ঊর্ধ্বগতির বাজারে সাড়া ফেলেছে সুপারশপের কম্বো প্যাকেজিং
- আপডেট সময় : ১২:৩৭:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
- / ৩৪১ বার পড়া হয়েছে
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে সাড়া ফেলেছে সুপারশপের বিভিন্ন কম্বো প্যাকেজিং। তবে সেই প্যাকেজিং কেবলই আশীর্বাদ হয়েছে ব্যস্ত এ শহরে ছুটে চলা মানুষদের। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যাদের জন্য এই কম্বো প্যাকেজ, সেই নিম্নবিত্ত মানুষদের হাতের নাগালে এসেছে কি?
‘প্রতিনিয়তই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম’ আবার কখনও ‘লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ভোগ্যপণ্যের দর’ রোজকার এমন খবরের শিরোনামে ভোক্তার কপালে যেন চিন্তার ভাঁজ। হিসেবি টাকায় বাজারের ব্যাগ ভরবে তো? এমন বাস্তবতায় ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে একটু স্বস্তির খবর নিয়ে এসেছে দেশের কয়েকটি সুপারশপ।
নিম্নবিত্তের খাবারের পাতে ইলিশ কিংবা গরুর মাংস এক বিলাসিতার নাম। দাম ধরা-ছোঁয়ার বাইরে হওয়ায় কেনাও দু:স্বাধ্য।
এবার সাধ আর সাধ্যের মেলবন্ধনে সামর্থ্য অনুযায়ী কেনাকাটার সুযোগ মিলছে। আর এই সুযোগ করে দিয়েছে সুপারশপ। যেখানে তিন পিস ইলিশ মাছের সাথে পেঁয়াজ-কাঁচা মরিচ ও টমেটোর মতো রান্নাসামগ্রী মিলছে ১৪০ টাকায়। আর ২০০ গ্রাম গরুর মাংসের সাথে ১০০ গ্রাম আলু ১৬০ টাকা। এরকম আরও অনেক প্যাক। আকর্ষণীয় প্যাকেজিং এর মাধ্যমে দেয়া এসব অফার দৃষ্টি কেড়েছে ক্রেতাদের। সেই সঙ্গে সহজলভ্য হওয়ায় ভোক্তাদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে সুপারশপের এই বিপণন কৌশল।
একজন ক্রেতা বলেন, ‘এককজনের বাজেট একেকরকম। যারা একটু কম রেঞ্জের ভেতরে সব ধরনের কোয়ালিটির মাছ চাচ্ছে তাদের জন্য বেটার।’
অন্য একজন ক্রেতা বলেন, ‘আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হয়েছে। একসঙ্গে এক কেজি কেনা খুবই কঠিন হয়ে যায়। মাসেও একবার খাওয়া জোটে না। সে জায়গায় এখন সাশ্রয় মূল্যে খেতে পারছি। এর মধ্যে ইলিশের বিষয়টা আরও আনন্দদায়ক।’
তবে নিম্নবিত্তের চাহিদা পূরণ করার চাইতেও এই প্যাকেজিং সহজ করে দিয়েছে এই শহরে একা বাস করা ব্যাচেলরের জীবন। পাশাপাশি গৃহকর্তা আবার কখনওবা কর্মব্যস্ত ছোট পরিবারগুলোতেও এনে দিয়েছে স্বস্তি।
একজন ক্রেতা বলেন, ‘যারা ব্যাচেলর বা স্টুডেন্ট আছে তাদের জন্য এটা বেশি আকর্ষণীয়। কারণ আমার মনে হয় এক কেজি মাছ নিয়ে করবেই বা কী তারা।’
অন্য একজন ক্রেতা বলেন, ‘প্রথমেই যদি বলতে হয় সেটা হলো আমার মাছটা কাটতে হয় না। দ্বিতীয়ত আমার বাসায় ইলিশ মাছের মাথাটা একদমই খাওয়া হয় না। এদিক থেকে আমি মনে করি এটা আমার জন্য খুবই উইন উইন একটা সিচুয়েশন। আবার অর্থের একটা সেভিংস তো হচ্ছেই।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুপারশপের এই বিপণন পদ্ধতিতে কোনো শুভংকরের ফাঁকি দেখিয়ে যেন চাপা না দেয়া হয় নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্তের আমিষ খাওয়ার স্বপ্ন।
কৃষিবিদ ড. কাশফিয়া আহমেদ বলেন, ‘এটা হচ্ছে সময়ের দাবি বলে একটা কথা আছে না? সময়ের প্রয়োজনেই হয়তো সুপারশপ থেকে ভেবেছে যে, অ্যাটলিস্ট আমরা মানুষকে কিছুটা রিলিফ দিই। এই সুবিধাগুলো শুধু কয়েকটা আউটলেটে না, পুরো বাংলাদেশের আউটলেটগুলোতে ছড়িয়ে দিতে হবে এবং বিশেষ করে গুলমান, বনানীর আউটলেটগুলোতে না গিয়ে যেখানে আসলেই নিম্নমধ্যবিত্তরা বা মধ্যবিত্তরা বা দরিদ্রশ্রেণী থাকে তাদের জন্য দেওয়া বেশি প্রয়োজন।’
পকেট কাটার ভয়ে সুপারশপ এড়িয়ে চলে যে ভোক্তা তার মনে কোনো দীর্ঘশ্বাস নয়, বরং স্বস্তি থাকবে বছরজুড়েই।
কৃষিবিদ ড. কাশফিয়া আহমেদ বলেন, ‘এক্ষেত্রে মূল্যটা এমন হতে হবে যে এক কেজি গরুর মাংসে যে দাম ছিল, আমি চার পিছ বা ৪০০ গ্রাম কিনছি বা হাফ কেজি কিনছি সুপারশপের প্যাকেজে। সেখানে যে ওই এক কেজির দামটাই রিফ্লেক্ট না করে ওইটা যেন কমদামে হয়।’
নিত্যপণ্যের বাজারের উত্তাপকে পাশ কাটিয়ে স্বল্প অর্থের যোগানে সব শ্রেণিপেশার খাবারের স্বাদ মিটবে বলে প্রত্যাশা ভোক্তাদের।