পরিবেশ ধ্বংসের জন্য দায়ী উন্নত বিশ্ব ও তাদের রাষ্ট্রপ্রধানদের বিরুদ্ধে এবার বিশ্বমঞ্চে বড়সড় বিক্ষোভ করলেন হাজারো পরিবেশকর্মী। সেখানে অংশ নিয়ে পরিবেশকর্মীরা জলবায়ু পরিবর্তন ও গাজায় গণহত্যার জন্য বিশ্বমোড়লদের দায়ী করেন। পরিবেশ রক্ষায় এই সম্মেলন কতটুকু কার্যকর, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিভিন্ন দেশের পরিবেশকর্মী।
বিশ্বমোড়লদের সাফ কথা, পরিবেশ ধ্বংসের বিরুদ্ধে জলবায়ু সম্মেলনস্থলে বিক্ষোভ করা যাবে কিন্তু দেয়া যাবে না স্লোগান, করা যাবে না কোনো শব্দ। তাই বিশ্বের দুই'শর ও বেশি দেশ থেকে আসা হাজার শত শত কর্মী এমন ব্যতিক্রমী শব্দ ও হাতে তুড়ি দিয়ে নীরব প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন আজারবাইজানের বাকু অলিম্পিক স্টেডিয়ামের সম্মেলনস্থলে।
কপ টুয়েন্টি নাইনের এবারের আয়োজনে লিডার সামিট চলাকালীন আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতি কোনো পরিবেশকর্মীকে ভিতরে বিক্ষোভ করার অনুমতি দেয়নি।
তাই পরিবেশ ধ্বংসের জন্য দায়ী রাষ্ট্রের বিশ্ব মোড়লরা বাকু ছাড়ার পর জলবায়ু সম্মেলনে এমন আয়োজনের সুযোগ পান ক্ষুব্ধ তারুণ্য। যেখানে এক কাতারে অংশ নেন দক্ষিণ এশিয়ার নদী ভাঙনের শিকার তরুণ থেকে শুরু করে গণহত্যায় গাজার ঘর ও স্বজনহারারা।
শুরুতে কাস্পিয়ান হলরুমের ভিতরে সমাবেশের মাধ্যমে দাবি দাওয়া তুলে ধরে পরিবেশকর্মীরা নীরব মানববন্ধনে অংশ নেন সম্মেলনস্থলের মূল চত্বরে। এসময় তারা বন্যার ফেস্টুনে বিশ্বজুড়ে কার্বন গ্যাসসহ পরিবেশবিরোধী জ্বালানি বন্ধের জোরালো দাবি তোলেন ।
বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, ‘কপ তার লক্ষ্যে যেতে পারছে না। আমরা যখনই ভয়েস তুলছি তখনই আমাদের প্রেসিডেন্সি থেকে থামিয়ে দেয়া হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে যেকোনো অ্যাকশনে আমরা স্লোগান দিতে পারবো না।’
বিক্ষোভে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের পরিবেশকর্মীরা বলেন, উন্নত বিশ্ব কার্বন নিঃশর্ত না কমিয়ে উল্টো কার্বন বাণিজ্যের দিকে ঝুঁকছে। যা বিশ্বকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
পরিবেশকর্মীদের একজন বলেন, ‘যেসমস্ত জায়গাতে অর্থায়ন দরকার, যেসমস্ত জায়গা থেকে পৃথিবীকে সরে আসা দরকার সেসমস্ত কিছুই হচ্ছে না।’
এসময় গাঁজার গণহত্যায়ও পরিবেশবিরোধী মারণাস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে জানিয়ে এর বিরুদ্ধে নীরব বিশ্বকে সরব হওয়ার আহ্বান জানান।
জলবায়ু সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর সাথে বিশ্ব নেতারা বারবার বিশ্বাস ঘাতকতা করছে বলেও জানান বিভিন্ন দেশ থেকে আসা পরিবেশকর্মীরা।
রোববার বিরতি দিয়ে সোমবার থেকে শুরু হবে বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীদের অংশগ্রহণে জলবায়ু সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্ব।