চলতি অর্থবছরেই রেকর্ড উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার দিকে এগোতে থাকা ভারত গত মাসে রপ্তানি করেছে প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ চাল। অক্টোবরে চাল রপ্তানি থেকে ১০০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ আয় করেছে দেশটি, যা আগের বছরের তুলনায় ৮৬ শতাংশ বেশি।
চীনকে টপকে এবার চাল উৎপাদনেও বিশ্বের শীর্ষ অবস্থানটি স্পর্শ করার পথে ভারত। কৃষির জন্য অনুকূল বৃষ্টি পাওয়ায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের খরিফ মৌসুমে, অর্থাৎ চলতি বছরের এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সাত মাসে প্রায় ১২ কোটি টন চাল উৎপাদনের করতে পারে দেশটি।
সরকারি গুদামে চাহিদার অতিরিক্ত মজুত বাড়তে থাকার মধ্যে নভেম্বরের শুরুতেই ভারতীয় কৃষি মন্ত্রণালয় জানায়, গেল বছরের তুলনায় এ বছর খরিফ মৌসুমে প্রায় ৭০ লাখ টন অতিরিক্ত চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখছে দেশটি। ভারতের রুটির ঝুড়ি খ্যাত পাঞ্জাব-হরিয়ানা প্রদেশসহ সারা দেশেই চলছে প্রধান এ খরিফ শস্য কাটা ও সংগ্রহের কাজ। এরমধ্যেই নতুন খবর, গেল মাসে চাল রপ্তানিতেও রেকর্ড করেছে দেশটি।
ভারতের শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে চাল রপ্তানি বাবদ ১০৫ কোটি ডলারের বেশি অর্থ আয় করেছে নয়াদিল্লি। এক বছর আগে একই সময়ের তুলনায় এ অংক প্রায় ৮৬ শতাংশ বেশি। এক মাসের ব্যবধানেও দেশটিতে চাল উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে গেলো মাসে। বিশ্ববাজারে চাল রপ্তানিতে বিধিনিষেধ শিথিলে ভারত সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়ার পর মিলছে এ সুফল।
চাল রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে গেল দু'মাসে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে নয়া দিল্লি। সেপ্টেম্বরে নন-বাসমতি সাদা চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা এবং ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক প্রত্যাহার করে। এছাড়া আরও তিন ধরনের চালে রপ্তানি শুল্ক অর্ধেকে নামিয়ে আনে। পরবর্তীতে অক্টোবরে সে শুল্ক এবং টনপ্রতি চালের ধার্যকৃত ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ৪৯০ ডলার বাতিল করা হয়।
সব মিলিয়ে অক্টোবরে রপ্তানি লক্ষণীয় মাত্রায় বেড়ে যাওয়ায় পুরো খরিফ মৌসুমে ৬১৭ কোটি ডলারের চাল রপ্তানি করেছে ভারত যা আগের বছরের তুলনায় পাঁচ শতাংশের বেশি। অথচ চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারতের সামগ্রিক চাল রপ্তানির পরিমাণ ছিল বিগত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় প্রায় সাড়ে তিন শতাংশ কম।
সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম স্থিতিশীল রাখতে গেলো বছর চাল রপ্তানিতে ব্যাপক বিধিনিষেধ ছিল ভারতের বাজারে। যার প্রভাবে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ব্যাপক বেড়ে যায় প্রতিবেশি বাংলাদেশ-নেপালসহ ভারতীয় নন-বাসমতি চাল আমদানিনির্ভর বিভিন্ন দেশে।