গত রোববার তুরস্কের লিগের রেফারির মান নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছিলেন জোসে মরিনিও। সেদিন ত্রাবজনস্পরের বিপক্ষে তাঁর দল ফেনেরবাচ ৩-২ ব্যবধানের জয় পেলেও ‘স্পেশাল ওয়ান’ খ্যাত এ পর্তুগিজ কোচের ক্ষোভ ছিল অন্য জায়গায়। মরিনিওর অভিযোগ- প্রতিপক্ষ দুটি পেনাল্টি পেয়েছে ম্যাচে, দুটিই ভিএআরের পরামর্শের পর, অন্যদিকে ত্রাবজনস্পরের এক খেলোয়াড়কে লাল কার্ড না দেখানোর পাশাপাশি তাঁর দলকে একটি প্রাপ্য পেনাল্টি দেওয়া হয়নি।
এ নিয়ে ম্যাচ রেফারির সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছিলেন মরিনিও। পরে ম্যাচ শেষে ৮ মিনিট ধরে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির কড়া সমালোচনা করেন তিনি। পাশাপাশি তুরস্কের ফুটবল লিগের সিস্টেম নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তখনই ধারণা করা গিয়েছিল, শাস্তির মুখে পড়তে পারেন ৬১ বছর বয়সী এ পর্তুগিজ কোচ।
সে অনুমান সত্যি হয়েছে। মরিনিওর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে তুর্কিশ ফুটবল ফেডারেশন। রেয়াল মাদ্রিদের সাবেক কোচকে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জরিমানা হিসেবে ৯ লাখ তুর্কিশ লিরা দিতে হবে মরিনিওকে, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে তুর্কিশ ফুটবল ফেডারেশন জানিয়েছে, মরিনিওর মন্তব্য ‘স্পোর্টসম্যানশিপ, খেলার নীতি-নৈতিকতার পরিপন্থী। এটি এ দেশের ফুটবলের মান কমিয়ে দিয়েছে।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘মরিনিওর মন্তব্য রেফারি ও ম্যাচ অফিসিয়ালদের নিরপেক্ষতাকে অসম্মানিত করেছে।’
মরিনিওর যে মন্তব্য নিয়ে এতো হইচই, গত রোববার ম্যাচের পর বি-ইন স্পোর্টসে শ্লেষাত্মক সুরে মরিনিও বলেছিলেন, ‘আমি ফেনেরবাচের লোকদেরই দোষ দিই আমাকে এখানে নিয়ে আসার জন্য। ওরা আমাকে (তুরস্কে রেফারিংয়ের এই অবস্থা নিয়ে) আধা সত্যি বলেছে! পুরো সত্যিটা বলেনি। পুরো সত্যিটা যদি তখন বলত, আমি এখানে আসতামই না! এই আধা সত্যির পর ছেলেদের নিয়ে এখন আমাকে প্রতিপক্ষের পাশাপাশি সিস্টেমের বিরুদ্ধেও লড়তে হচ্ছে।’
ওই ম্যাচের ভিডিও রেফারি আতিল্লা কারাওগ্লানকে এরপর ধুয়ে দিয়ে মরিনিও আরও যোগ করেন, ‘রেফারি না দেওয়ার পরও (ত্রাবজনস্পরকে) দুটি পেনাল্টি দেওয়ার সময়ে তিনি তৎপর ছিলেন, অথচ আমাদের যখন পেনাল্টি প্রাপ্য ছিল তখন সম্ভবত তিনি টার্কিশ চা খেতে গিয়েছিলেন, সে কারণে পেনাল্টিটা দিতে পারেননি। ম্যান অব দ্য ম্যাচ আসলে আতিল্লা কারাওগ্লান!’
মাঠে রেফারি থাকলেও এই ম্যাচে আসলে কারাওগ্লানই মূল রেফারিং করেছেন জানিয়ে শ্লেষের সুরে মরিনিও বলেছেন, ‘আমরা তাঁকে (মাঠে) দেখতে পাইনি, কিন্তু তিনিই রেফারি ছিলেন। মাঠে যিনি ছিলেন, সেই রেফারি তো ছোট বাচ্চা, রেফারি ছিলেন আতিল্লা কারাওগ্লান। অদৃশ্য মানব থেকে তিনি ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে উঠেছেন।’
এই ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারিকে আর ফেনেরবাচের কোনো ম্যাচে দেখতে চান না জানিয়ে মরিনিও এরপর বলেছেন, ‘আমার মনে হয় আমার কথাটা ফেনেরবাচের প্রত্যেক সমর্থকেরই কথা যে, এই রেফারিকে আর দেখতে চাই না। তাঁকে ভিএআর হিসেবে আর চাই না। মাঠেই চাই না, ভিএআরে আরও বেশি করে চাই না।’