ঢাকা ০২:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ব্রেকিং নিউজ ::
ইসরায়েল ও ইরানের সংঘাত: বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন সেবা চালু করা হয়েছে দুতাবাস। ইরানে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের + ৯৮৯908577368 ও + ৯৮৯১22065745 নম্বরে (হোয়াটসঅ্যাপ সহ) যোগাযোগ করতে বলেছে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।

গাজায় যুদ্ধের জন্য ইসরাইলকে ৬৮ কোটি ডলারের অস্ত্র সহায়তা

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৫৮:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৩৯৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গাজাতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে ইসরাইলে বিক্ষোভ করেছেন বহু মানুষ। এদিকে গাজায় যুদ্ধ পরিচালনায় ইসরাইলকে ৬৮ কোটি ডলারের অস্ত্র সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন করেছে বাইডেন প্রশাসন।

ইসরাইলি বাহিনীর সঙ্গে হিজবুল্লাহর ১৪ মাসের যুদ্ধে লেবাননে তিন হাজার ৮০০ বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার। হিজবুল্লাহ বলছে, তাদের শীর্ষ নেতাসহ প্রায় চার হাজার কর্মী নিহত হয়েছে। যা ২০০৬ সালের মাসব্যাপী চলা যুদ্ধে প্রাণহানির ১০ গুণ। ইসরাইলি আগ্রাসনে ঘরবাড়ি ছেড়েছে লেবাননে লাখ লাখ বাসিন্দা। বিশ্বব্যাংক বলছে, দেশটিতে ৮৫০ কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যা পুষিয়ে নিতে সময় লাগবে বহুদিন।

যুদ্ধবিরতির খবরে দলে দলে লেবাননে ফিরতে শুরু করেছেন হাজারও মানুষ। রাজধানী বৈরুত থেকে দক্ষিণ লেবাননের প্রধান সড়কে দেখা গেছে তীব্র যানজট। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পানির বোতল বিতরণ এবং হিজবুল্লাহর পতাকা নেড়ে উদযাপন করছেন লেবানিজরা। বিশাল ধ্বসস্তূপের মধ্যেই বাসিন্দারা খুঁজে নিচ্ছেন তাদের আশ্রয়।

স্থানীয় একজন বলেন, ‘আমার শৈশব কেটেছে এই বাড়িতে। আমার জীবনের সব স্মৃতি এখানে। পুরো বাড়িটিই এখন ধ্বংসস্তূপ। কিছুই নেই।’

অন্য একজন বলেন, ‘আমরা শুধু ঘরবাড়ি না, রক্তও বিসর্জন দিয়েছি। আমার পরিবারের প্রধানকে হারিয়েছি। বহু বাসিন্দা তাদের তরুণ সন্তানদের হারিয়েছে।’

লেবাননের এমন দৃশ্য গোটা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির বার্তা বয়ে আনছে। সংকট সমাধানে এই প্রথম আশার আলো দেখছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। এবার গাজায়ও দ্রুত যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির মুহূর্তটি অসাধারণ, কয়েক মাস ধরে মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে আমরা যে অন্ধকারে ছিলাম, তা থেকে কিছুটা মুক্তি পেয়েছি। যুদ্ধবিরতি কার্যকরের মুহূর্তটি সত্যিই অসাধারণ। দুই পক্ষই একে অপরের প্রতি সম্মান দেখিয়েছে। লেবানন সংকটের একটি রাজনৈতিক সমাধানের পথ প্রশস্ত হয়েছে।’

যুদ্ধবিরতি কার্যকরকে নিজেদের বিজয় হিসেবে দেখছে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী। যুদ্ধে শীর্ষ নেতাদের হারানোকেই সবচেয়ে বড় ক্ষতি হিসেবে দেখছে তারা। তবে তাদের মনোবল একবিন্দু নষ্ট হয়নি। এদিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের দ্বিতীয় দিনেই প্রয়াত হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহর আনুষ্ঠানিক দাফনের আয়োজন করা হয়েছে। নাসরাল্লাহর মৃত্যুর দুই মাস পর এই আয়োজন করতে যাচ্ছে হিজবুল্লাহ।

যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, আগামী ৬০ দিনের মধ্যে লেবানন থেকে সরে যাবে ইসরাইলি বাহিনী। তাদের জায়গায় আসবে লেবাননের সেনাবাহিনী। তারা ব্লু লাইনের চারপাশের এলাকায় টহল দেবে। চলমান পরিস্থিতিতে লেবাননে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান নাজিব মিকাতি।

লেবাননে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও এখনও ধুঁকছে গাজা উপত্যকা। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। এবার ফিলিস্তিনিদের জন্য অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে জেরুজালেমের রাস্তায় নেমেছে বিক্ষোভকারীরা। তাদের মতে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। গাজায় যখন যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা জেগেছে ঠিক তখনই ইসরাইলকে ৬৮ কোটি মার্কিন ডলারের অস্ত্র সহায়তার প্যাকেজের অনুমোদন করেছে বাইডেন প্রশাসন। এই অর্থের পুরোটাই ব্যয় হবে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য।

জাতিসংঘ বলছে, ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইল বাহিনীর হামলা সত্যিই ভয়ংকর। এক বছরের বেশি সময়ের যুদ্ধে গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪৫ হাজার ছুঁই ছুঁই। আহত ও ঘরবাড়ি ছাড়া হয়েছেন কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজায় যুদ্ধের জন্য ইসরাইলকে ৬৮ কোটি ডলারের অস্ত্র সহায়তা

আপডেট সময় : ০১:৫৮:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

গাজাতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে ইসরাইলে বিক্ষোভ করেছেন বহু মানুষ। এদিকে গাজায় যুদ্ধ পরিচালনায় ইসরাইলকে ৬৮ কোটি ডলারের অস্ত্র সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন করেছে বাইডেন প্রশাসন।

ইসরাইলি বাহিনীর সঙ্গে হিজবুল্লাহর ১৪ মাসের যুদ্ধে লেবাননে তিন হাজার ৮০০ বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার। হিজবুল্লাহ বলছে, তাদের শীর্ষ নেতাসহ প্রায় চার হাজার কর্মী নিহত হয়েছে। যা ২০০৬ সালের মাসব্যাপী চলা যুদ্ধে প্রাণহানির ১০ গুণ। ইসরাইলি আগ্রাসনে ঘরবাড়ি ছেড়েছে লেবাননে লাখ লাখ বাসিন্দা। বিশ্বব্যাংক বলছে, দেশটিতে ৮৫০ কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যা পুষিয়ে নিতে সময় লাগবে বহুদিন।

যুদ্ধবিরতির খবরে দলে দলে লেবাননে ফিরতে শুরু করেছেন হাজারও মানুষ। রাজধানী বৈরুত থেকে দক্ষিণ লেবাননের প্রধান সড়কে দেখা গেছে তীব্র যানজট। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পানির বোতল বিতরণ এবং হিজবুল্লাহর পতাকা নেড়ে উদযাপন করছেন লেবানিজরা। বিশাল ধ্বসস্তূপের মধ্যেই বাসিন্দারা খুঁজে নিচ্ছেন তাদের আশ্রয়।

স্থানীয় একজন বলেন, ‘আমার শৈশব কেটেছে এই বাড়িতে। আমার জীবনের সব স্মৃতি এখানে। পুরো বাড়িটিই এখন ধ্বংসস্তূপ। কিছুই নেই।’

অন্য একজন বলেন, ‘আমরা শুধু ঘরবাড়ি না, রক্তও বিসর্জন দিয়েছি। আমার পরিবারের প্রধানকে হারিয়েছি। বহু বাসিন্দা তাদের তরুণ সন্তানদের হারিয়েছে।’

লেবাননের এমন দৃশ্য গোটা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির বার্তা বয়ে আনছে। সংকট সমাধানে এই প্রথম আশার আলো দেখছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। এবার গাজায়ও দ্রুত যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির মুহূর্তটি অসাধারণ, কয়েক মাস ধরে মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে আমরা যে অন্ধকারে ছিলাম, তা থেকে কিছুটা মুক্তি পেয়েছি। যুদ্ধবিরতি কার্যকরের মুহূর্তটি সত্যিই অসাধারণ। দুই পক্ষই একে অপরের প্রতি সম্মান দেখিয়েছে। লেবানন সংকটের একটি রাজনৈতিক সমাধানের পথ প্রশস্ত হয়েছে।’

যুদ্ধবিরতি কার্যকরকে নিজেদের বিজয় হিসেবে দেখছে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী। যুদ্ধে শীর্ষ নেতাদের হারানোকেই সবচেয়ে বড় ক্ষতি হিসেবে দেখছে তারা। তবে তাদের মনোবল একবিন্দু নষ্ট হয়নি। এদিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের দ্বিতীয় দিনেই প্রয়াত হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহর আনুষ্ঠানিক দাফনের আয়োজন করা হয়েছে। নাসরাল্লাহর মৃত্যুর দুই মাস পর এই আয়োজন করতে যাচ্ছে হিজবুল্লাহ।

যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, আগামী ৬০ দিনের মধ্যে লেবানন থেকে সরে যাবে ইসরাইলি বাহিনী। তাদের জায়গায় আসবে লেবাননের সেনাবাহিনী। তারা ব্লু লাইনের চারপাশের এলাকায় টহল দেবে। চলমান পরিস্থিতিতে লেবাননে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান নাজিব মিকাতি।

লেবাননে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও এখনও ধুঁকছে গাজা উপত্যকা। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। এবার ফিলিস্তিনিদের জন্য অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে জেরুজালেমের রাস্তায় নেমেছে বিক্ষোভকারীরা। তাদের মতে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। গাজায় যখন যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা জেগেছে ঠিক তখনই ইসরাইলকে ৬৮ কোটি মার্কিন ডলারের অস্ত্র সহায়তার প্যাকেজের অনুমোদন করেছে বাইডেন প্রশাসন। এই অর্থের পুরোটাই ব্যয় হবে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য।

জাতিসংঘ বলছে, ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইল বাহিনীর হামলা সত্যিই ভয়ংকর। এক বছরের বেশি সময়ের যুদ্ধে গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪৫ হাজার ছুঁই ছুঁই। আহত ও ঘরবাড়ি ছাড়া হয়েছেন কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি।