খাদ্যে মূল্যস্ফীতি কমাতে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই সরকারের। কিছু পণ্যের শুল্ক কমানো আর ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের অভিযানেও সফলতা মিলছে না। এতে ক্রেতাদের মাঝে বাড়ছে ক্ষোভ। বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন প্রয়োগের পরামর্শ কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ--ক্যাবের। এদিকে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখায় গুরুত্ব দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পরই বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম কমেছিলো। তবে তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। পরে ডিম, সবজি, চাল, পেঁয়াজ, আলুর দামে অস্থির হয়েছে বাজার। দুই অংকে পৌঁছে যাওয়া খাদ্য মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের আমদানি শুল্ক কমায় সরকার। তবে বাজারে প্রভাব নেই। এমনকি তদারকির সুফলও মিলছে না। তাতে অসন্তোষ বেড়েছে ক্রেতার।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আসা এক ক্রেতা বলেন, ‘আমরা তো কোনো পরিবর্তন দেখছি না। আরও সব জিনিসের দাম বাড়তে দেখছি। আমরা যারা সাধারণ মানুষ সব জিনিসের দাম এখনও আমাদের নাগালের বাহিরে।’
সরকারি পদক্ষেপের প্রভাব না পড়ায় গত বুধবার পিকেএসএফের এক অনুষ্ঠানে আক্ষেপ করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। সেদিন তিনি বলেন, ‘সব শুল্ক আমরা কমিয়ে দিলাম। কিন্তু দাম কমে না। আমরা চেষ্টা করছি।’ শুধু জরিমানায় বাজার নিয়ন্ত্রণ কঠিন বলে মনে করে ভোক্তাদের সংগঠন ক্যাব। এজন্য কঠোর আইন প্রয়োগ চায় সংগঠনটি।
ক্যাবের সহ সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘শুধু জরিমানা কিন্তু একক শাস্তি নয়। এর বাহিরে কারাদণ্ডের বিধানগুলোও কিন্তু চালু করা যেতে পারে। আইনের যে বিধান যেভাবে আছে, সেভাবেই যদি প্রতিপালন করা হয় তাহলে হয়ত আজকে এই যে দাম বাড়ানোর বা অতি মুনাফা লাভের যে মনোভাব, যেটার সামাজিক সংক্রমন ঘটেছে এটা এতদুর গড়াতো না।’ পণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
অর্থনীতিবিদ সেলিম রায়হান বলেন, ‘এক মাথা থেকে আরেক মাথায় নানা ভাবে পণ্য পরিবহন হয়। সেখানে কিন্তু আমরা শুনছি বিভিন্ন সময় যে পুলিশের যে উপস্থিতি বা নিরাপত্তা যারা নিশ্চিত করে, সেই উপস্থিতি কিন্তু পর্যাপ্ত নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাদেরকে এক সাথে কাজ করতে হবে।’
২০২৩ সালের শুরু থেকেই সার্বিক মূল্যস্ফীতি নয় শতাংশের ওপরে। যার ধারাবাহিক প্রভাব পড়েছে নিম্ন ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের ওপর।