যুদ্ধবিরতির পরও দক্ষিণাঞ্চলে ফিরতে পারছে না লেবাননবাসী
- আপডেট সময় : ০৩:৩০:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
- / ৩৬১ বার পড়া হয়েছে
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ফিরতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী বলছে, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে আপাতত এখানেই অবস্থান করবেন তারা। এদিকে প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, আপাতত যুদ্ধবিরতি কার্যকর করলেও যেকোনো অপ্রত্যাশিত হামলার জবাব দেবে তেল আবিব।
এসময়টায় নিজেদের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি অস্ত্রের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করবে তারা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানান, আইডিএফ সেনা প্রত্যাহার করে নেয়া অবস্থায় দুই মাসের জন্য লেবাননের নিরাপত্তা রক্ষার কাজ করবে দেশটির সেনাবাহিনী। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে ইরানসহ বিশ্ব সম্প্রদায়।
হিজবুল্লাহ-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে ঠিকই। কিন্তু সাধারণ মানুষ ফিরতে পারছেন না দক্ষিণাঞ্চলে নিজ বাসস্থানে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী তাদের সতর্কবার্তা দিয়েছে, আপাতত ঘরে না ফেরার। আইডিএফ বলছে, সাধারণ মানুষে নিরাপত্তার স্বার্থেই তাদের নিষেধ করা হচ্ছে আপাতত ঘরে ফিরতে। এই অঞ্চলে আপাতত ইসরাইলের সেনা মোতায়েন থাকবে বলেও জানায় আইডিএফ।
এরপরও যুদ্ধবিরতি কার্যকরে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে লেবাননের সাধারণ মানুষ। রাস্তায় নেমে পড়েছেন সাময়িক এই স্বাধীনতা উদযাপনে।
চুক্তি অনুযায়ী, সীমান্ত থেকে সেনা আর সমরাস্ত্র প্রত্যাহার করে নিতে ৬০ দিন সময় পাবে হিজবুল্লাহ ও ইসরাইল। এসময় লেবাননের সেনাবাহিনীর অন্তত ৫ হাজার সেনা মোতায়েন থাকবে দক্ষিণ সীমান্তে। তবে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পরও বৈরুতের আকাশে ইসরাইলের ড্রোন উড়তে দেখা যায় ।
প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, হিজবুল্লাহ’কে দুর্বল করে কয়েক দশক পেছন নিয়ে গেছে ইসরাইল। একসময় সাত দিক থেকে হামলার শিকার হলেও এখন পাল্টা হামলা করছে আইডিএফ। মধ্যপ্রাচ্যের চেহারাই পাল্টে দেবেন বলেও হুমকি দেন তিনি। তবে নেতানিয়াহু বলেন, যুদ্ধবিরতির এই সময়টা নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর কাজে লাগাবেন তিনি।
বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি থেকে কি চাই? ইরানের হুমকি ধামকি থামাতে চাই । দেশের সেনাদের নিশ্বাস নেয়ার সুযোগ দিতে চাই। অস্ত্রের ভাণ্ডার শক্তিশালী করতে চাই। আমাদের অস্ত্রের সরবরাহ কমে গেছে। সেইসাথে হামাস, হিজবুল্লাহ’র মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে একজোট হওয়া থেকে বিরত রাখতে চাই। এই যুদ্ধ হামাসের একার। ইরান যেন পরমাণু হামলা না করতে পারে, এটাও একটা লক্ষ্য যুদ্ধবিরতি কার্যকরের।’
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ইসরাইলের হুমকি হিসেবে কোন সশস্ত্র গোষ্ঠীকে আর সহ্য করা হবে না। দক্ষিণাঞ্চল থেকে ধীরে ধীরে সব সেনা প্রত্যাহার করে নেবে আইডিএফ। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলকে নিরাপত্তা দিতে আর পশ্চিমাদের শত্রুকে দমনে এই অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি আরও বাড়বে। তবে লেবাননে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা মোতায়েন করা হবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
জো বাইডেন বলেন, ‘হিজবুল্লাহসহ অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীকে ইসরাইলের নিরাপত্তা নষ্ট করতে দেয়া হবে না। লেবাননের সেনাবাহিনীকে দেশের দায়িত্ব নিতে হবে। দুই পাশের সাধারণ মানুষ যেন বাড়ি ফিরতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। ইসরাইল এই যুদ্ধ শুরু করেনি। কেউ যুদ্ধ চায় না। যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখবে। হিজবুল্লাহ বা কোন পক্ষ এই চুক্তি ভঙ্গ করলে আমরক্ষায় ইসরাইল সব করতে পারবে।’
শর্ত অনুযায়ী, লেবাননের দক্ষিণ থেকে সরে যেতে হবে হিজবুল্লাহ’কে, উত্তরের লিতানি নদীর আশপাশ থেকেও সরে যেতে হবে তাদের। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো বলেন, লেবাননে ইসরাইলের সেনা অভিযান বন্ধ হলেও গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের কথা ভুলে গেলে চলবে না।
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে ইরান, অস্ট্রেলিয়া আর ফ্রান্স। তবে এখনও পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি নিয়ে মুখ খোলেনি হিজবুল্লাহ। এই ঘোষণার পর বিশ্ববাজারে স্থিতিশীল হয়েছে জ্বালানি তেলের দর।