ব্রিটিশ জেলে থাকা কিছু কয়েদি যুক্তরাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষক, বায়োকেমিস্ট, সাইকোথেরাপিস্ট ও ধাত্রীদের চেয়েও বেশি বেতন পাচ্ছেন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, যুক্তরাজ্যে কিছু স্বল্প-নিরাপত্তার খোলা কারাগারের বন্দীদের কাজের জন্য বাইরে বের হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। তাঁরা দিনের শেষে আবার কারাগারে ফিরে আসেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপটি বন্দীদের পুনর্বাসন এবং তাঁদের সমাজে ফেরার জন্য প্রস্তুত করার একটি সমন্বিত প্রচেষ্টার অংশ। তবে বন্দী এবং সিভিল সোসাইটির মধ্যে বেতনের এই পার্থক্য যুক্তরাজ্যে আয়ের বৈষম্য নিয়ে প্রশ্ন উঠিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, গত বছর যুক্তরাজ্যে সর্বোচ্চ উপার্জন করা দুজন কয়েদির বছরে নিট বেতন ছিল ৩৬ হাজার ৭১৫ পাউন্ড। এর মানে তাঁদের মোট বেতন বছরে ৪৬ হাজার পাউন্ড। এ ছাড়া আরও নয়জন কয়েদির নিট আয় ছিল বছরে ২২ হাজার ৯০০ পাউন্ড। গত বছর যুক্তরাজ্যের বন্দীদের বেতন ছিল বছরে মোট ২ কোটি ২৫ লাখ পাউন্ড। প্রতিমাসে গড়ে এক হাজার ১৮৩ জন কর্মী কাজ করেছেন। সেই হিসেবে একজন কয়েদি কর্মীর গড় বেতন ছিল ২০ হাজার পাউন্ডের নিচে।
যুক্তরাজ্যের একজন শীর্ষ আয়ের কয়েদির মোট বেতন যেখানে বছরে ৩৬ হাজার ৭১৫ পাউন্ড। সেখানে দেশটিতে একজন কারারক্ষীর বেতন বছরে ২৮ হাজার পাউন্ড, প্রাথমিক শিক্ষকের ৩৬ হাজার ২০০ পাউন্ড, ধাত্রীর বেতন ৩৬ হাজার ৬২২ পাউন্ড, বায়োকেমিস্ট ৩৬ হাজার ৫৮৬ পাউন্ড, সাইকোথেরাপিস্ট ৩৬ হাজার ৬০২ পাউন্ড।
যুক্তরাজ্য সরকার জানায়, তাদের দেশে আরও দুজন কয়েদি আছেন যাদের জরিমানা ও কর কেটে নেওয়ার পর বার্ষিক বেতন ছিল ৩০ হাজার পাউন্ড। এ ছাড়া আরও সাতজন কয়েদির বেসরকারি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে বছরে ২২ হাজার ৯০০ থেকে ৩০ হাজার পাউন্ড বেতন ঢুকেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কয়েদিরা বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে। তবে বেশি আয়ের জন্য কয়েদিদের কাছে অন্যতম আকর্ষনীয় হলো লরিচালকের কাজ।
কারাগার পরিষেবার এক মুখপাত্র বলেন, কিছু অপরাধী তাঁদের সাজার শেষের দিকে অস্থায়ী লাইসেন্সে মুক্তি পায়। এতে দেখা যায় যে তাঁরা কারাগারে ফিরে আসার আগে সমাজে গিয়ে কিছু কাজ করে। তাঁদের আয়ের অংশ থেকে কর, আদালতের জরিমানাসহ ৪০ শতাংশ অর্থ কেটে নিয়ে দাতব্য সংস্থায় দেওয়া হয়।