ইরানে হিজাব পরতে না চাইলে দেওয়া হবে চিকিৎসা!
- আপডেট সময় : ০৫:০৩:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪
- / ৩৩৫ বার পড়া হয়েছে
ইরানে নারীরা হিজাব পরতে অনাগ্রহ দেখালে তাদের চিকিৎসার জন্য ক্লিনিক খোলার পরিকল্পনা করছে দেশটির সরকার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানায়, ইরানের নীতি ও নৈতিকতাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নারী ও পরিবার বিভাগের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
তেহরানে মন্ত্রণালয়ের সদরদপ্তরে নারী ও পরিবার বিভাগের প্রধান মেহেরি তালেবি দারেসতানি ক্লিনিক খোলার এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘হিজাব পরতে না চাইলে তাদের ক্লিনিকে বৈজ্ঞানিক ও মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা দেওয়া হবে।’
এ ঘোষণায় ক্ষোভ জানিয়েছে ইরানের নারী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইরানের সাংবাদিক সিমা সাবেত বলেন, ‘এই উদ্যোগ “লজ্জাজনক”। হিজাব পরতে অনিচ্ছুক নারীদের জন্য ক্লিনিক স্থাপনের পরিকল্পনা ভয়ংকর। এর মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীনদের মতাদর্শের সঙ্গে মিল না হলে সমাজ থেকে তাদের আলাদা করে ফেলার ব্যবস্থা হবে।’
ইরানি মানবাধিকার আইনজীবী হোসেন রাইসি বলেন, ‘হিজাব আইন ভঙ্গকারীদের জন্য যে ক্লিনিক খোলার কথা বলা হচ্ছে, এটি ইসলামিকও না আবার ইরানের আইনের সঙ্গেও যায় না। যে বিভাগ থেকে এই ঘোষণা এসেছে তা সব নারীর জন্য সতর্কতামূলক। এই বিভাগটি সরাসরি সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির অধীনে পরিচালিত হয়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইরানি নারী বলেন, ‘চিকিৎসাকেন্দ্র হবে না, এটি আসলে হবে কারাগার। আমরা আমাদের দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছি, ঠিকমতো বিদ্যুৎ পর্যন্ত পাচ্ছি না। আর সেখানে রাষ্ট্র একটি কাপড়ের টুকরার জন্য চিন্তিত। আমাদের আন্দোলন শুরু করতে হলে এখনই সবাইকে রাস্তায় আসতে হবে। না হলে আমাদের সবার জায়গা হবে কারাগারে।’
সম্প্রতি ইরানের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী অন্তর্বাস বাদে শরীরের সব কাপড় খুলে প্রতিবাদ জানান। তাঁর অভিযোগ, ঠিকভাবে হিজাব না পরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিতরা তাকে হেনস্তা করেছেন। এর প্রতিবাদে তিনি কাপড় খুলে প্রকাশ্যে হাঁটাহাঁটি করেন। ওই শিক্ষার্থীকে পরবর্তীতে একটি মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। যদিও তাঁর ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অনেকদিন ধরেই হিজাব আইন কার্যকরে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে ইরান সরকার। যারা আইন ভঙ্গ করছেন তাদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।