সংরক্ষণের অভাবে অযত্নে অবহেলায় হারিয়ে যাচ্ছে কৃষক-শ্রমিক, মেহনতি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা মওলানা ভাসানীর স্মৃতিচিহ্নগুলো। পরিবারের সদস্যদের দাবি বিভিন্ন দেশে ভাসানীকে নিয়ে চর্চা করা হলেও নিজ দেশেই উপেক্ষিত মজলুম জননেতা। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে উপমহাদেশের নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের পক্ষে আপোষহীন নেতৃত্ব দানকারী মহান এ নেতার ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
সাম্রাজ্যবাদ, ঔপনিবেশবাদ ও আধিপত্যবাদ বিরোধী সংগ্রামের প্রবাদ পুরুষ মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। বিগত দিনে ক্ষমতায় থাকা সব সরকারই মহান এ নেতার প্রতি ছিলেন উদাসীন। এমনকি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে ভাসানীর হাতে গড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বৃহত্তর স্বার্থে তার স্মৃতিচিহ্ন রক্ষা, জাতীয় নেতার মর্যাদা ও রাষ্ট্রীয়ভাবে মৃত্যুবার্ষিকী পালনের দাবি ভাসানী ফাউন্ডেশন ও স্থানীয়দের।
কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষের অধিকার আদায় ও দেশ মাতৃকার মুক্তির আলোকবর্তিকা হলেও মৃত্যুর পর তিনিই যেন হারাতে বসেছেন। সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে তার স্মৃতিচিহ্নগুলো। চীনের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে উপহার পাওয়া ট্রাক্টর, ওভার কোট, টাইপ রাইটারসহ অনেক স্মারকই নষ্ট হওয়ার পথে। মাওলানা ভাসানী রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে জাদুঘরে সংরক্ষণের চেষ্টা করা হলেও তার উপরেও জমেছে ধূলার আস্তর।
দেশ ও জাতির জন্য মাওলানা ভাসানী নিজেকে উৎসর্গ করলেও তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে এখন পর্যন্ত নেই জোরালো কোনো পদক্ষেপ। স্বপ্ন দেখেছিলেন সন্তোষে নিজ এলাকায় একটি ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় কাম কমপ্লেক্স গড়ে তুলবেন যেখানে স্কুল-কলেজও থাকবে। স্বল্প পরিসরে স্কুলের কার্যক্রম শুরু হলেও পরে তাও মুথ থুবড়ে পড়ে। এছাড়া ভাসানীর হাতে গড়া অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, ‘ভাসানী একজন অবিসংবাদিত নাম। ভারতীয় উপমহাদেশে শুধু না সমস্ত বিশ্বে ভাসানীর নাম চর্চা হয়।’
আরেকজন বলেন, ‘ভাসানীর ইতিহাস গুলো মানুষ জানতে পারে তার একটা ব্যবস্থা করা।’
সাম্যের দেশ ও বিশ্ব গড়ে তুলতে বৈষম্যবিরোধী, স্বাধীনতা ও মানব কল্যাণের পক্ষে কাজ করেছেন ভাসানী। শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের নেতা ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখার পরও রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে সম্মান জানানো হয়নি। জাতীয় নেতার মর্যাদার পাশাপাশি, মাওলানা ভাসানী মৃত্যুবার্ষিকী রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের দাবি বিশিষ্টজনদের।
মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশন মহাসচিব মাহমুদুল হক সানু বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে গণতান্ত্রিক প্রতিটা আন্দোলনে তার যে অবস্থান তা তুলে ধরা হোক। জাতীয়ভাবে তুলে ধরলে আমাদের দেশের মানুষেরই কল্যাণ হবে। দাবি করি যে মওলানা ভাসানীর মৃত্যু বার্ষিকী রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হোক।’
বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি জাতীয় আন্দোলনে মাওলানা ভাসানীর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।