ঢাকা ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

শুল্কারোপের হুমকির পর ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন ট্রুডো

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:১৫:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৩৫২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কানাডিয়ান পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর এবার যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ব্রিটেনের গণমাধ্যম বলছে, অটোয়া-ওয়াশিংটন সম্পর্কের উন্নয়ন ও শুল্ক নীতি শিথিল করতেই আকস্মিক এই সফর ট্রুডোর।

আগেভাগে কোনো বার্তা না দিয়েই হঠাৎ করেই যুক্তরাষ্ট্রে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। উদ্দেশ্য দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাৎ।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম জি সেভেন জোটের কোনো নেতার সাথে বৈঠক করলেন ট্রাম্প। ব্রিটেনের গণমাধ্যম বলছে, মেক্সিকো-কানাডা ও চীনের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে যে পোস্ট দিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়ায়ই ফ্লোরিডায় এই আকস্মিক সফর ট্রুডোর।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সারির বাণিজ্যিক অংশীদার মেক্সিকো ও কানাডা। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে যে পরিমাণ বৈদেশিক পণ্য রপ্তানি হয়েছে তার ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ মেক্সিকোর আর প্রায় ১৪ শতাংশ কানাডার। ফলে, শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অটোয়া-ওয়াশিংটন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপরেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এই আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়ার সুযোগ নেই।

এদিন, হোটেল ছেড়ে বের হওয়ার সময় হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিতে দেখা গেছে ট্রূডোকে, যদিও বৈঠক সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। মার্কিন গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, শুক্রবারের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ট্রাম্পের নতুন মন্ত্রিসভার মনোনীত সদস্যরা।

প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্ভাব্য সচিবসহ জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা ও ফিন্যান্সিয়াল এজেন্সির কর্মকর্তাদের উপস্থিতিই বলে দিচ্ছে, সৌজন্য সাক্ষাৎ বা নৈশভোজ নয়, কূটনৈতিক সম্পর্কের দৃষ্টিকোণ থেকে এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ব্রিটেনের গণমাধ্যমের দাবি, ভারতের পর যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও সুসম্পর্ক ধরে রাখতে ব্যর্থ ট্রুডো প্রশাসন। জি সেভেন জোটের নেতাদের কেউ কেউ জাস্টিন ট্রুডোকে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় দেখতে চান না।

অনেকটা সেই কারণেই সোমবার ক্যানাডিয়ান পণ্যে শুল্ক আরোপের ঘোষণা শুনে ট্রাম্পের সাথে টেলিফোনে কথা বলেন ট্রুডো। দাবি করেন, ১০ মিনিটের ঐ ফোনালাপে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন ইউএস প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট।

২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর অনেক আশার জন্ম দিলেও গেল কয়েকবছরে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন জাস্টিন ট্রুডো। বিশেষ করে নিত্যপণ্যের চড়া দাম ও জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ২০২৫ আসন্ন নির্বাচনে ট্রুডোর জয় নিয়ে আশাবাদী নন বিশ্বনেতারা। জরিপের তথ্যও সেই আভাস দিচ্ছে।

বিশেষ করে চলতি সপ্তাহে কানাডা ১০টি প্রদেশের ১০ জন প্রিমিয়ারের সাথে ওয়াশিংটন-অটোয়া সম্পর্কের ভবিষ্যৎ আলোচনার প্রস্তাব করছেন ট্রুডো। এই ঘোষণার পরপরই ট্রাম্পের সাথে ট্রুডোর সাক্ষাৎ থেকে এটি স্পষ্ট, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক ধরে রাখতে মরিয়া কানাডার সরকার প্রধান।

বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম তেল উত্তোলনকারী দেশ কানাডা। প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনে দেশটির অবস্থান ষষ্ঠ। প্রতিদিন ৪০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে দেশটি।

অটোয়ার জন্য উদ্বেগের বিষয়, ট্রাম্প নতুন শুল্ক নীতি বাস্তবায়িত হলে অপরিশোধিত তেলের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে কানাডাকে। ফলে, শুল্ক নীতি শিথিল না হলে, কানাডার ওপর অর্থনৈতিক যে চাপ সৃষ্টি হবে, তার দায় এড়াতে পারবেন না জাস্টিন ট্রুডো।

নিউজটি শেয়ার করুন

শুল্কারোপের হুমকির পর ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন ট্রুডো

আপডেট সময় : ০৯:১৫:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

কানাডিয়ান পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর এবার যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ব্রিটেনের গণমাধ্যম বলছে, অটোয়া-ওয়াশিংটন সম্পর্কের উন্নয়ন ও শুল্ক নীতি শিথিল করতেই আকস্মিক এই সফর ট্রুডোর।

আগেভাগে কোনো বার্তা না দিয়েই হঠাৎ করেই যুক্তরাষ্ট্রে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। উদ্দেশ্য দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাৎ।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম জি সেভেন জোটের কোনো নেতার সাথে বৈঠক করলেন ট্রাম্প। ব্রিটেনের গণমাধ্যম বলছে, মেক্সিকো-কানাডা ও চীনের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে যে পোস্ট দিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়ায়ই ফ্লোরিডায় এই আকস্মিক সফর ট্রুডোর।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সারির বাণিজ্যিক অংশীদার মেক্সিকো ও কানাডা। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে যে পরিমাণ বৈদেশিক পণ্য রপ্তানি হয়েছে তার ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ মেক্সিকোর আর প্রায় ১৪ শতাংশ কানাডার। ফলে, শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অটোয়া-ওয়াশিংটন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপরেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এই আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়ার সুযোগ নেই।

এদিন, হোটেল ছেড়ে বের হওয়ার সময় হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিতে দেখা গেছে ট্রূডোকে, যদিও বৈঠক সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। মার্কিন গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, শুক্রবারের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ট্রাম্পের নতুন মন্ত্রিসভার মনোনীত সদস্যরা।

প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্ভাব্য সচিবসহ জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা ও ফিন্যান্সিয়াল এজেন্সির কর্মকর্তাদের উপস্থিতিই বলে দিচ্ছে, সৌজন্য সাক্ষাৎ বা নৈশভোজ নয়, কূটনৈতিক সম্পর্কের দৃষ্টিকোণ থেকে এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ব্রিটেনের গণমাধ্যমের দাবি, ভারতের পর যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও সুসম্পর্ক ধরে রাখতে ব্যর্থ ট্রুডো প্রশাসন। জি সেভেন জোটের নেতাদের কেউ কেউ জাস্টিন ট্রুডোকে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় দেখতে চান না।

অনেকটা সেই কারণেই সোমবার ক্যানাডিয়ান পণ্যে শুল্ক আরোপের ঘোষণা শুনে ট্রাম্পের সাথে টেলিফোনে কথা বলেন ট্রুডো। দাবি করেন, ১০ মিনিটের ঐ ফোনালাপে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন ইউএস প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট।

২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর অনেক আশার জন্ম দিলেও গেল কয়েকবছরে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন জাস্টিন ট্রুডো। বিশেষ করে নিত্যপণ্যের চড়া দাম ও জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ২০২৫ আসন্ন নির্বাচনে ট্রুডোর জয় নিয়ে আশাবাদী নন বিশ্বনেতারা। জরিপের তথ্যও সেই আভাস দিচ্ছে।

বিশেষ করে চলতি সপ্তাহে কানাডা ১০টি প্রদেশের ১০ জন প্রিমিয়ারের সাথে ওয়াশিংটন-অটোয়া সম্পর্কের ভবিষ্যৎ আলোচনার প্রস্তাব করছেন ট্রুডো। এই ঘোষণার পরপরই ট্রাম্পের সাথে ট্রুডোর সাক্ষাৎ থেকে এটি স্পষ্ট, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক ধরে রাখতে মরিয়া কানাডার সরকার প্রধান।

বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম তেল উত্তোলনকারী দেশ কানাডা। প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনে দেশটির অবস্থান ষষ্ঠ। প্রতিদিন ৪০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে দেশটি।

অটোয়ার জন্য উদ্বেগের বিষয়, ট্রাম্প নতুন শুল্ক নীতি বাস্তবায়িত হলে অপরিশোধিত তেলের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে কানাডাকে। ফলে, শুল্ক নীতি শিথিল না হলে, কানাডার ওপর অর্থনৈতিক যে চাপ সৃষ্টি হবে, তার দায় এড়াতে পারবেন না জাস্টিন ট্রুডো।