মনসুর খান পরিচালিত কালজয়ী ছবি ‘জোশ’ মুক্তি পেয়েছিল ২০০০ সালে। ‘দ্য ইগলস’ এবং ‘দ্য বিচ্ছুস’ নামে স্থানীয় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা আর মারামারির ঘটনাক্রমই প্রতিফলিত হয়েছে এই ছবিটিতে। বিনোদনের সমস্ত মালমশলা রয়েছে। ফলে দর্শকরাও উপভোগ করেছেন ছবিটি।
‘দ্য ইগলস’ গোষ্ঠীর মাথায় ছিলেন ম্যাক্স। এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খান। তাঁর যমজ বোন শার্লির চরিত্রে দেখা গিয়েছিল ঐশ্বর্য রাই বচ্চনকে।
যদিও পরিচালক মনসুর খান এই প্রসঙ্গে সম্প্রতি একটি সত্য প্রকাশ্যে এনেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, এই শার্লি চরিত্রের জন্য প্রথমে কাজলের কাছে অফারটা গিয়েছিল।
কিন্তু অপ্রত্যাশিত কোনও কারণবশত এই অফারটি নাকচ করে দেন অভিনেত্রী।‘ইন্ডিয়া নাও অ্যান্ড হাও’ ইউটিউব চ্যানেলে স্মৃতিচারণ করে সহাস্যে মনসুর বলেন যে, “গল্পটা শুনেছিলেন কাজল। এরপর তিনি উঠে আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। আমি প্রশ্ন করেছিলাম, কাজল আপনি কি ছবিটি করছেন। জবাবে উনি বলেন যে, ‘না, আমি ম্যাক্সের চরিত্রটি করতে চাই’। এরপর তিনি সটান বেরিয়ে গিয়েছিলেন।
সৌভাগ্যবশত মনসুরের ভাগ্য শিকেয় ছেঁড়ে। অবশেষে শার্লি চরিত্রে পা রাখলেন ঐশ্বর্য রাই বচ্চন। আর বলাই বাহুল্য যে, এই চরিত্রে দুর্ধর্ষ অভিনয় করেছিলেন প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী। এক্ষেত্রে ঐশ্বর্যর পেশাদারিত্বের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন মনসুর। তিনি জানান যে, ঐশ্বর্য কখনওই কোনও কিছু নিয়ে অভিযোগ করেননি। এমনকী ‘জোশ’ ছবিটিকে নিজের কেরিয়ারের সেরা ছবি বলেই তকমা দিয়েছেন।
শার্লির চরিত্রের কাস্টিং শুধু মনসুরের জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল না। এর পাশাপাশি আবার কিছু বিভ্রান্তির জেরে ম্যাক্সের চরিত্রটি করতে বেঁকে বসেছিলেন শাহরুখ। ব্যাখ্যা করে মনসুর বলেন যে, “আমি যখন আমির খানকে গল্পটা বলি, তখন তিনি ভেবে বসেন যে, তিনিই ম্যাক্সের চরিত্রটি করবেন। এই ভুল বোঝাবুঝির জেরে শাহরুখ ভেবেছিলেন যে, আমিরকে ইতিমধ্যেই এই ছবিতে নেওয়া হয়ে গিয়েছে। ফলে প্রাথমিক ভাবে সরে দাঁড়াচ্ছিলেন শাহরুখ। যদিও সব কিছু পরিষ্কার করে বলার পর শাহরুখ রাজি হন।
মনসুর আরও বলেন যে, রাহুল শর্মার চরিত্রের জন্য তিনি আমির খানের কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু সেটা ফলপ্রসূ হয়নি। ওই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন চন্দ্রচূড় সিং। ব্যাখ্যা করে পরিচালক আরও বলেন যে, “ওই দুই চরিত্রই সমান ভাবে গুরুত্বপূর্ণ, এমনটাই ভেবেছিলাম আমি। তবে চূড়ান্ত কাস্ট নির্ধারণ করতে রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে।” এত বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও বাণিজ্যিক ভাবে দারুণ সাফল্য লাভ করেছিল ‘জোশ’। অনন্য স্টোরিলাইন, দুর্ধর্ষ অভিনয়, দারুণ গান – সব মিলিয়ে ভাল পারফর্ম করেছে ছবিটি।