ঢাকা ০৮:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

গাজায় যুদ্ধবিরতির চেষ্টা করবে যুক্তরাষ্ট্র

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৫৫:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৩৪৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির জন্য আঞ্চলিক শক্তিগুলোর মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করবে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ কথা জানিয়েছেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, জিম্মিদের মুক্তি এবং ক্ষমতা থেকে হামাসকে অপসারণসহ গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সঙ্গে আরেকটি চাপ সৃষ্টি করবে।

প্রায় ১৪ মাসের সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে লেবাননে ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয় বুধবার। এর কয়েক ঘন্টার মাথায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ওই কথা জানান বাইডেন।

হামাস বলছে, তারা গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তির আশা করেছিল, কিন্তু ইসরায়েলের দাবি প্রত্যাখ্যান করে চলেছে। তারা বিষয়টি আত্মসমর্পণ বলে মনে করে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা করে হামাস। এতে প্রায় ১২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর পর ওইদিন থেকই গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, তখন থেকে গাজায় ৪৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে।

বাইডেন এক্সে লিখেছেন, আসন্ন দিনগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তুরস্ক, মিশর, কাতার, ইসরায়েল এবং অন্যদের সাথে নিয়ে জিম্মিদের মুক্তি দিয়ে এবং হামাসকে ক্ষমতায় না রেখে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য আরও একটি চাপ দেবে।

মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেছেন, গাজা চুক্তির জন্য আবার চেষ্টা করতে লেবানন যুদ্ধবিরতি ঘোষণার ঠিক আগে বাইডেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাথে একমত হয়েছিলেন। এটি নিয়ে আলোচনাকারীরা কয়েক মাস ধরে ব্যর্থ হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র এবং এর আরব মিত্ররা বলতো, গাজায় যুদ্ধবিরতি হলে হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘর্ষের অবসান ঘটবে। এখন তারা উল্টো আশা করছে। এর পেছনে যুক্তি হলো, লেবাননে যুদ্ধবিরতি দেখায় যে, সমঝোতা সম্ভব এবং হামাস এখন আরও বিচ্ছিন্ন।

কাতার সম্প্রতি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে একটি যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করতে সহায়তা করার প্রচেষ্টা স্থগিত করেছে। দুই পক্ষ যথাযথভাবে এগিয়ে না আসায় এ অবস্থানে গেছে তারা। অবশ্য এরই মধ্যে হামাস লেবাননের যুদ্ধবিরতিতে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বলেছে, তারা গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি বিবেচনা করতে প্রস্তুত।

হামাস নেতা বাসেম নাইম বিবিসিকে বলেছেন, আমরা ভ্রাতৃপ্রতিম লেবাননের জনগণের অটলতা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের সাথে তাদের অবিচ্ছিন্ন সংহতির প্রশংসা করি। আমরা গাজায় আগুন বন্ধ করার যেকোনো প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করি এবং আমরা আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন নিয়ে উদ্বিগ্ন।

লেবাননে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনাকারী মার্কিন রাষ্ট্রদূত আমোস হোচস্টেইন বিবিসি নিউজ আওয়ারকে বলেন, তিনি আশাবাদী লেবাননের ক্তি গাজায় যুদ্ধবিরতির পথ প্রশস্ত করতে পারে।

খান ইউনিসের একজন ব্যক্তি গাজা টুডেকে বলেছেন, লেবাননে যুদ্ধ বন্ধ হওয়ায় আমরা আনন্দিত ছিলাম এবং আমরা এখানে গাজা উপত্যকায়ও এটি আশা করি।

গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির চুক্তির জন্য আলোচনা কয়েক মাস ধরে অচলাবস্থায় রয়েছে। চলতি মাসে কাতার ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা থেকে সরে আসে।

সর্বশেষ মঙ্গলবার লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর তিনি এ ঘোষণা দেন। এর পর বুধবার কার্যকর হয় যুদ্ধবিরতি চুক্তি।

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজায় যুদ্ধবিরতির চেষ্টা করবে যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় : ০১:৫৫:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির জন্য আঞ্চলিক শক্তিগুলোর মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করবে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ কথা জানিয়েছেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, জিম্মিদের মুক্তি এবং ক্ষমতা থেকে হামাসকে অপসারণসহ গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সঙ্গে আরেকটি চাপ সৃষ্টি করবে।

প্রায় ১৪ মাসের সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে লেবাননে ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয় বুধবার। এর কয়েক ঘন্টার মাথায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ওই কথা জানান বাইডেন।

হামাস বলছে, তারা গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তির আশা করেছিল, কিন্তু ইসরায়েলের দাবি প্রত্যাখ্যান করে চলেছে। তারা বিষয়টি আত্মসমর্পণ বলে মনে করে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা করে হামাস। এতে প্রায় ১২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর পর ওইদিন থেকই গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, তখন থেকে গাজায় ৪৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে।

বাইডেন এক্সে লিখেছেন, আসন্ন দিনগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তুরস্ক, মিশর, কাতার, ইসরায়েল এবং অন্যদের সাথে নিয়ে জিম্মিদের মুক্তি দিয়ে এবং হামাসকে ক্ষমতায় না রেখে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য আরও একটি চাপ দেবে।

মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেছেন, গাজা চুক্তির জন্য আবার চেষ্টা করতে লেবানন যুদ্ধবিরতি ঘোষণার ঠিক আগে বাইডেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাথে একমত হয়েছিলেন। এটি নিয়ে আলোচনাকারীরা কয়েক মাস ধরে ব্যর্থ হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র এবং এর আরব মিত্ররা বলতো, গাজায় যুদ্ধবিরতি হলে হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘর্ষের অবসান ঘটবে। এখন তারা উল্টো আশা করছে। এর পেছনে যুক্তি হলো, লেবাননে যুদ্ধবিরতি দেখায় যে, সমঝোতা সম্ভব এবং হামাস এখন আরও বিচ্ছিন্ন।

কাতার সম্প্রতি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে একটি যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করতে সহায়তা করার প্রচেষ্টা স্থগিত করেছে। দুই পক্ষ যথাযথভাবে এগিয়ে না আসায় এ অবস্থানে গেছে তারা। অবশ্য এরই মধ্যে হামাস লেবাননের যুদ্ধবিরতিতে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বলেছে, তারা গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি বিবেচনা করতে প্রস্তুত।

হামাস নেতা বাসেম নাইম বিবিসিকে বলেছেন, আমরা ভ্রাতৃপ্রতিম লেবাননের জনগণের অটলতা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের সাথে তাদের অবিচ্ছিন্ন সংহতির প্রশংসা করি। আমরা গাজায় আগুন বন্ধ করার যেকোনো প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করি এবং আমরা আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন নিয়ে উদ্বিগ্ন।

লেবাননে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনাকারী মার্কিন রাষ্ট্রদূত আমোস হোচস্টেইন বিবিসি নিউজ আওয়ারকে বলেন, তিনি আশাবাদী লেবাননের ক্তি গাজায় যুদ্ধবিরতির পথ প্রশস্ত করতে পারে।

খান ইউনিসের একজন ব্যক্তি গাজা টুডেকে বলেছেন, লেবাননে যুদ্ধ বন্ধ হওয়ায় আমরা আনন্দিত ছিলাম এবং আমরা এখানে গাজা উপত্যকায়ও এটি আশা করি।

গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির চুক্তির জন্য আলোচনা কয়েক মাস ধরে অচলাবস্থায় রয়েছে। চলতি মাসে কাতার ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা থেকে সরে আসে।

সর্বশেষ মঙ্গলবার লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর তিনি এ ঘোষণা দেন। এর পর বুধবার কার্যকর হয় যুদ্ধবিরতি চুক্তি।