ঢাকা ০৩:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

মাহমুদউল্লাহর বীরত্বপূর্ণ লড়াই সত্ত্বেও সিরিজ হারলো বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:২০:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৩৫৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের লড়াইয়ের পরও শেষ পর্যন্ত সিরিজ জয় করতে ব্যর্থ বাংলাদেশ। সোমবার (১১ নভেম্বর) সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাহমুদউল্লাহ ৯৮ রানের অসাধারণ ব্যাটিং করলেও গুরবাজের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ও দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের আশা শেষ হয়ে যায়। বাংলাদেশের দেয়া ২৪৫ রানের লক্ষ্য পেরিয়ে ৫ উইকেটের জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ ছিনিয়ে নিলো হাশমতউল্লাহ শহিদীর দল।

শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে জয়ী হলে আফগানদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো নিরপেক্ষ ভেন্যুতে সিরিজ জয় হতো বাংলাদেশের। তবে সেই সিরিজের শিরোপা ছিনিয়ে নিতে পারেনি মেহেদী মিরাজরা।

ম্যাচটির নায়ক ছিলেন গুরবাজ, যিনি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে তাসকিন আহমেদের বলে আউট হয়েছিলেন। কিন্তু আজ তাসকিন একাদশে না থাকায় গুরবাজের ঝলক ছিল আরও ভয়ঙ্কর। তাসকিনের জায়গায় ওয়ানডেতে অভিষেক হওয়া নাহিদ রানা আফগান ব্যাটারদের চাপে রেখেছিলেন, এবং প্রায় ১৫১ কিলোমিটার গতিতে বল করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত জয় এসেছে গুরবাজ-ওমরজাইদের।

নাহিদ, মুস্তাফিজুর রহমান আর নাসুম আহমেদ মিলে বাংলাদেশকে সঠিক কক্ষপথে রাখছিলেন দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকে। তবে শরিফুল ও মিরাজের ওপর চড়াও ছিলেন গুরবাজ- হজরতউল্লাহ ওমরজাইরা। দুজন মিলে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১০০ রান যোগ করেন। ওমরজাই–ও দলের জয় নিশ্চিত করার পথে ফিফটি করেছেন। এর আগে ৮৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে আফগানরা কিছুটা চাপেই ছিল। গতির ঝড় তোলা নাহিদই প্রথম সাফল্য দেন বাংলাদেশকে। তার ১৮৭ কিলো গতিতে দিশেহারা সেদিকউল্লাহ অটল ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন ১৪ রানে।

পরে নাহিদের দলে যোগ দেন মুস্তাফিজও। দুই দফায় আক্রমণে এসে ফেরান রহমত শাহ (৮) ও হাসমতউল্লাহকে (৬)। এরপরই শুরু হয় গুরবাজ-ওমরাইয়ের পাল্টা লড়াই। তাদের জুটি ভেঙে মিরাজ ব্রেকথ্রু দিলেও ততক্ষণে কিছুটা দেরিই হয়ে যায়। কারণ গুরবাজ ১২০ বলে ৫ চার ও ৭ ছক্কায় খেলেছেন ১০১ রানের ইনিংস। যা ওয়ানডেতে তার অষ্টম সেঞ্চুরি, এর তিনটিই বাংলাদেশের বিপক্ষে। পরের ওভারেই নাহিদ এসে ফেরান গুলবাদিন নাইবকে (১)। অনেক ওপরে ওঠা বল তালুবন্দী করেন জাকের।

বাংলাদেশকে হতাশায় পোড়ানোর ম্যাচে দু’বার জীবন পান গুরবাজ। প্রথমবার ১২তম ওভারে মুস্তাফিজের পঞ্চম বলটি ব্যাটে ঠিকমতো খেলতে পারেননি। গুরবাজে ব্যাটের কানায় লেগে পয়েন্টের দিকে ভেসে গেলেও হাত ফসকে ক্যাচ ছাড়েন রিশাদ হোসেন। এরপর ২২তম ওভারে মিরাজের পঞ্চম বলে গুরবাজকে স্টাম্পিং করতে ব্যর্থ জাকের আলি অনিক। ওয়াইড বলটি গ্লাভসে নিতে পারেননি। ওই সময় গুরবাজ ৫৬ রানে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তিনবার সুযোগ পেয়ে বাংলাদেশের হাত থেকে ক্রমাগত ম্যাচটি কেড়ে নিয়েছেন তিনি।

শেষদিকে কোনো নাটকীয়তা হয়নি। ওমরজাই-মোহাম্মদ নবি মিলে পৌঁছে গেছেন কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে। অপরাজিত থেকে ওমরজাই ৭০ এবং নবি ৩৪ রান করেন। বাংলাদেশের হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ ও নাহিদ রানা। ১০ ওভারে মাত্র ২৪ রান দিয়েছেন নাসুম।

এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করা বাংলাদেশ নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৪৪ রান সংগ্রহ করে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৮ রান করেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাছাড়া ফিফটি (৬১) পেয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ক্র্যাম্প পায়ে দারুণ এক ইনিংস খেলা রিয়াদ ম্লান হয়ে গেছেন দলের পরাজয়ে। অবশ্য সেঞ্চুরির পথে ক্র্যাম্প হয়েছিল বিজয়ী গুরবাজেরও।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৪৪/৮ (তানজিদ ১৯, সৌম্য ২৪, জাকির ৪, মিরাজ ৬৬, হৃদয় ৭, মাহমুদউল্লাহ ৯৮, জাকের ১, নাসুম ৫, শরিফুল ২*; ফারুকি ৭-০-৪১-০, গাজানফার ৭-০-৪৯-০, ওমারজাই ৭-০-৩৭-৪, নাবি ১০-২-৩৭-১ খারোটে ৯-০-৩৫-০, রাশিদ ১০-০-৪০-১)।

আফগানিস্তান: ৪৮.২ ওভারে ২৪৬/৫ (গুরবাজ ১০১, সেদিকউল্লাহ ১৪, রেহমাত ৮, শাহিদি ৬, ওমারজাই ৭০*, নাইব ১, নবি ৩৪*; শরিফুল ৮.২-০-৬১-০, নাহিদ ১০-১-৪০-২, নাসুম ১০-২-২৪-০, মুস্তাফিজ ৯-০-৫০-২, মিরাজ ১০-০-৫৬-১, সৌম্য ১-০-১২-০)।

ফল : ৫ উইকেটে জিতল আফগানিস্তান।

নিউজটি শেয়ার করুন

মাহমুদউল্লাহর বীরত্বপূর্ণ লড়াই সত্ত্বেও সিরিজ হারলো বাংলাদেশ

আপডেট সময় : ০২:২০:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের লড়াইয়ের পরও শেষ পর্যন্ত সিরিজ জয় করতে ব্যর্থ বাংলাদেশ। সোমবার (১১ নভেম্বর) সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাহমুদউল্লাহ ৯৮ রানের অসাধারণ ব্যাটিং করলেও গুরবাজের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ও দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের আশা শেষ হয়ে যায়। বাংলাদেশের দেয়া ২৪৫ রানের লক্ষ্য পেরিয়ে ৫ উইকেটের জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ ছিনিয়ে নিলো হাশমতউল্লাহ শহিদীর দল।

শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে জয়ী হলে আফগানদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো নিরপেক্ষ ভেন্যুতে সিরিজ জয় হতো বাংলাদেশের। তবে সেই সিরিজের শিরোপা ছিনিয়ে নিতে পারেনি মেহেদী মিরাজরা।

ম্যাচটির নায়ক ছিলেন গুরবাজ, যিনি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে তাসকিন আহমেদের বলে আউট হয়েছিলেন। কিন্তু আজ তাসকিন একাদশে না থাকায় গুরবাজের ঝলক ছিল আরও ভয়ঙ্কর। তাসকিনের জায়গায় ওয়ানডেতে অভিষেক হওয়া নাহিদ রানা আফগান ব্যাটারদের চাপে রেখেছিলেন, এবং প্রায় ১৫১ কিলোমিটার গতিতে বল করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত জয় এসেছে গুরবাজ-ওমরজাইদের।

নাহিদ, মুস্তাফিজুর রহমান আর নাসুম আহমেদ মিলে বাংলাদেশকে সঠিক কক্ষপথে রাখছিলেন দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকে। তবে শরিফুল ও মিরাজের ওপর চড়াও ছিলেন গুরবাজ- হজরতউল্লাহ ওমরজাইরা। দুজন মিলে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১০০ রান যোগ করেন। ওমরজাই–ও দলের জয় নিশ্চিত করার পথে ফিফটি করেছেন। এর আগে ৮৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে আফগানরা কিছুটা চাপেই ছিল। গতির ঝড় তোলা নাহিদই প্রথম সাফল্য দেন বাংলাদেশকে। তার ১৮৭ কিলো গতিতে দিশেহারা সেদিকউল্লাহ অটল ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন ১৪ রানে।

পরে নাহিদের দলে যোগ দেন মুস্তাফিজও। দুই দফায় আক্রমণে এসে ফেরান রহমত শাহ (৮) ও হাসমতউল্লাহকে (৬)। এরপরই শুরু হয় গুরবাজ-ওমরাইয়ের পাল্টা লড়াই। তাদের জুটি ভেঙে মিরাজ ব্রেকথ্রু দিলেও ততক্ষণে কিছুটা দেরিই হয়ে যায়। কারণ গুরবাজ ১২০ বলে ৫ চার ও ৭ ছক্কায় খেলেছেন ১০১ রানের ইনিংস। যা ওয়ানডেতে তার অষ্টম সেঞ্চুরি, এর তিনটিই বাংলাদেশের বিপক্ষে। পরের ওভারেই নাহিদ এসে ফেরান গুলবাদিন নাইবকে (১)। অনেক ওপরে ওঠা বল তালুবন্দী করেন জাকের।

বাংলাদেশকে হতাশায় পোড়ানোর ম্যাচে দু’বার জীবন পান গুরবাজ। প্রথমবার ১২তম ওভারে মুস্তাফিজের পঞ্চম বলটি ব্যাটে ঠিকমতো খেলতে পারেননি। গুরবাজে ব্যাটের কানায় লেগে পয়েন্টের দিকে ভেসে গেলেও হাত ফসকে ক্যাচ ছাড়েন রিশাদ হোসেন। এরপর ২২তম ওভারে মিরাজের পঞ্চম বলে গুরবাজকে স্টাম্পিং করতে ব্যর্থ জাকের আলি অনিক। ওয়াইড বলটি গ্লাভসে নিতে পারেননি। ওই সময় গুরবাজ ৫৬ রানে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তিনবার সুযোগ পেয়ে বাংলাদেশের হাত থেকে ক্রমাগত ম্যাচটি কেড়ে নিয়েছেন তিনি।

শেষদিকে কোনো নাটকীয়তা হয়নি। ওমরজাই-মোহাম্মদ নবি মিলে পৌঁছে গেছেন কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে। অপরাজিত থেকে ওমরজাই ৭০ এবং নবি ৩৪ রান করেন। বাংলাদেশের হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ ও নাহিদ রানা। ১০ ওভারে মাত্র ২৪ রান দিয়েছেন নাসুম।

এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করা বাংলাদেশ নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৪৪ রান সংগ্রহ করে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৮ রান করেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাছাড়া ফিফটি (৬১) পেয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ক্র্যাম্প পায়ে দারুণ এক ইনিংস খেলা রিয়াদ ম্লান হয়ে গেছেন দলের পরাজয়ে। অবশ্য সেঞ্চুরির পথে ক্র্যাম্প হয়েছিল বিজয়ী গুরবাজেরও।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৪৪/৮ (তানজিদ ১৯, সৌম্য ২৪, জাকির ৪, মিরাজ ৬৬, হৃদয় ৭, মাহমুদউল্লাহ ৯৮, জাকের ১, নাসুম ৫, শরিফুল ২*; ফারুকি ৭-০-৪১-০, গাজানফার ৭-০-৪৯-০, ওমারজাই ৭-০-৩৭-৪, নাবি ১০-২-৩৭-১ খারোটে ৯-০-৩৫-০, রাশিদ ১০-০-৪০-১)।

আফগানিস্তান: ৪৮.২ ওভারে ২৪৬/৫ (গুরবাজ ১০১, সেদিকউল্লাহ ১৪, রেহমাত ৮, শাহিদি ৬, ওমারজাই ৭০*, নাইব ১, নবি ৩৪*; শরিফুল ৮.২-০-৬১-০, নাহিদ ১০-১-৪০-২, নাসুম ১০-২-২৪-০, মুস্তাফিজ ৯-০-৫০-২, মিরাজ ১০-০-৫৬-১, সৌম্য ১-০-১২-০)।

ফল : ৫ উইকেটে জিতল আফগানিস্তান।