গুমের পর আটকে রাখতে ঢাকায় ছিল শতাধিক বন্দিশালা
- আপডেট সময় : ১২:৪৯:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৪
- / ৩৪৯ বার পড়া হয়েছে
আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুমের পর অনেককে হত্যা করে ফেলে দেওয়া হতো বুড়িগঙ্গায়। কাউকে কাউকে বছরের পর আটকে রাখা হতো বন্দিশালায়। ঢাকায় এমন শতাধিক বন্দিশালা রয়েছে বলে জানিয়েছে গুম তদন্ত কমিশন। তাদের তথ্যানুযায়ী, এগুলোর মধ্যে আটটির খোঁজ মিলেছে।
এসব ঘটনায় ৪৪ শতাংশ অভিযোগই র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বিরুদ্ধে। গুম তদন্ত কমিশনের দাবি, গুমের আলামত নষ্টের চেষ্টা করে ফেঁসে যেতে পারেন অনেক বাহিনীর সদস্যরা।
তিলোত্তমা রাজধানীকে জড়িয়ে আছে বুড়িগঙ্গা নদী। নানা সময়ে অপরাধ গোপন করতে একেই বেছে নেওয়া হয়েছে। গুমের ঘটনায় হত্যার পর ঘাটে বাঁধা নৌকায় করে মরদেহ ভাসিয়ে দেওয়া হতো নদীতে।
মানবাধিকার কর্মী ও গুম তদন্ত কমিশনের সদস্য নূর খান লিটন জানান, আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুমের পর হত্যা করে ফেলে দেওয়া হতো বুড়িগঙ্গায়। অনেককে বছরের পর আটকে রাখা হতো বন্দিশালায়। ঢাকায় এমন শতাধিক বন্দিশালা রয়েছে। যার মধ্যে আটটির খোঁজ মিলেছে। জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলের দায়িত্বে থাকা সদস্যরাই করেছেন এসব অপকর্ম।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই একের পর এক সামনে আসতে থাকে গুমের তথ্য। হারানো স্বজনদের ফিরে পাওয়ার দাবিতে মানববন্ধন হয় অনেক জায়গায়। পরে ২৭ আগস্ট গুম তদন্ত কমিশন করার পর দুই মাসে এসেছে ভয়ঙ্কর সব অভিযোগ।
এ পর্যন্ত ৩৮৩ জনের সঙ্গে কথা বলেছে কমিশন। সবচেয়ে বেশি ১৭২টি অভিযোগ জমা পড়েছে র্যাবের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ডিবির ৫৫টি, সিটিটিসির ৩৭টি, ডিজিএফআইয়ের ২৬টি, পুলিশের ২৫টি এবং অন্যান্য বাহিনীর বিরুদ্ধে আরও ৬৮টি অভিযোগ এসেছে।
রাজনৈতিক, জঙ্গি সংশ্লিষ্টতাসহ চার কারণে ধরে নিয়ে গুম করত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এবার গোপন সেসব বন্দিশালা ভেঙে নষ্ট করা হচ্ছে আলামত।
গুম তদন্ত কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস বলেন, যদি বর্তমান কমান্ডিং কর্মকর্তারা আলামত নষ্ট করতে যান তাহলে তারা অতীত কমান্ডিং কর্মকর্তাদের ক্রাইমে সম্পৃক্ত হয়ে যাবেন।
মাত্র সাড়ে তিন থেকে চার ফুট দৈর্ঘ্যের কক্ষে বছরের পর বছর আটকে রাখা হতো বন্দীদের। চলতে নানা শারীরিক-মানসিক নির্যাতন।
নূর খান লিটন জানান, মানবাধিকারকে সবার আগে গুরুত্ব দিতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যে কোনো কাজ করার ক্ষেত্রে এদিকে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আসামি গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালে সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা দেয়। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবে তা বারবারই লঙ্ঘন করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।