ইকোনমিস্টের চোখে বর্ষসেরা ১০ সিনেমা
- আপডেট সময় : ০৮:২৭:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪
- / ৩৫৫ বার পড়া হয়েছে
বছরজুড়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মুক্তি পায় শতশত চলচ্চিত্র। তবে সব ছবিই কি ‘সেরা’র তকমা পায়? না, তা সম্ভব নয়। মুক্তি পাওয়া সেসব ছবি থেকে প্রতিবছরই সেরার তালিকা করে থাকে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিস্ট। চলতি বছর সেই তালিকায় স্থান করে নেওয়া শীর্ষ ১০টি চলচ্চিত্র রইল ইনডিপেনডেন্ট ডিজিটালে—
অল অব আস স্ট্রেঞ্জারস
চলতি বছরের সবেচেয়ে স্নেহপূর্ণ চলচ্চিত্র এটি। যেখানে দেখা যায়, একজন নিঃসঙ্গ চিত্রনাট্যকার তার শৈশবের বাড়িতে ফিরে গেছেন এবং তার বাবা-মায়ের মৃত আত্মার সঙ্গে দেখা করছেন। যখন তিনি কিশোর বয়সী, তখন তাদের হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু এখন সেই চিত্রনাট্যকারের হাতে আর মাত্র একবার সুযোগ রয়েছে যে, তিনি তার পিতামাতার সঙ্গে সংক্ষিপ্ত সময় কথা বলতে পারবেন। সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন অ্যান্ড্রু স্কট, পল মেসক্যাল, ক্লেয়ার ফয়, জেমি বেল প্রমুখ। পরিচালনা করেছেন ব্রিটিশ নির্মাতা অ্যান্ড্রু হেই।
অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট
সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে তিনজন নারীর সংবেদনশীল জীবনকে কেন্দ্র করে। তারা একসঙ্গে মুম্বাইয়ের একটি ব্যস্ত হাসপাতালে কাজ করেন। রাতের বেলায়, শহরটি স্বাধীনতার মোহনীয় রূপে ধরা দেয়, তবে সামান্য অর্থ বা স্বাধীনতার এই জীবনের বাস্তবতা ফিরে আসে সকালেই। কান চলচ্চিত্র উৎসবে গ্রাঁ প্রিজয়ী এই সিনেমা পরিচালনা করেছেন পায়েল কপাডিয়া। অভিনয় করেছেন কানি কুশ্রুতি, দিব্যা প্রভা, ছায়া কদম, ঋধু হারুন।
আনোরা
সবশেষ কান চলচ্চিত্র উৎসবে স্বর্ণপাম জিতেছিল এটি। এবার তা উঠে এসেছে ইকোনমিস্টের বর্ষসেরা ছবির তালিকায়। সিনেমাটি আবর্তিত হয়েছে নিউইয়র্ক শহরের একজন ল্যাপ ড্যান্সারকে কেন্দ্র করে। তিনি রাশিয়ান অলিগার্ক পিতার সন্তান ইভান নামের এক ছেলের সঙ্গে পরিচিত হন। তারপর প্রেম, বিয়ে। কিন্তু খবরটি রাশিয়ায় পৌঁছানোর পর ছেলেটির বাবা-মা এই বিয়ে বাতিল করার জন্য নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা দেন। তখন আনোরা-ইভানের রূপকথার মতো বিয়ে হুমকির মুখে পড়ে। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন শন বেকার। অভিনয়ে মাইকি ম্যাডিসন, ক্যারেন কারাগুলিয়ান, ইউরি বোরোসিভ, আইভি ওয়াক, লুনা সোফিয়া মিরান্ডা প্রমুখ।
বেবিগার্ল
একটি রোবটিক্স ফার্মের বিবাহিত বস প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষানবিশ এক কৌশলী তরুণীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায়। দ্য ইকোনমিস্টের মতে, ‘সিনেমাটি একদম চকচকে ইরোটিক থ্রিলার, তবে তা নগ্নতার চেয়ে কাঁচা আবেগের প্রতি বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করে।’ এতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন নিকোল কিডম্যান ও হ্যারিস ডিকিনসন। পরিচালনা করেছেন হালিনা রাইন।
লা কাইমেরা
আশির দশকের পটভূমিতে আবর্তিত হয়েছে এ সিনেমার গল্প। যেখানে একজন ইংরেজ প্রত্নতাত্ত্বিককে দেখা যায় মধ্য ইতালির তোসকানা অঞ্চলের আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। হারিয়ে যাওয়া প্রেমের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। কবর ডাকাত দলের একটি রোলিকিং ব্যান্ডকে কালো বাজারে বিক্রি করতে এবং এট্রুস্কান সভ্যতার প্রত্নবস্তু আবিষ্কার করতে তাদের সহায়তা করেন। কিন্তু কিছু রত্ন এবং কিছু সম্পর্ক কি অতীতে ফেলে রাখা উচিত? তেমন বাস্তবতাই ফুটে উঠে এ সিনেমায়, যেখানে অভিনয় করেছেন জোশ ও’কনর, ক্যারল ডুয়ার্তে, ভিনসেঞ্জো নেমোলাতো প্রমুখ। পরিচালনা করেছেন এলিস রোহরওয়াচার।
কনক্লেভ
সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে রবার্ট হ্যারিসের একটি উপন্যাস অবলম্বনে। দারুণ নিয়ন্ত্রিত ও মজার একটি থ্রিলার সিনেমা। যেখানে কার্ডিনাল (ক্যাথলিক চার্চের জ্যেষ্ঠ্য সদস্য) হিসেবে অভিনয় করেছেন রাল্ফ ফিয়েনেস। নতুন পোপ নির্বাচনের তত্ত্বাবধানে জড়িত তিনি। তবে দ্রুতই অনুধাবন করতে পারেন যে, সস্মুখসারির মানুষজনের কাছে তার জন্য দর কষাকষির চেয়ে আরও বেশি গোপনীয় কিছু রয়েছে। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন এডওয়ার্ড বার্গার।
গ্রিন বর্ডার
সিনেমাটির গল্পে দেখা যায়, নিরাপদে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোয় প্রবেশের জন্য শরণার্থীদের প্রলুব্ধ করে বেলারুশ। কিন্তু এই পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় পোল্যান্ডের সীমান্তরক্ষীরা। এদিকে, বেলারুশিয়ান সীমান্তবাহিনী অভিবাসীদের ফিরে যেতে দেবে না। সিনেমাটি সম্পর্কে দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, ‘একটি মর্মস্পর্শী, বিরক্তিকর গল্প, পরিবারগুলো যেভাবে একটি উন্নত জীবনের সন্ধান করছে, তা স্বৈরশাসকের হাতছানিতে পরিণত হয়েছে।’ এতে অভিনয় করেছেন জালাল আলতাউইল, মাজা ওস্তাজিউস্কা, টমাস ওলোসোক প্রমুখ। পরিচালনা করেছেন আগ্নিয়েস্কা হোলান্ড।
ইম্যাকুলেট
একজন আমেরিকান সন্ন্যাসী একটি ইতালীয় কনভেন্টে (বিহার) চলে যান। তিনি জানতে পারেন যে, জেনেটিসিস্ট থেকে পাদ্রী হয়ে ওঠা একজন ব্যক্তি যিশু খ্রিস্টের ক্লোন করার পরিকল্পনা করছেন। দ্য ইকোনমিস্টের মতে, ‘বছরের পর বছর ধরে সবচেয়ে সুন্দরভাবে দৃশ্যায়িত এবং নিপুণভাবে নির্মিত হরর ফিল্মগুলোর একটি হলো ইম্যাকুলেট।’ সেই সন্ন্যাসীর ভূমিকায় রয়েছেন মার্কিন অভিনেত্রী সিডনি সুইনি। পরিচালনা করেছেন মাইকেল মোহন।
লাভ লাইজ ব্লিডিং
সিনেমাটিতে ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট ও ক্যাটি ও’ব্রায়ানকে দেখা যায় ছোট্ট একটি শহরের জিম ম্যানেজার ও একজন বডি বিল্ডারের ভূমিকায়। একজন খুনি বন্দুকবাজের বিরুদ্ধে দল গঠন করেন তারা। দ্য ইকোনমিস্টের ভাষ্য, এই অন্ধকারাচ্ছন্ন কমিক ক্রাইম থ্রিলারটি অত্যাধিক হিংসাত্মক, বিভ্রমমূলক।’ সতর্কবার্তা দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, ‘এটা দুর্বল হৃদয়ের জন্য নয়।’ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন রোজ গ্লাস।
মনস্টার
একজন জাপানি বিধবা নারী তার ছেলের অদ্ভুত আচরণে ভীত। সেইসব কর্মকাণ্ড তিনটি ভাগে তিনটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। প্রথমটি রহস্য, দ্বিতীয়টি ব্যঙ্গাত্মক প্রহসন ও তৃতীয়টি কামুকতা। দ্য ইকোনমিস্টের ভাষ্য, ‘এটি একটি গভীর মানবিক চলচ্চিত্র।’ এতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন আন্দো সাকুরা ও কুরোকাওয়া সোয়া। পরিচালনা করেছেন হিরোকাজু কোরেদা।