ঢাকা ০৭:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দিল্লিকে বাদ দিয়ে বেইজিং গিয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী!

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:০৩:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৩৪০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি চীনের সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছেন। সম্প্রতি চার দিনের সফরে চীন গেছেন প্রবীণ এই কমিউনিস্ট নেতা। এ বছর চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি তাঁর প্রথম বিদেশ সফর। সাধারণত, নেপালের প্রধানমন্ত্রীরা দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সফর হিসেবে ভারত সফরে যান। কিন্তু অলি এই রীতির পরিবর্তন ঘটিয়েছেন।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) শুরু হওয়া এই সফরে অলি এবং চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মধ্যে বৈঠক হয়। দুই দেশের মধ্যে ৯টি চুক্তি নবায়ন হয়েছে। যদিও এসব চুক্তি নতুন নয়, বরং আগের চুক্তিগুলোর পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট সি নেপালের অবকাঠামো উন্নয়নে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন এবং নেপালকে ‘স্থলবেষ্টিত দেশ থেকে স্থল-সংযুক্ত’ দেশে রূপান্তর করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

ঐতিহ্যগতভাবে নেপাল ভারতের ওপর নির্ভরশীল। দেশটির দুই-তৃতীয়াংশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ভারতের সঙ্গে হয়ে থাকে। তবে অলি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করে অর্থনৈতিক ভারসাম্য আনতে চান। বর্তমানে নেপালের মোট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাত্র ১৪ শতাংশ চীনের সঙ্গে হলেও, দেশটি চীনের বৃহৎ ঋণ সুবিধা গ্রহণ করছে। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চীন নেপালকে ৩১ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি ঋণ দিয়েছে, যা ভারতের তুলনায় বেশি।

নেপাল ২০১৭ সালে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে (BRI) সই করে। তবে এখন পর্যন্ত প্রকল্পগুলোতে কার্যকর বাস্তবায়ন শুরু হয়নি। অলির বর্তমান চীন সফরে এই প্রকল্পগুলোতে অগ্রগতি আনতে আলোচনা হয়েছে।

চীনের সহায়তায় নেপালের পোখারায় নির্মিত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিমানবন্দরটি চালু হলেও ভারতের আকাশসীমা ব্যবহারে বাধা থাকায় খুব বেশি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া, চীন থেকে নেওয়া ঋণের সুদের চাপ নিয়েও অলির সরকারের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে।

নেপালের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক মহল, বিশেষ করে অলির নিজ দল এবং জোট অংশীদাররা, চীনের প্রকল্পগুলো ঋণের বদলে অনুদানের মাধ্যমে বাস্তবায়নের পক্ষে মত দিয়েছে।

অলির চীনমুখী অর্থনৈতিক কৌশল ভারতের প্রভাববলয় থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে এর ফলে চীনের সঙ্গে ঋণ সম্পর্ক এবং ভারতের সঙ্গে ঐতিহ্যগত সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখাই হবে নেপালের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

নিউজটি শেয়ার করুন

দিল্লিকে বাদ দিয়ে বেইজিং গিয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী!

আপডেট সময় : ১১:০৩:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি চীনের সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছেন। সম্প্রতি চার দিনের সফরে চীন গেছেন প্রবীণ এই কমিউনিস্ট নেতা। এ বছর চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি তাঁর প্রথম বিদেশ সফর। সাধারণত, নেপালের প্রধানমন্ত্রীরা দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সফর হিসেবে ভারত সফরে যান। কিন্তু অলি এই রীতির পরিবর্তন ঘটিয়েছেন।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) শুরু হওয়া এই সফরে অলি এবং চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মধ্যে বৈঠক হয়। দুই দেশের মধ্যে ৯টি চুক্তি নবায়ন হয়েছে। যদিও এসব চুক্তি নতুন নয়, বরং আগের চুক্তিগুলোর পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট সি নেপালের অবকাঠামো উন্নয়নে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন এবং নেপালকে ‘স্থলবেষ্টিত দেশ থেকে স্থল-সংযুক্ত’ দেশে রূপান্তর করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

ঐতিহ্যগতভাবে নেপাল ভারতের ওপর নির্ভরশীল। দেশটির দুই-তৃতীয়াংশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ভারতের সঙ্গে হয়ে থাকে। তবে অলি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করে অর্থনৈতিক ভারসাম্য আনতে চান। বর্তমানে নেপালের মোট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাত্র ১৪ শতাংশ চীনের সঙ্গে হলেও, দেশটি চীনের বৃহৎ ঋণ সুবিধা গ্রহণ করছে। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চীন নেপালকে ৩১ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি ঋণ দিয়েছে, যা ভারতের তুলনায় বেশি।

নেপাল ২০১৭ সালে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে (BRI) সই করে। তবে এখন পর্যন্ত প্রকল্পগুলোতে কার্যকর বাস্তবায়ন শুরু হয়নি। অলির বর্তমান চীন সফরে এই প্রকল্পগুলোতে অগ্রগতি আনতে আলোচনা হয়েছে।

চীনের সহায়তায় নেপালের পোখারায় নির্মিত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিমানবন্দরটি চালু হলেও ভারতের আকাশসীমা ব্যবহারে বাধা থাকায় খুব বেশি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া, চীন থেকে নেওয়া ঋণের সুদের চাপ নিয়েও অলির সরকারের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে।

নেপালের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক মহল, বিশেষ করে অলির নিজ দল এবং জোট অংশীদাররা, চীনের প্রকল্পগুলো ঋণের বদলে অনুদানের মাধ্যমে বাস্তবায়নের পক্ষে মত দিয়েছে।

অলির চীনমুখী অর্থনৈতিক কৌশল ভারতের প্রভাববলয় থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে এর ফলে চীনের সঙ্গে ঋণ সম্পর্ক এবং ভারতের সঙ্গে ঐতিহ্যগত সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখাই হবে নেপালের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।