ঢাকা ০৯:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

‘চোলি কে পিছে’ অশ্লীল বলে সংসদে চলেছিল বিতর্ক

বিনোদন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৫৪:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৩৫৬ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জনসমাজের পক্ষে শোভন নয়, বলিউডের এমন অনেক কনটেন্ট নিয়েই বিতর্ক ওঠে। সেন্সর বোর্ডের কাঁচির তলায় চলে যায় ছবির নানা দৃশ্য়। মাঝে মাঝে তুমুল আপত্তি ওঠে গানের কথা নিয়েও। ১৯৯৩ সালেই ঠিক যেমনটা হয়েছিল। সেই বছর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল পরিচালক-প্রযোজক সুভাষ ঘাইয়ের ‘খল নায়ক’। মাধুরী দীক্ষিত আর সঞ্জয় দত্ত তখন রীতিমতো হিট ছবি, দুজনের সম্পর্ক নিয়ে অনেক জল্পনাও চলছে।

যদিও এই ছবিতে মাধুরী দীক্ষিতের বিপরীতে ছিলেন জ্যাকি শ্রফ। বিতর্ক এই জুটি ভাঙার খেলা নিয়ে কিন্তু তৈরি হয়নি। হয়েছিল ছবির ‘চোলি কে পিছে’ গান নিয়ে। সেই সময়ে দ্বৈত অর্থপূর্ণ এই গান জনসমক্ষে শোনা ছিল রীতিমতো এক সামাজিক অপরাধ। বাড়ির বাচ্চারা ভুল করে দু-এক কলি গেয়ে ফেললেই লাঞ্ছনার সীমা থাকত না!

যদিও মাধুরী দীক্ষিত আর নিনা গুপ্তার এই গান নিয়ে যত বিতর্ক তৈরি হয়েছে, ততই তা জনপ্রিয় হয়েছে। আনন্দ বক্সির কথায়, লক্ষ্মীকান্ত-পেয়ারেলালের সুরে এই গান তখন দেশে ঝড় তুলেছে। ইলা অরুণ আর অলকা ইয়াগনিকের কণ্ঠের জাদুতে মজেছে দেশ। আর চোখ টেনেছে সরোজ খানের অনন্যসাধারণ কোরিওগ্রাফি।

সুরের প্রতি ঝঙ্কারে নায়িকার পদচারণা, কোমরের বিভঙ্গের জ্বরে দেশ পুড়েছে। হলে টিকিট বিক্রি হয়েছে শুধু এই গানের চিত্রায়ণ দুচোখ ভরে দেখার জন্য লাইন দিয়ে। তাতেই কিন্তু বিষয়টি থেমে থাকেনি। সেটা ছিল ক্যাসেটের যুগ। শুধুমাত্র ‘চোলি কে পিছে’ শোনার জন্য খল নায়ক ছবির ক্যাসেট ১ সপ্তাহে ১ কোটির উপরে বিক্রি হয়!

সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, বিতর্ক কিন্তু ছবিতে গানটির উপস্থিতি বা গানের কথার উপরে কোনও ছাপ ফেলতে পারেনি। সেন্সর বোর্ডের কাঁচির হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিল ‘চোলি কে পিছে’। যদিও সেই সময়ে একযোগে ৩২টি সংগঠন এই গান নিয়ে আপত্তি জানায়। বিতর্ক পৌঁছে গিয়েছিল সংসদেও। শোনা যায়, সেই সময়ে এক অনুষ্ঠানে ইলা অরুণ গান গাইবেন, ‘চোলি কে পিছে’ গাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকবে বলে সোনিয়া গান্ধি সেই সভায় উপস্থিত থাকার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন।

কিন্তু, নাগরিক গান এবং তার চিত্রায়ণ গ্রহণ করেছে সাদরে। আজও বলিউডের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মাধুরী দীক্ষিত মঞ্চে নাচলে ‘চোলি কে পিছে’-র টিউন বেজে ওঠে। ২০০৮ সালে যখন ‘স্লামডগ মিলিওনেয়ার’ মুক্তি পায়, তখন এক সাক্ষাৎকারে ইলা অরুণ আর অলকা ইয়াগনিক দুজনেই বলেন যে ছবির ‘রিঙ্গা রিঙ্গা’ গানটি তাঁদের ‘চোলি কে পিছে’-র সাফল্য থেকে অনুপ্রাণিত। মাঝে অনেকটা সময় পেরিয়ে গিয়েছে, শ্লীলতা-অশ্লীলতা নিয়ে বদলে গিয়েছে সমাজের ভাবনা, এখন তাই ‘চোলি কে পিছে’ এক কিংবদন্তি!

যদিও ১৯৯৩ সালে ব্যাপারটা তা ছিল না। সেই বছর এই গান নিয়ে কিছু করে উঠতে পারেননি রক্ষণশীলরা। অথচ, ঠিক তার পরের বছর, ১৯৯৪ সালে যখন ‘খুদ্দার’ ছবিতে আলিশা চিনয়ের গলায় করিশমা কাপুরের পারফরম্যান্সে ‘সেক্সি সেক্সি মুঝে লোক বোলে’ শোনা গেল, নেমে এল খাঁড়া। বদলে দেওয়া হল গানের কথা। পালটে তা করা হল ‘বেবি বেবি মুঝে লোক বোলে’! দূরদর্শনের পর্দায় গানের এই দুটো ভার্সনই দেখেছেন-শুনেছেন, এমন নাগরিকের সংখ্যা বড় কম নয়!

নিউজটি শেয়ার করুন

‘চোলি কে পিছে’ অশ্লীল বলে সংসদে চলেছিল বিতর্ক

আপডেট সময় : ০১:৫৪:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

জনসমাজের পক্ষে শোভন নয়, বলিউডের এমন অনেক কনটেন্ট নিয়েই বিতর্ক ওঠে। সেন্সর বোর্ডের কাঁচির তলায় চলে যায় ছবির নানা দৃশ্য়। মাঝে মাঝে তুমুল আপত্তি ওঠে গানের কথা নিয়েও। ১৯৯৩ সালেই ঠিক যেমনটা হয়েছিল। সেই বছর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল পরিচালক-প্রযোজক সুভাষ ঘাইয়ের ‘খল নায়ক’। মাধুরী দীক্ষিত আর সঞ্জয় দত্ত তখন রীতিমতো হিট ছবি, দুজনের সম্পর্ক নিয়ে অনেক জল্পনাও চলছে।

যদিও এই ছবিতে মাধুরী দীক্ষিতের বিপরীতে ছিলেন জ্যাকি শ্রফ। বিতর্ক এই জুটি ভাঙার খেলা নিয়ে কিন্তু তৈরি হয়নি। হয়েছিল ছবির ‘চোলি কে পিছে’ গান নিয়ে। সেই সময়ে দ্বৈত অর্থপূর্ণ এই গান জনসমক্ষে শোনা ছিল রীতিমতো এক সামাজিক অপরাধ। বাড়ির বাচ্চারা ভুল করে দু-এক কলি গেয়ে ফেললেই লাঞ্ছনার সীমা থাকত না!

যদিও মাধুরী দীক্ষিত আর নিনা গুপ্তার এই গান নিয়ে যত বিতর্ক তৈরি হয়েছে, ততই তা জনপ্রিয় হয়েছে। আনন্দ বক্সির কথায়, লক্ষ্মীকান্ত-পেয়ারেলালের সুরে এই গান তখন দেশে ঝড় তুলেছে। ইলা অরুণ আর অলকা ইয়াগনিকের কণ্ঠের জাদুতে মজেছে দেশ। আর চোখ টেনেছে সরোজ খানের অনন্যসাধারণ কোরিওগ্রাফি।

সুরের প্রতি ঝঙ্কারে নায়িকার পদচারণা, কোমরের বিভঙ্গের জ্বরে দেশ পুড়েছে। হলে টিকিট বিক্রি হয়েছে শুধু এই গানের চিত্রায়ণ দুচোখ ভরে দেখার জন্য লাইন দিয়ে। তাতেই কিন্তু বিষয়টি থেমে থাকেনি। সেটা ছিল ক্যাসেটের যুগ। শুধুমাত্র ‘চোলি কে পিছে’ শোনার জন্য খল নায়ক ছবির ক্যাসেট ১ সপ্তাহে ১ কোটির উপরে বিক্রি হয়!

সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, বিতর্ক কিন্তু ছবিতে গানটির উপস্থিতি বা গানের কথার উপরে কোনও ছাপ ফেলতে পারেনি। সেন্সর বোর্ডের কাঁচির হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিল ‘চোলি কে পিছে’। যদিও সেই সময়ে একযোগে ৩২টি সংগঠন এই গান নিয়ে আপত্তি জানায়। বিতর্ক পৌঁছে গিয়েছিল সংসদেও। শোনা যায়, সেই সময়ে এক অনুষ্ঠানে ইলা অরুণ গান গাইবেন, ‘চোলি কে পিছে’ গাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকবে বলে সোনিয়া গান্ধি সেই সভায় উপস্থিত থাকার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন।

কিন্তু, নাগরিক গান এবং তার চিত্রায়ণ গ্রহণ করেছে সাদরে। আজও বলিউডের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মাধুরী দীক্ষিত মঞ্চে নাচলে ‘চোলি কে পিছে’-র টিউন বেজে ওঠে। ২০০৮ সালে যখন ‘স্লামডগ মিলিওনেয়ার’ মুক্তি পায়, তখন এক সাক্ষাৎকারে ইলা অরুণ আর অলকা ইয়াগনিক দুজনেই বলেন যে ছবির ‘রিঙ্গা রিঙ্গা’ গানটি তাঁদের ‘চোলি কে পিছে’-র সাফল্য থেকে অনুপ্রাণিত। মাঝে অনেকটা সময় পেরিয়ে গিয়েছে, শ্লীলতা-অশ্লীলতা নিয়ে বদলে গিয়েছে সমাজের ভাবনা, এখন তাই ‘চোলি কে পিছে’ এক কিংবদন্তি!

যদিও ১৯৯৩ সালে ব্যাপারটা তা ছিল না। সেই বছর এই গান নিয়ে কিছু করে উঠতে পারেননি রক্ষণশীলরা। অথচ, ঠিক তার পরের বছর, ১৯৯৪ সালে যখন ‘খুদ্দার’ ছবিতে আলিশা চিনয়ের গলায় করিশমা কাপুরের পারফরম্যান্সে ‘সেক্সি সেক্সি মুঝে লোক বোলে’ শোনা গেল, নেমে এল খাঁড়া। বদলে দেওয়া হল গানের কথা। পালটে তা করা হল ‘বেবি বেবি মুঝে লোক বোলে’! দূরদর্শনের পর্দায় গানের এই দুটো ভার্সনই দেখেছেন-শুনেছেন, এমন নাগরিকের সংখ্যা বড় কম নয়!