ঢাকা ০২:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নির্বাসিত রাজার ফিরে আসার শতবর্ষ উদযাপন

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:১৬:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৩৮০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঘানার আসান্তি অঞ্চলের রাজধানী কুমাসিতে নির্বাসিত রাজা আসান্তের ফিরে আসার শতবর্ষ উদযাপিত হয়েছে। নির্বাসিত রাজা প্রিমপেহের ফিরে আসাকে কেন্দ্র করে উৎসবমুখর পরিবেশে জনতার ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রিমপেহ ছিলেন ১৯ শতকের আসান্তি রাজ্যের রাজা। ব্রিটিশদের দাবি অস্বীকার করে তাদের সাম্রাজ্য বিস্তার করতে বাধা দিয়েছিলেন তিনি। ১৮৯৬ সালে ব্রিটিশ সেনারা আসান্তির রাজধানী কুমাসি আক্রমণ করে। এ সময় প্রিমপেহসহ রাজ পররিবারের ৫০ জন সদস্য, রাজ্য প্রধান ও সেবককে বন্দী করে এবং রাজপ্রাসাদ লুট করে। বন্দীদের এলমিনা দুর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সিয়েরা লিওন এবং ১৯০০ সালে সিসিলি দ্বীপপুঞ্জে নির্বাসিত করা হয় তাদের।

১৯২৪ সালে ব্রিটিশরা প্রিমপেহকে দেশে ফিরতে অনুমতি দেয়। ততদিনে বৃদ্ধ হয়ে যান প্রিমপেহ। রাজা প্রিমপেহের ফিরে আসার ১০০ বছর উদযাপন হলো এ বছর। রাজপরিবারের বর্তমান প্রধান আসান্তে ওসেই তুতু দ্বিতীয় ঐতিহ্য মেনে স্বর্ণালঙ্কারে সজ্জিত হয়ে পালকিতে চড়ে উল্লাসিত জনতার মাঝে আসেন। এ সময় শঙ্খধ্বনি, ড্রাম ও হাতির শিং থেকে সুর বাজানো হয়।

প্রিমপেহের নির্বাসন আসান্তি রাজ্য ও সিসিলির জন্য গভীর প্রভাব ফেলে। প্রিমপেহের পৌত্রী প্রিন্সেস মেরি প্রিমপেহ মেরিম্বা বর্তমানে সিসিলিতে বাস করছেন। শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কুমাসিতে এসেছিলেন তিনি। দাদা প্রিমপেহের শোচনীয় ইতিহাসের কথা মনে ধারণ করে তিনি এই ঐতিহাসিক আয়োজনে যোগ দেন। তিনি জানান, আসান্তির ঐতিহ্যকে পুনরায় আবিষ্কার করলেন যেন।

সিসিলিতে নির্বাসিত আসান্তে জনগণ ‘আসান্তি টাউন’ নামে একটি এলাকার মধ্যে বসবাস করতেন। সেখানকার একটি বিশেষ ভিলায় থাকতেন রাজা প্রিমপেহ। নির্বাসনের সময় প্রিমপেহ খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করছিলেন। তিনি আসান্তে শিশুদের শিক্ষার বিষয়ে উৎসাহিত করেন।

১৯১৮ সালে প্রিমপেহ ব্রিটিশ রাজা জর্জ পঞ্চমকে একটি চিঠি লেখেন, যেখানে তাঁর নির্বাসনের বেদনা এবং দেশে ফিরতে ইচ্ছার কথা জানান। ১৯২৪ সালে ব্রিটিশরা তাকে দেশে ফেরার অনুমতি দেয়। কুমাসিতে তাঁর ফিরে আসা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত ছিল। প্রিমপেহ ১৯৩১ সালে মারা যান।

পরবর্তীতে আসান্তি রাজত্ব পুনরুদ্ধার হয়। প্রিমপেহের নির্বাসন এবং ফিরে আসার গল্প শুধু বেদনা নয়, সহনশীলতার ও নতুন আশার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয় আজও।

নিউজটি শেয়ার করুন

নির্বাসিত রাজার ফিরে আসার শতবর্ষ উদযাপন

আপডেট সময় : ০১:১৬:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪

ঘানার আসান্তি অঞ্চলের রাজধানী কুমাসিতে নির্বাসিত রাজা আসান্তের ফিরে আসার শতবর্ষ উদযাপিত হয়েছে। নির্বাসিত রাজা প্রিমপেহের ফিরে আসাকে কেন্দ্র করে উৎসবমুখর পরিবেশে জনতার ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রিমপেহ ছিলেন ১৯ শতকের আসান্তি রাজ্যের রাজা। ব্রিটিশদের দাবি অস্বীকার করে তাদের সাম্রাজ্য বিস্তার করতে বাধা দিয়েছিলেন তিনি। ১৮৯৬ সালে ব্রিটিশ সেনারা আসান্তির রাজধানী কুমাসি আক্রমণ করে। এ সময় প্রিমপেহসহ রাজ পররিবারের ৫০ জন সদস্য, রাজ্য প্রধান ও সেবককে বন্দী করে এবং রাজপ্রাসাদ লুট করে। বন্দীদের এলমিনা দুর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সিয়েরা লিওন এবং ১৯০০ সালে সিসিলি দ্বীপপুঞ্জে নির্বাসিত করা হয় তাদের।

১৯২৪ সালে ব্রিটিশরা প্রিমপেহকে দেশে ফিরতে অনুমতি দেয়। ততদিনে বৃদ্ধ হয়ে যান প্রিমপেহ। রাজা প্রিমপেহের ফিরে আসার ১০০ বছর উদযাপন হলো এ বছর। রাজপরিবারের বর্তমান প্রধান আসান্তে ওসেই তুতু দ্বিতীয় ঐতিহ্য মেনে স্বর্ণালঙ্কারে সজ্জিত হয়ে পালকিতে চড়ে উল্লাসিত জনতার মাঝে আসেন। এ সময় শঙ্খধ্বনি, ড্রাম ও হাতির শিং থেকে সুর বাজানো হয়।

প্রিমপেহের নির্বাসন আসান্তি রাজ্য ও সিসিলির জন্য গভীর প্রভাব ফেলে। প্রিমপেহের পৌত্রী প্রিন্সেস মেরি প্রিমপেহ মেরিম্বা বর্তমানে সিসিলিতে বাস করছেন। শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কুমাসিতে এসেছিলেন তিনি। দাদা প্রিমপেহের শোচনীয় ইতিহাসের কথা মনে ধারণ করে তিনি এই ঐতিহাসিক আয়োজনে যোগ দেন। তিনি জানান, আসান্তির ঐতিহ্যকে পুনরায় আবিষ্কার করলেন যেন।

সিসিলিতে নির্বাসিত আসান্তে জনগণ ‘আসান্তি টাউন’ নামে একটি এলাকার মধ্যে বসবাস করতেন। সেখানকার একটি বিশেষ ভিলায় থাকতেন রাজা প্রিমপেহ। নির্বাসনের সময় প্রিমপেহ খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করছিলেন। তিনি আসান্তে শিশুদের শিক্ষার বিষয়ে উৎসাহিত করেন।

১৯১৮ সালে প্রিমপেহ ব্রিটিশ রাজা জর্জ পঞ্চমকে একটি চিঠি লেখেন, যেখানে তাঁর নির্বাসনের বেদনা এবং দেশে ফিরতে ইচ্ছার কথা জানান। ১৯২৪ সালে ব্রিটিশরা তাকে দেশে ফেরার অনুমতি দেয়। কুমাসিতে তাঁর ফিরে আসা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত ছিল। প্রিমপেহ ১৯৩১ সালে মারা যান।

পরবর্তীতে আসান্তি রাজত্ব পুনরুদ্ধার হয়। প্রিমপেহের নির্বাসন এবং ফিরে আসার গল্প শুধু বেদনা নয়, সহনশীলতার ও নতুন আশার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয় আজও।