ইসরায়েল সমর্থকদের নিয়ে ফ্রান্সেও ঝামেলা
- আপডেট সময় : ০৩:৪৯:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪
- / ৩৪৪ বার পড়া হয়েছে
উয়েফা নেশনস লিগের গ্রুপ পর্বে ইসরায়েলের বিপক্ষে ম্যাচটির আয়োজন নিয়ে অনেক দিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে ফ্রান্সে। বিশেষ করে গাজায় ইসরায়েল-হামাস সহিংসতাকে ঘিরে বিশ্বের অনেক দেশেই ইসরায়েল তথা ইহুদি বিদ্বেষ দেখা গেছে। যে কারণে এ ম্যাচটি আয়োজন নিয়ে বাড়তি সতর্কতা ছিল আগে থেকেই।
সতর্কতা সত্ত্বেও গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ফ্রান্স-ইসরায়েল ম্যাচে দর্শকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ইসরায়েলের জাতীয় সংগীত বাজার সময় দুয়োধ্বনিও দিয়েছেন সমর্থকদের একাংশ। আর মূল ইভেন্ট অর্থাৎ ফ্রান্স-ইসরায়েলে হয়নি কিছুই, ম্যাচটি শেষ হয়েছে গোলশূন্য সমতায়।
গত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) আমস্টারডামে ইউরোপা লিগের ম্যাচে ইসরায়েলি ক্লাব ম্যাক্কাবি তেল আবিবের ইসরায়েলি সমর্থকদের ওপর ফিলিস্তিনপন্থীদের হামলার ঘটনা ঘটে। এর একদিন আগে পার্ক দে প্রিন্সেসে পিএসজি-আতলেতিকো মাদ্রিদ ম্যাচেও গ্যালারি থেকে ফিলিস্তিনপন্থী সমর্থকদের বিশাল ব্যানার প্রদর্শন করতে দেখা যায়।
সাম্প্রতিক এসব ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ফ্রান্স-ইসরায়েল ম্যাচকে কেন্দ্র করে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে ফ্রান্স কর্তৃপক্ষ। স্টেডিয়ামের আশপাশে ও গণপরিবহনে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে প্রায় ৪ হাজার নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল। এছাড়া প্রায় ৮০ হাজার ধারণ ক্ষমতার স্তাদ দ্য ফ্রান্স স্টেডিয়ামে দর্শক প্রবেশও সীমিত করা হয়েছিল।
গতকাল মোটে ১৬ হাজার ৬১১ দর্শক মাঠে উপস্থিত হয়েছিলেন, যা ১৯৯৮ সালে এ স্টেডিয়াম চালুর পর থেকে সর্বনিম্ন। এর মধ্যে নিরাপত্তা কর্মীদের সহায়তায় মাঠে শ’খানেক ইসরায়েল সমর্থক মাঠে যান খেলা দেখতে। যদিও দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের খেলা দেখতে যেতে অনুৎসাহিত করা হয়েছিল।
ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে যখন স্টেডিয়ামের বক্সে ইসরায়েলের জাতীয় সঙ্গীত বাজতে থাকে, তখন দর্শকদের একপ্রান্ত থেকে দুয়োধ্বনি আসতে থাকে। পাশাপাশি তাঁরা শিসও বাজাতে থাকেন। এসময় ইসরায়েলের সমর্থকেরা হলুদ বেলুন নাড়াতে থাকেন। তাঁরা উচ্চস্বরে বলতে থাকেন, ‘জিম্মিদের মুক্তি দাও।’মূলত তাঁরা হামাসের হাতে আটককৃত ইসরায়েলি সেনাদের মুক্তির দাবির কথা জানাচ্ছিলেন।
ম্যাচ শুরুর কিছু সময় যেতে না যেতেই ইসরায়েলের সমর্থকেরা যেদিকে বসেছিলেন, সেখানে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। কয়েক মিনিট ধরে চলে এ সংঘর্ষ। এ সময় কয়েকজনকে ঘুষি মারতে দেখা যায়। অনেকে ছুটাছুটিও করছিলেন। পরে নিরাপত্তা কর্মীরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। তবে ঠিক কী কারণে এ ঘটনা ঘটে, সেটি পরিষ্কার জানা যায়নি।
এদিকে এ ম্যাচের আগে প্যারিসের সেঁত দেনিস জেলার স্কয়ারে শতাধিক ইহুদি-বিরোধী বিক্ষোভকারী জড়ো হয়েছিলেন। সেখানে লেবানন-আলজেরিয়ার বাসিন্দারাও ছিলেন। তাঁদের হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা ছিল। গাজা যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা ইসরায়েলের বিপক্ষে ফ্রান্সের ম্যাচটি বাতিল করার জন্য আন্দোলন করছিলেন।
তাঁদের সঙ্গে নিয়ে আসা একাধিক ব্যানারের একটিতে লেখা ছিল, ‘আমরা গণহত্যাকারীদের সঙ্গে খেলতে পারি না।’ অবশ্য এমন বিক্ষোভ অনেকদিন ধরেই চলছিল ফ্রান্সে। বিক্ষোভের মাঝেও ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। ম্যাচ শেষে স্টেডিয়ামের দক্ষিণ অংশে ফিলিস্তিনের দুটি পতাকা প্রদর্শন করেন ফিলিস্তিনপন্থী সমর্থকেরা।
অবশ্য ম্যাচের কয়েকঘণ্টা আগে ফরাসি গণমাধ্যম বিএফএম টিভিকে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, ‘আমরা ফ্রান্স-সহ কোথাও ইহুদি বিরোধিতা করব না এবং তাঁদের ওপর কোনো সহিংসতা মেনে নেওয়া হবে না।’