পাহাড়সম অর্থনৈতিক চাপ নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণের পর, বহুমুখী সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেয় সরকার। ক্ষয়িষ্নু রিজার্ভ, চড়া মূল্যস্ফীতি, বিরাট রাজস্ব ঘাটতি পূরনে ঢেলে সাজানো হয় সব বিভাগ। দেশসেরা অর্থনীতিবিদদের নিয়ে গঠন করা হয় শ্বেতপত্র, রাজস্ব সংস্কার কমিটি ও ব্যাংকিং টাস্কফোর্সও। তিনমাস শেষে কতটুকু এলো পরিবর্তন? বিশ্লেষকরা জানালেন আশার কথা।
চড়া মূল্যস্ফীতিতে নাকাল সাধারণ মানুষ, ব্যাহত বিদেশি মুদ্রার সংকটে পণ্য আমদানিও। অন্যদিকে, উন্নয়ন প্রকল্পের নামে রাষ্ট্রীয় অর্থের নয়ছয় কিংবা বেপরোয়া বিদেশি ঋণের ঝোঁক- নেতিবাচক সবসূচকে যখন ভারাক্রান্ত দেশের অর্থনীতি, তখনই ছাত্র-জনতার সফল আন্দোলনের পর দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
শুরু থেকেই সরকারের কাছে পরিবর্তনের প্রত্যাশার পারদ যেনো আকাশচুম্বী। অগ্রাধিকার তালিকায় তাই অর্থনৈতিক সংস্কারেই গুরুত্ব দেয় ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদ। গঠন করা হয় অর্থনৈতিক সংস্কারের বেশ কটি কমিটি। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে তিনদফা নীতি সুদহার বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক। রিজার্ভও পৌঁছে ২৫ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। তাই প্রশ্ন এই তিনমাসে কতটুকু পাল্টালো পরিস্থিতি?
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ও দক্ষতার যে বিষয়গুলো সেগুলো এখনও চলমান রয়েছে। সেগুলোর ফিডব্যাক আসতেও কিছুটা সময় লাগবে।
জুলাই বিপ্লব ইস্যুতে মাসখানেক থমকে যায় উৎপাদন কার্যক্রম। শংকা দেখা দেয় রপ্তানি আয় নিয়ে। তা সত্বেও গেলো বছরের তুলনায় ১৯ শতাংশ রপ্তানি আয়। সুবাতাস প্রবাসী আয়েও। গেল বছরের তুলনায় ২১ শতাংশ রেমিট্যান্স বেড়েছে অক্টোবরে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সঠিক নির্দেশনা আর হস্তক্ষেপহীন সিদ্ধান্তগ্রহণের ফল পাচ্ছে বাংলাদেশ।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ইতিবাচক দিক হচ্ছে আমাদের রিজার্ভ ভালো হচ্ছে, রেমিটেন্স ভালো এবং আমাদের উন্নয়ন সহযোগীরাও এগিয়ে আসছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের নানামুখী উদ্যোগের পরও জটিল বৃত্তে আটকে আছে মূল্যস্ফীতির সূচক। সরকারের সমন্বিত পদক্ষেপে আশার রেখা সেখানেও।