ঢাকা ০৪:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

রাষ্ট্র সংস্কারই সরকারের চ্যালেঞ্জ, ধৈর্য ধরার আহ্বান ড. ইউনূসের

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০১:৪৮:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৩৪০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সামাজিক ন্যায়বিচার ও রাষ্ট্র সংস্কারই অন্তর্বর্তী সরকারের মূল চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, সংস্কারের জন্য সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। শনিবার ( ১৬ নভেম্বর) প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে বে অব বেঙ্গল কনভারসেশনে এসব কথা বলেন।

সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের (সিজিএস) আয়োজিত আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক সম্মেলন ‘বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন (বিওবিসি) ২০২৪’-এর তৃতীয় আসরে আজ শনিবার এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলন চলবে আগামী ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত। এবারের থিম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘এ ফ্র্যাকচারড ওয়ার্ল্ড’।

উদ্বোধনী বক্তার বক্তব্যে ড. ইউনূস বলেন, ‘সামাজিক ন্যায়বিচার ও রাষ্ট্র সংস্কারই সরকারের চ্যালেঞ্জ, সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও বাক স্বাধীনতার।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা এমন এক সময়ে পার করছি, যেখানে চ্যালেঞ্জ আর জটিলতা আমাদের প্রতিটি দিক থেকে ঘিরে ধরেছে। অর্থনৈতিক বৈষম্য, সামাজিক অবিচার, কিংবা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান হুমকি—সবই আমাদের সামনে একেকটি বড় বাধা। তবুও বাংলাদেশ বারবার দেখিয়েছে কীভাবে প্রতিকূল পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করতে হয়।

আগত অতিথিদের নবগঠিত বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা মাত্র ১০০ দিন আগে একটি ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছিলাম। এটি ছিল ছাত্র-জনতার একটি বিপ্লব, যা গত ১৬ বছর ধরে শাসন করা এক ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাত করেছে। এর জন্য এক হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী, শ্রমিক এবং সাধারণ প্রতিবাদকারীকে প্রাণ দিতে হয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ২০ হাজার ছাত্র-জনতা। এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মাধ্যমে আসুন আমরা তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করি—যারা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, যারা চিরদিনের জন্য তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, দৃষ্টিশক্তি এবং শারীরিক সক্ষমতা হারিয়েছেন এবং যারা এখনও জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিদেশি অতিথিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা যখন ঢাকার রাস্তায় হাঁটবেন, তখন রাস্তাগুলোর দেয়ালে তরুণদের আবেগ এবং আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে আঁকা রঙিন চিত্রকর্মগুলি দেখে মুগ্ধ হবেন। এই চিত্রকর্মগুলো দেখলে যে কেউ তরুণদের সৃজনশীলতার শক্তিতে মুগ্ধ না হয়ে পারবেন না। এখানে কোনো ডিজাইনার ছিল না, কোনো কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা ছিল না, এবং কেউ এর জন্য তহবিল দেয়নি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ আজ পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছে। মানবাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ। তাই এ বছরের সংলাপের থিম ‘এক বিভক্ত পৃথিবী’। আমি বিশ্বাস করি, প্রতিটি সমস্যার সমাধান রয়েছে, যদি আমরা ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যাই।

সবশেষে সম্মেলনের আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে সংলাপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধান উপদেষ্টা। সম্মেলনে ৮০টিরও বেশি দেশ থেকে ২০০ জনের বেশি আলোচক, ৩০০ জন প্রতিনিধি এবং ৮০০ জন অংশ নিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

রাষ্ট্র সংস্কারই সরকারের চ্যালেঞ্জ, ধৈর্য ধরার আহ্বান ড. ইউনূসের

আপডেট সময় : ০১:৪৮:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

সামাজিক ন্যায়বিচার ও রাষ্ট্র সংস্কারই অন্তর্বর্তী সরকারের মূল চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, সংস্কারের জন্য সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। শনিবার ( ১৬ নভেম্বর) প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে বে অব বেঙ্গল কনভারসেশনে এসব কথা বলেন।

সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের (সিজিএস) আয়োজিত আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক সম্মেলন ‘বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন (বিওবিসি) ২০২৪’-এর তৃতীয় আসরে আজ শনিবার এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলন চলবে আগামী ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত। এবারের থিম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘এ ফ্র্যাকচারড ওয়ার্ল্ড’।

উদ্বোধনী বক্তার বক্তব্যে ড. ইউনূস বলেন, ‘সামাজিক ন্যায়বিচার ও রাষ্ট্র সংস্কারই সরকারের চ্যালেঞ্জ, সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও বাক স্বাধীনতার।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা এমন এক সময়ে পার করছি, যেখানে চ্যালেঞ্জ আর জটিলতা আমাদের প্রতিটি দিক থেকে ঘিরে ধরেছে। অর্থনৈতিক বৈষম্য, সামাজিক অবিচার, কিংবা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান হুমকি—সবই আমাদের সামনে একেকটি বড় বাধা। তবুও বাংলাদেশ বারবার দেখিয়েছে কীভাবে প্রতিকূল পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করতে হয়।

আগত অতিথিদের নবগঠিত বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা মাত্র ১০০ দিন আগে একটি ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছিলাম। এটি ছিল ছাত্র-জনতার একটি বিপ্লব, যা গত ১৬ বছর ধরে শাসন করা এক ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাত করেছে। এর জন্য এক হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী, শ্রমিক এবং সাধারণ প্রতিবাদকারীকে প্রাণ দিতে হয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ২০ হাজার ছাত্র-জনতা। এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মাধ্যমে আসুন আমরা তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করি—যারা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, যারা চিরদিনের জন্য তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, দৃষ্টিশক্তি এবং শারীরিক সক্ষমতা হারিয়েছেন এবং যারা এখনও জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিদেশি অতিথিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা যখন ঢাকার রাস্তায় হাঁটবেন, তখন রাস্তাগুলোর দেয়ালে তরুণদের আবেগ এবং আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে আঁকা রঙিন চিত্রকর্মগুলি দেখে মুগ্ধ হবেন। এই চিত্রকর্মগুলো দেখলে যে কেউ তরুণদের সৃজনশীলতার শক্তিতে মুগ্ধ না হয়ে পারবেন না। এখানে কোনো ডিজাইনার ছিল না, কোনো কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা ছিল না, এবং কেউ এর জন্য তহবিল দেয়নি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ আজ পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছে। মানবাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ। তাই এ বছরের সংলাপের থিম ‘এক বিভক্ত পৃথিবী’। আমি বিশ্বাস করি, প্রতিটি সমস্যার সমাধান রয়েছে, যদি আমরা ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যাই।

সবশেষে সম্মেলনের আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে সংলাপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধান উপদেষ্টা। সম্মেলনে ৮০টিরও বেশি দেশ থেকে ২০০ জনের বেশি আলোচক, ৩০০ জন প্রতিনিধি এবং ৮০০ জন অংশ নিয়েছেন।