড়েছেন, পর্তুগিজ কোচ রুবেন আমোরিম আগামী সপ্তাহে ইউনাইটেডের দায়িত্ব নিতে চলেছেন। একদিকে নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের উড়ে যাওয়া, সেটাও আবার নিজেদের ভবিষ্যত কোচের জাদুতে- ম্যানচেস্টারের লাল অংশে খুশির আমেজ সে কারণেই গতকাল কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে।
আর সিটির তরী যেন আটকে গেছে অদৃশ্য কোনো বালুচরে। সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা তিন ম্যাচ হারের স্বাদ পেল পেপ গার্দিওলার দল। গত সপ্তাহে টটেনহামের কাছে হেরে ইএফএল কাপের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছে সিটি। গত শনিবার প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে বোর্নমাথের কাছেও হেরে বসেছে সিটিজেনরা। এরপর চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচেও ভাগ্য বদল হলো না গার্দিওলার দলের। গতকাল স্পোর্তিং সিপির কাছে হেরেই বসল ৪-১ ব্যবধানে।
এমন পরাজয় সিটির কাছে অচেনাই মনে হতে পারে। ২০১৬ সালের পর চ্যাম্পিয়নস লিগে এবারই প্রথম চার গোল খেল ইংলিশ পরাশক্তিরা। আর ২০১৮ সালের এপ্রিলের পর এই প্রথম টানা তিন ম্যাচে হারের তেতো স্বাদ পেল গার্দিওলার দল।
অথচ গতকাল সিটির শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। ম্যাচের মাত্র ৪ মিনিটেই ফিল ফোডেনের দারুণ এক গোলে এগিয়ে (১-০) গিয়েছিল সিটি। গোল করেই যেন খেই হারিয়ে ফেলে ইংলিশ ক্লাবটি। আর পাল্টা আক্রমণে ভয় ধরাতে থাকে পর্তুগিজ ক্লাবটি। ম্যাচের ৩৮ মিনিটে সমতা ফেরান ইয়োকেরেস। ১-১ সমতা নিয়েই বিরতিতে যায় দুদল।
দ্বিতীয়ার্ধের পুরো গল্পটা স্পোর্তিং সিপির। ম্যাচের ৪৬ মিনিটে ম্যাক্সিমিলিয়ানো আরাউহোর গোলে এগিয়ে যায় স্পোর্তিং সিপি। এর ৩ মিনিট পর পেনাল্টি থেকে ব্যবধান আরও বাড়ান (৩-১) ইয়োকেরেস। ম্যাচের ৮০ মিনিটে পেনাল্টি থেকেই হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন সুইডিশ স্ট্রাইকার ইয়োকেরেস। একইসঙ্গে পর্তুগিজ ক্লাবটিও পায় ৪-১ গোলের বড় জয়ের দেখা।
মাঝে অবশ্য ব্যবধান কমানোর সুযোগ পেয়েছিল সিটি। কিন্তু পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন আর্লিং হলান্ড।
টানা তিন ম্যাচে হারের পর সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা জানিয়েছেন, ইংলিশ ক্লাবটি অন্ধকার কোনো কুঠুরীতে আটকে গেছে। তিনি বলেছেন, ‘আমরা শুরু থেকেই জানতাম, এ মৌসুমটা কঠিন হতে যাচ্ছে। আমি এটা পছন্দ করি। আমি এটার মুখোমুখি হতে চাই। আমি হাল ছাড়ব না, এটা নিশ্চিত।’