‘এই সরকারের তিন মাস হয়ে গেছে, আর বেশিদিন মানুষ সময় দেবে না’
- আপডেট সময় : ১১:০৬:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪
- / ৩৪৪ বার পড়া হয়েছে
অন্তর্বর্তী সরকারের তিন মাস পূর্ণ হয়ে গেছে, মানুষ আর বেশিদিন এই সরকারকে সময় দেবে না বলে জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। এসময় তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বলেন, দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা, দ্রব্যমূল্য, আয়-ব্যয়ে অসংগতি- এসব বিষয় নিয়ে মানুষ চিন্তিত বলেও এসময় উল্লেখ করেন জোনায়েদ সাকি।
আজ শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এই কথা বলেন জোনায়েদ সাকি।
এসময় তিনি বলেন, এখনো দেশে জানমালের নিরাপত্তা বিধান হয়নি। ‘এভাবে চলতে পারে না। বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিক, হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান, বাঙালি-চাকমা-মারমা-আদিবাসী, নারী-পুরুষ অথবা যে রাজনৈতিক বিশ্বাস কিংবা জীবনচর্চার হোক না কেন, প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক বলেন, ‘তিন মাস হয়ে গেছে। মানুষ আর বেশি দিন আপনাদের সময় দেবে না। অবিলম্বে সব ক্ষেত্রে মানুষ অগ্রগতি দেখতে চায়। জানমালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেন। দ্রব্যমূল্য কমান, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেন। আর সমস্ত রাজনৈতিক দল, শিক্ষার্থী, শ্রেণি-পেশার অংশীজনকে নিয়ে একসঙ্গে বসে এ রাষ্ট্রের রূপান্তর-সংস্কার, নতুন বন্দোবস্ত আর আগামী দিনের নির্বাচন, তার রোডম্যাপ ঘোষণা করেন।’
এটাই এখন দেশের মানুষ চায় উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘মানুষের চাওয়া অনুযায়ী আপনাদের চলতে হবে। এটা পরিষ্কার করে মনে রাখবেন। দেশের মানুষ আপনাদের সহায়তা করেছে, সমর্থন করেছে। নির্বাচন পর্যন্ত আপনাদের সমর্থন করব। কিন্তু জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে। না হলে জনগণ আপনাদের নিঃস্বার্থভাবে সমর্থন দেবে না।’
এসময় জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, ‘যারা আমাদের সন্তানদের হত্যা করেছে, ১৫ বছর খুন-গুম-লুটপাট করে বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে, এদের গ্রেপ্তার করে বিচার করতে হবে। আর অর্থনৈতিক সংকট, দ্রব্যমূল্য, আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সংগতি নেই, খেটে খাওয়া মানুষ বিপদে আছে—এসব সমস্যা সমাধান করা আপনাদের দায়িত্ব।’
এছাড়াও মাওলানা ভাসানীকে নিয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, দেশের মানুষ যখন বিপদে পড়েছে, জাতীয় সংকটে অথবা জাতীয় সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে গিয়েছে, তখন দিশা খোঁজা হয়েছে অতীতের আকাশে। কেননা সামনের দিকে এগোতে চাইলে পেছনের দিকেই তাকাতে হয়। এই জনপদের ইতিহাসে মাওলানা ভাসানী হচ্ছেন এমন একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি, এমন এক নেতৃত্ব, যিনি প্রতিটি সন্ধিক্ষণে জাতিকে সামনের দিশা দিয়েছেন।
এসময় জোনায়েদ সাকি শেখ হাসিনা সরকারের সমালোচনা করার পাশাপাশি ভারতের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘ভারতকে বলি বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন না। এ দেশের মানুষ রক্ত দিয়ে এ রাষ্ট্রের পত্তন করেছে। আপনারা আমাদের পাশে ছিলেন, ভারতের জনগণের কাছে আমরা এ কারণে কৃতজ্ঞতা রাখি।
কিন্তু বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব আমাদের স্বাধীনতা এই দেশের গোলামকে ক্ষমতায় রেখে যদি নস্যাৎ করতে চান, দেশের মানুষ সেটা মানবে না। দেশের মানুষ এ দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রস্তুত আছে। মাওলানা ভাসানী দিশা দিয়ে গিয়েছিলেন।’
এইদিন সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান, রাজনৈতিক পরিষদের নেতা হাসান মারুফ, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য দেওয়ান আব্দুর রশিদ, রাজনৈতিক পরিষদের নেতা মনির উদ্দিন, সম্পাদকমণ্ডলীর নেতা বাচ্চু ভূঁইয়া প্রমুখ।