জি টোয়েন্টি সম্মেলনে তিন বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশ্ব নেতারা
- আপডেট সময় : ০৫:৫৪:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪
- / ৩৩৭ বার পড়া হয়েছে
দুই দিনের জি টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের আলোচনায় উঠে এসেছে দারিদ্র্য ও ক্ষুধা থেকে বিশ্বকে মুক্ত করার উপায়। পাশাপাশি গুরুত্ব পাচ্ছে জলবায়ু সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন ও গাজা ইসরাইল যুদ্ধের লাগাম টেনে ধরার কৌশল। দরিদ্র দেশগুলোর জন্য ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরিওতে অনুষ্ঠিত বিশ্বের বড় ২০টি অর্থনীতির দেশগুলোর সম্মেলনে অংশ নেননি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
একটি ন্যায়সংগত ও টেকসই বিশ্ব গঠনের লক্ষ্য নিয়ে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে একত্র হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির ২০টি দেশ। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভার আমন্ত্রণে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, কানাডার সরকারপ্রধান অংশ নেন। তবে এবার জি টোয়েন্টি সম্মেলনে যোগ দেননি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
দুই দিনের এই শীর্ষ সম্মেলনে তিনটি বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছেন জি টোয়েন্টি নেতারা। দারিদ্র ও ক্ষুধা থেকে বিশ্বকে মুক্ত করা, বিশ্বব্যাপী শাসনব্যবস্থার সংস্কার ও টেকসই উন্নয়ন চান তারা। এছাড়া, বিশ্বজুড়ে চলমান যুদ্ধের লাগাম টেনে ধরা, শুল্কনীতি, জলবায়ু পরিবর্তন ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার ইস্যুগুলো উঠে আসে।
বিশ্বজুড়ে বৈষম্য দূর করতে আন্তর্জাতিক কর সহযোগিতার ওপর জোর দেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট সিলভা। তার মতে, অতি-ধনী ব্যক্তিদের সম্পদের ওপর কর আরোপ করে দারিদ্র ও বৈষম্য দূর করা সম্ভব।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের লুলা দা সিলভা বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে বৈষম্য কমাতে আন্তর্জাতিক কর সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জি টোয়েন্টির আর্থিক ট্র্যাকের এক প্রতিবেদন বলছে, অতি-ধনী ব্যক্তিদের সম্পদের ওপর ২ শতাংশ কর আরোপ করলে প্রতি বছর প্রায় ২৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্পদ তৈরি হবে। যা বৈষম্য ও সংকট মোকাবিলায় বিনিয়োগ করা যাবে। এছাড়া পরিবেশগত চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করা সম্ভব।’
বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর জন্য বিশ্বব্যাংকের তহবিলে রেকর্ড ৪শ’ কোটি ডলার অনুদানের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেন ও ইসরাইলের প্রতি সমর্থন জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘এটিই আমার শেষ জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন। আমরা একসঙ্গে অনেক অগ্রগতি করেছি। আমার চাওয়া এই প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। টেকসই উন্নয়নের নতুন যুগের সূচনা করতে এই গ্রুপের বিলিয়ন থেকে ট্রিলিয়ন পর্যন্ত অর্থ সংগ্রহের সক্ষমতা আছে। এটি অবাস্তব কোনো কথা না।’
এদিকে, গাজায় যুদ্ধ বন্ধ ও জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় তহবিল বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ করে শত শত মানুষ। নিরাপত্তা জোরদারে সেনা, সাঁজোয়া যান ও নৌ বাহিনী মোতায়েন করেছে ব্রাজিল সরকার।
বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, ‘ইসরাইল কীভাবে শিশুদের ওপর বোমা হামলা চালায়। আর এদিকে বিশ্বনেতারা বলছে সব ঠিক আছে।’
আরেকজন বলেন, ‘ইসরাইল ধর্মের নামে গণহত্যা করছে। ইসরাইলের এমন বর্বর কর্মকাণ্ডকে ইহুদি ধর্ম কখনোই সমর্থন করে না।’
ন্যায়সংগত ও টেকসই বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে রূপরেখা দিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও উন্নয়ন সহযোগিতায় সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত আছে চীন। এদিকে, দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছে চীন ও যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি, স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতা বাড়ানোর কথা বলেন চীনা প্রেসিডেন্ট।
জি টোয়েন্টি সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি ও ইন্দোনেশিয়ার সরকার প্রধানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। নতুন কৌশলগত অংশীদারিত্বসহ শিক্ষা, প্রযুক্তি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ইস্যুগুলোতে পারস্পরিক সহযোগিতার কথা উঠে আসে।