সারা দেশে ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা ৫০ লাখ। যার সবগুলোই তৈরি হয়েছে অবৈজ্ঞানিকভাবে। আর এর প্রতিটি চালকও অবৈধ। নতুন করে যাতে আর তৈরি হতে না পারে তাই এর উৎস বন্ধের পাশাপাশি সরকারিভাবে উদ্যোগ নিয়ে বৈজ্ঞানিক উপায়ে এসব বাহন সংস্কারের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তিন চাকার রিকশার সঙ্গে লাগানো হয়েছে ব্যাটারি। যাত্রী তোলা হচ্ছে দুই থেকে চারজন পর্যন্ত। অথচ এই রিকশার নিয়ন্ত্রণে যে ব্রেক লাগানো হয়েছে, তার দাম মাত্র ২২ টাকা। এসব রিকশার গতি যে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, তা স্বীকারও করলেন এর চালকেরা।
চালকেরা জানান, সাধারণ যে তিন চাকার রিকশাগুলো রয়েছে, সেগুলোতেই ব্যাটারি লাগিয়ে অটোরিকশা বানানো হয়। এই রিকশার নিয়ন্ত্রণে যে ব্রেক লাগানো হয়েছে, তার দাম মাত্র ২২ টাকা। এত নিম্নমানের ব্রেক খুব অল্প দিনই কার্যকর থাকে। তারপর দেখা দেয় নানা জটিলতা। ব্রেত ঠিকমতো কাজ না করায় এই অটোরিকশায় দুর্ঘটনাও বেশি ঘটে।
রিকশা গ্যারেজ মালিকেরা জানান, আগে চীন থেকে এসব ব্যাটারি এলেও এখন এগুলো তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশে। কারণ ক্যারিং খরচ বেশি পড়ে যায়। ঢাকার দেড় শতাধিক কারখানায় অবৈজ্ঞানিকভাবে তৈরি করা হচ্ছে এসব ঝুঁকিপূর্ণ রিকশা। যারা এসব রিকশা বানাচ্ছেন তাদেরও নেই কোনো কারিগরি দক্ষতা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব রিকশা যারা বানাচ্ছেন আর যারা চালাচ্ছেন তারা কেউই প্রশিক্ষিত নয়। এ সকল বাহন যাত্রীদের জন্যে চরম ঝুঁকিপূর্ণ।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, সারা দেশে ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা ৫০ লাখ। যার সবগুলোই তৈরি হয়েছে অবৈজ্ঞানিকভাবে। এ অটোরিকশাগুলো যে পরিমাণে ডাম্পিং হচ্ছে তার চেয়ে অনেক বেশি উৎপাদন হচ্ছে। এ কারণে উৎপাদনের জায়গাটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে অটোরিকশার দৌরাত্ম্য অনেকটাই কমানো সম্ভব। কারখানা বন্ধের পাশাপাশি মূল সড়কে এসব রিকশা চলাচল বন্ধ করতে হবে।
সড়কে যে পরিমাণ ব্যাটারিচালিত রিকশা চলছে, তাতে পুরোপুরি বন্ধ করার সুযোগ নেই। তাই এগুলোকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বৈজ্ঞানিক উপায়ে সংস্কার করা জরুরি বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।