ঢাকা ০৭:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

শ্রীলঙ্কায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল দিশানায়েকের জোট

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:০২:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৩৪১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শ্রীলঙ্কায় দুমাস আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পেয়েছিলেন অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েক। এবার আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনেও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে তাঁর দল ‘জনতা বিমুক্তি পেরুমুনা’ (জেভিপি)-র নেতৃত্বাধীন বামপন্থী জোট ‘ন্যাশনাল পিপল্স পাওয়ার’ (এনপিপি)।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর পরশুরু হয় গণনা। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বামপন্থী এনপিপি ১৩৭ টিতে জয় পেয়েছে। প্রায় ৬২ শতাংশ ভোট পেয়ে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে তারা।

প্রতিবেদন বলছে, ২০২০ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে মাত তিনটি আসনে জেতা এনপিপি এবার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। উত্তরের জাফনা থেকে পূর্বের বাত্তিকালোয়া পর্যন্ত উপকূলবর্তী এলাকায় ভালো ফল করতে চলেছে তামিল জনগোষ্ঠীর দলগুলো। শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যেই সম্পূর্ণ ফলাফল জানা যেতে পারে।

শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের আসন সংখ্যা ২২৫। এর মধ্যে ১৯৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। বাকি ২৯টি আসন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতের ভিত্তিতে বণ্টন করা হয়। অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১১৩টি আসন।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৪২.৩ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতেছিলেন অনূঢ়া। ৩২.৭ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন ‘সমাগি জন বলবেগয়া’ (এসজেবি)-র নেতা সাজিথ প্রেমদাসা। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি)-র প্রধান রনিল বিক্রমসিংহ ১৭.২ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় হন।

এবারের পার্লামেন্ট ভোটে রনিলের ইউএনপি কয়েকটি ছোট দলের সঙ্গে নিউ ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) গড়ে লড়তে নেমেছিল। পাশাপাশি দুই সাবেক প্রেসিডেন্টগোতাবায়া রাজাপাকসে এবং তাঁর দাদা মাহিন্দার নেতৃত্বাধীন ‘শ্রীলঙ্কা পড়ুজানা পেরুমুনা’ (এসএলপিপি) ভোটে অংশ নিয়েছিল।

ফলাফল বলছে, অনূঢ়ার এনপিপি ৬২ শতাংশের বেশি শ্রীলঙ্কাবাসীর সমর্থন নিয়ে পার্লামেন্টে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠ হতে চলেছে। সাজিথের এসজেবি ১৮ শতাংশ এবং রনিলের এনডিএফ যথাক্রমে ১৮ এবং ৫ শতাংশ ভোট নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ভোটপ্রাপ্তির হিসাবে রাজপাকশের পরিবারের দল এসএলপিপি চতুর্থ।

শ্রীলঙ্কায় এবারের ভোটে ৮৮৮০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ভোটারের সংখ্যা পৌনে দুই কোটির বেশি। বৃহস্পতিবার প্রায় ৬৫ শতাংশ ভোট পড়েছিল।

২০২২ সালের জুলাই মাসে অর্থনৈতিক সঙ্কটের আবহে প্রবল জনবিক্ষোভের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছাড়েন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা এবং তাঁর ভাই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া। পার্লামেন্ট সদস্যদের ভোটাভুটিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছিলেন রনিল। কিন্তু যে অর্থনৈতিক সঙ্কট রাজাপাকশের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভকে উসকে দিয়েছিল, তা খুব বেশি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি রনিল।

রনিলের নেতৃত্বে অনাস্থা জ্ঞাপন করে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ৫৬ বছরের অনূঢ়াকে লঙ্কাবাসী প্রেসিডেন্ট হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট হয়েই পার্লামেন্ট ভেঙে নতুন করে নির্বাচনে সক্রিয় হন তিনি। ফল বলছে সেখানেও সাফল্য মিলল তাঁর।

নিউজটি শেয়ার করুন

শ্রীলঙ্কায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল দিশানায়েকের জোট

আপডেট সময় : ০৪:০২:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

শ্রীলঙ্কায় দুমাস আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পেয়েছিলেন অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েক। এবার আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনেও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে তাঁর দল ‘জনতা বিমুক্তি পেরুমুনা’ (জেভিপি)-র নেতৃত্বাধীন বামপন্থী জোট ‘ন্যাশনাল পিপল্স পাওয়ার’ (এনপিপি)।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর পরশুরু হয় গণনা। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বামপন্থী এনপিপি ১৩৭ টিতে জয় পেয়েছে। প্রায় ৬২ শতাংশ ভোট পেয়ে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে তারা।

প্রতিবেদন বলছে, ২০২০ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে মাত তিনটি আসনে জেতা এনপিপি এবার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। উত্তরের জাফনা থেকে পূর্বের বাত্তিকালোয়া পর্যন্ত উপকূলবর্তী এলাকায় ভালো ফল করতে চলেছে তামিল জনগোষ্ঠীর দলগুলো। শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যেই সম্পূর্ণ ফলাফল জানা যেতে পারে।

শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের আসন সংখ্যা ২২৫। এর মধ্যে ১৯৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। বাকি ২৯টি আসন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতের ভিত্তিতে বণ্টন করা হয়। অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১১৩টি আসন।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৪২.৩ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতেছিলেন অনূঢ়া। ৩২.৭ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন ‘সমাগি জন বলবেগয়া’ (এসজেবি)-র নেতা সাজিথ প্রেমদাসা। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি)-র প্রধান রনিল বিক্রমসিংহ ১৭.২ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় হন।

এবারের পার্লামেন্ট ভোটে রনিলের ইউএনপি কয়েকটি ছোট দলের সঙ্গে নিউ ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) গড়ে লড়তে নেমেছিল। পাশাপাশি দুই সাবেক প্রেসিডেন্টগোতাবায়া রাজাপাকসে এবং তাঁর দাদা মাহিন্দার নেতৃত্বাধীন ‘শ্রীলঙ্কা পড়ুজানা পেরুমুনা’ (এসএলপিপি) ভোটে অংশ নিয়েছিল।

ফলাফল বলছে, অনূঢ়ার এনপিপি ৬২ শতাংশের বেশি শ্রীলঙ্কাবাসীর সমর্থন নিয়ে পার্লামেন্টে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠ হতে চলেছে। সাজিথের এসজেবি ১৮ শতাংশ এবং রনিলের এনডিএফ যথাক্রমে ১৮ এবং ৫ শতাংশ ভোট নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ভোটপ্রাপ্তির হিসাবে রাজপাকশের পরিবারের দল এসএলপিপি চতুর্থ।

শ্রীলঙ্কায় এবারের ভোটে ৮৮৮০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ভোটারের সংখ্যা পৌনে দুই কোটির বেশি। বৃহস্পতিবার প্রায় ৬৫ শতাংশ ভোট পড়েছিল।

২০২২ সালের জুলাই মাসে অর্থনৈতিক সঙ্কটের আবহে প্রবল জনবিক্ষোভের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছাড়েন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা এবং তাঁর ভাই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া। পার্লামেন্ট সদস্যদের ভোটাভুটিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছিলেন রনিল। কিন্তু যে অর্থনৈতিক সঙ্কট রাজাপাকশের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভকে উসকে দিয়েছিল, তা খুব বেশি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি রনিল।

রনিলের নেতৃত্বে অনাস্থা জ্ঞাপন করে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ৫৬ বছরের অনূঢ়াকে লঙ্কাবাসী প্রেসিডেন্ট হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট হয়েই পার্লামেন্ট ভেঙে নতুন করে নির্বাচনে সক্রিয় হন তিনি। ফল বলছে সেখানেও সাফল্য মিলল তাঁর।