ঢাকা ১০:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ ২০২৫, ২০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

আসাদ বিরোধীদের হঠাৎ উত্থানে সংকটে সিরিয়া

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:১৩:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৩৮৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাশার আল আসাদ সরকার বিরোধী বিদ্রোহীরা ৮ বছর পর আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠায় সিরিয়ায় ঘনীভূত হচ্ছে সংকট। বিদ্রোহীরা শহরের দখল নেয়ায় এক সপ্তাহ ধরে খাদ্য ও জ্বালানির অভাবে হাহাকার তৈরি হয়েছে আলেপ্পো ও ইদলিবসহ আশপাশের এলাকায়। দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়েও ক্ষুধা নিবারণে একটি রুটি কিনতে পারছেন না অনেকে। জ্বালানি সংকটে পরিবহনের ভাড়া কয়েকগুণ বাড়ায় যাত্রীদের দুর্ভোগও চরমে। গৃহযুদ্ধের কারণে এরচেয়েও কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলেও নিজ ভূখণ্ড ছাড়তে চান না দামেস্কের বাসিন্দারা।

পকেটে অর্থ থাকা সত্ত্বেও খাবারের অভাবে হাহাকারের দৃশ্যটি ৮ বছর পর নতুন করে গৃহযুদ্ধে উত্তাল সিরিয়ার আলেপ্পো ও ইদলিবসহ আশপাশের এলাকার। ২০১৬ সালের পর গত ২৭ নভেম্বর বাশার আল আসাদ সরকার বিরোধী তাহরির আল সাম নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীরা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠায় এভাবেই ঘনীভূত হচ্ছে সংকট। বিদ্রোহীদের শহর দখল অভিযানে জ্বালানির সরবরাহের অভাবে ঘরের চুলা যেমন জ্বলছে না, তেমনি নিরাপত্তার অভাবে বেশিরভাগ বেকারি বন্ধ রাখায় খাদ্য সংকট বাড়ছে।

বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘চাহিদা অনুযায়ী রুটি পাওয়া যাচ্ছে না। লাইন দীর্ঘ হচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে আমরা ঠিকমতো খাবার পাচ্ছি না।’

আরেকজন বলেন, ‘আমরা আশরাফিহ এলাকায় আছি। এখানকার বেশিরভাগ ঘরে চুলা জ্বলছে না। রুটির জন্য দুই ঘণ্টা ধরে লাইনে অপেক্ষা করছি।’

আলেপ্পো ও ইদলিবের পর হামা শহর দখলের যাত্রায় বিদ্রোহীদের ঠেকাতে সিরিয়া ও রুশ বাহিনী যৌথ হামলা জোরালো করার পর বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। এমন ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতিতে আলেপ্পোর বেশিরভাগ গ্যাস পাম্প কাজ করছে না। এতে করে সড়কে যানবাহনের অভাবে বেড়ে গেছে পরিবহন ভাড়াও।

বাসিন্দাদের আরেকজন বলেন, ‘আলেপ্পোর বেশিরভাগ গ্যাস স্টেশনে এখন স্থবিরতা নেমে এসেছে। যার কারণে আপনারা পরিবহন সংকট দেখতে পাচ্ছেন। রাস্তায় বাস-ট্যাক্সি নেই বললেই চলে। এই সুযোগে অনেক পরিবহন যাত্রীদের শোষণ করছে। কয়েকগুণ বাড়িয়ে ভাড়া চাওয়া হচ্ছে।’

২০১১ সালে শুরু সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ উত্তেজনা ২০২০ সাল থেকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছিলেন বাশার আল আসাদ সরকার। কিন্তু তাহরির আল সাম নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীদের দখল অভিযান দেশটির সাধারণ মানুষকে আবারও করুণভাবে ভোগাচ্ছে। সরকারি ও বিদ্রোহী বাহিনীর মধ্যে এই যুদ্ধ পরিস্থিতি যতই ভয়াবহ হোক না কোনো, কিছুতেই নিজ ভূখণ্ড ছাড়তে চান না রাজধানী দামেস্কের বাসিন্দারা।

এদিকে বিদ্রোহীরা আলেপ্পো দখলের পর বাড়ি-ঘর রেখে পালিয়ে যাওয়া বাসিন্দারা উত্তর সিরিয়ার তাবকা শহরে পৌঁছেছেন। নিজ উদ্যোগেই তাঁবু গেড়ে করে নিচ্ছেন মাথা গোজার ঠাঁই। হাজার হাজার বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়ে সার্বিকভাবে সহায়তা করছে স্থানীয় প্রশাসন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আসাদ বিরোধীদের হঠাৎ উত্থানে সংকটে সিরিয়া

আপডেট সময় : ০১:১৩:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

বাশার আল আসাদ সরকার বিরোধী বিদ্রোহীরা ৮ বছর পর আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠায় সিরিয়ায় ঘনীভূত হচ্ছে সংকট। বিদ্রোহীরা শহরের দখল নেয়ায় এক সপ্তাহ ধরে খাদ্য ও জ্বালানির অভাবে হাহাকার তৈরি হয়েছে আলেপ্পো ও ইদলিবসহ আশপাশের এলাকায়। দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়েও ক্ষুধা নিবারণে একটি রুটি কিনতে পারছেন না অনেকে। জ্বালানি সংকটে পরিবহনের ভাড়া কয়েকগুণ বাড়ায় যাত্রীদের দুর্ভোগও চরমে। গৃহযুদ্ধের কারণে এরচেয়েও কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলেও নিজ ভূখণ্ড ছাড়তে চান না দামেস্কের বাসিন্দারা।

পকেটে অর্থ থাকা সত্ত্বেও খাবারের অভাবে হাহাকারের দৃশ্যটি ৮ বছর পর নতুন করে গৃহযুদ্ধে উত্তাল সিরিয়ার আলেপ্পো ও ইদলিবসহ আশপাশের এলাকার। ২০১৬ সালের পর গত ২৭ নভেম্বর বাশার আল আসাদ সরকার বিরোধী তাহরির আল সাম নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীরা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠায় এভাবেই ঘনীভূত হচ্ছে সংকট। বিদ্রোহীদের শহর দখল অভিযানে জ্বালানির সরবরাহের অভাবে ঘরের চুলা যেমন জ্বলছে না, তেমনি নিরাপত্তার অভাবে বেশিরভাগ বেকারি বন্ধ রাখায় খাদ্য সংকট বাড়ছে।

বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘চাহিদা অনুযায়ী রুটি পাওয়া যাচ্ছে না। লাইন দীর্ঘ হচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে আমরা ঠিকমতো খাবার পাচ্ছি না।’

আরেকজন বলেন, ‘আমরা আশরাফিহ এলাকায় আছি। এখানকার বেশিরভাগ ঘরে চুলা জ্বলছে না। রুটির জন্য দুই ঘণ্টা ধরে লাইনে অপেক্ষা করছি।’

আলেপ্পো ও ইদলিবের পর হামা শহর দখলের যাত্রায় বিদ্রোহীদের ঠেকাতে সিরিয়া ও রুশ বাহিনী যৌথ হামলা জোরালো করার পর বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। এমন ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতিতে আলেপ্পোর বেশিরভাগ গ্যাস পাম্প কাজ করছে না। এতে করে সড়কে যানবাহনের অভাবে বেড়ে গেছে পরিবহন ভাড়াও।

বাসিন্দাদের আরেকজন বলেন, ‘আলেপ্পোর বেশিরভাগ গ্যাস স্টেশনে এখন স্থবিরতা নেমে এসেছে। যার কারণে আপনারা পরিবহন সংকট দেখতে পাচ্ছেন। রাস্তায় বাস-ট্যাক্সি নেই বললেই চলে। এই সুযোগে অনেক পরিবহন যাত্রীদের শোষণ করছে। কয়েকগুণ বাড়িয়ে ভাড়া চাওয়া হচ্ছে।’

২০১১ সালে শুরু সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ উত্তেজনা ২০২০ সাল থেকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছিলেন বাশার আল আসাদ সরকার। কিন্তু তাহরির আল সাম নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীদের দখল অভিযান দেশটির সাধারণ মানুষকে আবারও করুণভাবে ভোগাচ্ছে। সরকারি ও বিদ্রোহী বাহিনীর মধ্যে এই যুদ্ধ পরিস্থিতি যতই ভয়াবহ হোক না কোনো, কিছুতেই নিজ ভূখণ্ড ছাড়তে চান না রাজধানী দামেস্কের বাসিন্দারা।

এদিকে বিদ্রোহীরা আলেপ্পো দখলের পর বাড়ি-ঘর রেখে পালিয়ে যাওয়া বাসিন্দারা উত্তর সিরিয়ার তাবকা শহরে পৌঁছেছেন। নিজ উদ্যোগেই তাঁবু গেড়ে করে নিচ্ছেন মাথা গোজার ঠাঁই। হাজার হাজার বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়ে সার্বিকভাবে সহায়তা করছে স্থানীয় প্রশাসন।