ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়ে নির্লিপ্ত গলায় পেপ গার্দিওলা বললেন, ‘আমাদের বাস্তবতা মেনে নিতে হবে আর এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা সে বাস্তবতাটা কী? দুঃসময়ের বৃত্তে থাকা ম্যানচেস্টার সিটি গতকাল টটেনহামের বিপক্ষে হেরেছে ৪-০ ব্যবধানে। সব ধরনের প্রতিযোগিতায় এটি সিটির টানা পঞ্চম হার! সেটা মেনে নিয়েই গার্দিওলা এরপর বললেন, ‘যখন আপনি ৪-০ ব্যবধানে হারবেন, তখন আসলে বেশি কিছু বলার থাকে না।’
গতকাল শনিবার রাতে ঘরের মাঠ ইতিহাদে ম্যাচের প্রথম ২০ মিনিটের জেমস মেডিসনের জোড়া গোলে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে সিটি। এরপর ৫২ মিনিটে পেদ্রো পোরো ও যোগ করা সময়ে ব্রেনান জনসনের গোলে চার গোল পূরণ করে টটেনহাম। ২০০৩ সালে আর্সেনালের কাছে ৫-১ গোলে হারের পর ঘরের মাঠে এটাই সিটির সবচেয়ে বড় পরাজয়।
ক্যারিয়ারে ঘরের মাঠে ৪-০ গোলে এর আগে একবারই হেরেছিলেন গার্দিওলা। ২০১৪ সালে বায়ার্ন মিউনিখের ডাগ আউটে থাকার সময় চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে রেয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ঠিক এ স্কোরলাইন দেখেছিলেন তিনি। সেদিন জোড়া গোল করেছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও সের্হিও রামোস।
এতে সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ৫ ম্যাচ হারের স্বাদ পেল সিটি। দীর্ঘ ১৬ বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে এই প্রথম টানা ৫ ম্যাচে হার দেখলেন গার্দিওলা। এর আগে সিটি শেষবার টানা ৫ ম্যাচ হেরেছিল ২০০৬ সালে। স্টুয়ার্ট পিয়ার্সের অধীনে সেবার অবশ্য টানা ৬ ম্যাচ পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেয়েছিল ইংলিশ ক্লাবটি।
এবার সিটির দুঃসময়ের শুরুটা হয়েছিল গত ৩১ অক্টোবর। লিগ কাপে টটেনহামের কাছে ২-১ ব্যবধানে হেরে শেষ ষোলো থেকেই বিদায়ঘণ্টা বাজে পেপ গার্দিওলার দলের। এরপর লিগে বোর্নমাথের কাছেও একই ব্যবধানে হেরে বসে সিটিজেনরা। টানা দুই হারের পর চ্যাম্পিয়নস লিগেও ভাগ্য বদল হয়নি সিটির। পর্তুগিজ ক্লাব স্পোর্তিং সিপির কাছে হারে ৪-১ ব্যবধানে। এরপর লিগে ব্রাইটনের কাছে ২-১ ব্যবধানের হার। চারটি পরাজয়ই ছিল প্রতিপক্ষের মাঠে।
অনেকে মনে করেছিলেন, ঘরের মাঠে ঘুরে দাঁড়াবে সিটি। উল্টো ইতিহাদে বিধ্বস্ত হল ৪-০ ব্যবধানে। এতে ঘরের মাঠে টানা ৫২ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেল ফিল ফোডেন-আর্লিং হলান্ডরা। গার্দিওলার অধীনে লিগে এই প্রথম টানা ৩ ম্যাচ হারল সিটি।
সেখানেই শেষ নয়, ইংলিশ ফুটবলের গত ৬৮ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম শীর্ষ লিগের শিরোপাজয়ী দল হিসেবে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় টানা ৫ ম্যাচ হার দেখল সিটি। এর আগে ১৯৫৬ সালে এমন তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল চেলসির। আগের মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হওয়া চেলসি সেবার লিগ শেষ করেছিল ১৬ নম্বরে থেকে।
লিগে টানা তিন হারে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে থাকা লিভারপুলের সঙ্গে ব্যবধান আরও বাড়ার শঙ্কা জেগেছে সিটির। ১২ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দুইয়ে গার্দিওলার দল। আর এক ম্যাচ কম খেলে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে লিভারপুল। লিগের পরের ম্যাচেই অলরেডদের মুখোমুখি হবে সিটি।