ঢাকা ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সামরিক আইনের জন্য ক্ষমা চাইলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:৪৬:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৪২৬ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সামরিক আইন জারির ঘটনায় জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি ক্ষমা চেয়েছেন বলে আজ শনিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

জাতির উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত ভাষণে ইউন সুক ইওল বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমার হতাশা থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জনগণের উদ্বেগ ও অসুবিধার সৃষ্টি করেছে বিষয়টি। আমি খুবই দুঃখিত এবং আপনাদে কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।’

গত মঙ্গলবার গভীর রাতে সামরিক আইন জারি করার পর এবারই প্রথম বক্তব্য দিলেন অভিসংশনের দাবির মুখে থাকা প্রেসিডেন্ট। তিনি আরও বলেন, ‘আমি এই ঘোষণার কারণে সৃষ্ট আইনি এবং রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার সমস্যা এড়াতে পারব না।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ ভাবছে, আবার সামরিক আইন ঘোষণা করা হবে কিনা! তবে আমি স্পষ্টভাবে বলতে পারি, অবশ্যই হবে না। সামরিক আইন ঘোষণা হবে না। দেশকে কীভাবে স্থিতিশীল করা যায়, তার সিদ্ধান্ত আমি আমার দলের ওপর ছেড়ে দেব। এর মধ্যে আমার মেয়াদের বিষয়টিও রয়েছে।’

প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘দেশের ভবিষ্যত পরিচালনার জন্য আমার দল এবং সরকার দায়ী থাকবে। আমি আমার মাথা নত করছি এবং জনগণের উদ্বেগের জন্য আমি আবারও ক্ষমাপ্রার্থী।’

বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, গত ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করেন প্রেসিডেন্ট ইওল। পরে এই আইন বাতিল করে দেশটির পার্লামেন্ট। এরপর থেকে ইওলের বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিরোধী দলগুলো।

চলমান উত্তেজনার মধ্যেই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হিউন। সামরিক শাসন জারির পর বিরোধী দলগুলোর প্রেসিডেন্টকে অভিসংশনের ডাক দেওয়ার পর বুধবার পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।

দক্ষিণ কোরিয়ার আইন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টকে অভিশংসিত করতে প্রয়োজন দুই-তৃতীয়াংশ আইনপ্রণেতার ভোট। দেশটির পার্লামেন্টে ইওলের দলের আইনপ্রণেতার সংখ্যা ১০৮। প্রেসিডেন্ট ইওল যদি অভিশংসিত হন, সেক্ষেত্রে ৬০ দিনের মধ্যে বাছাই করতে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। আর এই দুই মাস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে ইউন সুক ইওলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযাগ এনেছে প্রধান বিরোধী দল। আরও ৬টি বিরোধী দলের দাবি, ইওলের পদত্যাগ। তাঁকে মুখোমুখি হতে হবে অভিশংসনের। যদিও ১৯৮০ সালের পর দেশটির ইতিহাসে এমন ঘটনার স্বাক্ষী হননি কোনো প্রেসিডেন্ট।

ইউন সুক ইওলের পদত্যাগের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে দেশটির সবচেয়ে বড় শ্রমিক সংগঠন কোরিয়ান কনফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়ন। এ ছাড়া, ইওল বিরোধী বিক্ষোভ-স্লগানে উত্তাল দক্ষিণ কোরিয়া। তাঁকে গ্রেপ্তারের দাবিও জানান বিক্ষুব্ধ জনতা। এমন অবস্থায়, অনিশ্চয়তার মুখে সিউল প্রধানের ভবিষ্যৎ।

নিউজটি শেয়ার করুন

সামরিক আইনের জন্য ক্ষমা চাইলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট

আপডেট সময় : ১১:৪৬:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪

সামরিক আইন জারির ঘটনায় জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি ক্ষমা চেয়েছেন বলে আজ শনিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

জাতির উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত ভাষণে ইউন সুক ইওল বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমার হতাশা থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জনগণের উদ্বেগ ও অসুবিধার সৃষ্টি করেছে বিষয়টি। আমি খুবই দুঃখিত এবং আপনাদে কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।’

গত মঙ্গলবার গভীর রাতে সামরিক আইন জারি করার পর এবারই প্রথম বক্তব্য দিলেন অভিসংশনের দাবির মুখে থাকা প্রেসিডেন্ট। তিনি আরও বলেন, ‘আমি এই ঘোষণার কারণে সৃষ্ট আইনি এবং রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার সমস্যা এড়াতে পারব না।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ ভাবছে, আবার সামরিক আইন ঘোষণা করা হবে কিনা! তবে আমি স্পষ্টভাবে বলতে পারি, অবশ্যই হবে না। সামরিক আইন ঘোষণা হবে না। দেশকে কীভাবে স্থিতিশীল করা যায়, তার সিদ্ধান্ত আমি আমার দলের ওপর ছেড়ে দেব। এর মধ্যে আমার মেয়াদের বিষয়টিও রয়েছে।’

প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘দেশের ভবিষ্যত পরিচালনার জন্য আমার দল এবং সরকার দায়ী থাকবে। আমি আমার মাথা নত করছি এবং জনগণের উদ্বেগের জন্য আমি আবারও ক্ষমাপ্রার্থী।’

বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, গত ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করেন প্রেসিডেন্ট ইওল। পরে এই আইন বাতিল করে দেশটির পার্লামেন্ট। এরপর থেকে ইওলের বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিরোধী দলগুলো।

চলমান উত্তেজনার মধ্যেই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হিউন। সামরিক শাসন জারির পর বিরোধী দলগুলোর প্রেসিডেন্টকে অভিসংশনের ডাক দেওয়ার পর বুধবার পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।

দক্ষিণ কোরিয়ার আইন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টকে অভিশংসিত করতে প্রয়োজন দুই-তৃতীয়াংশ আইনপ্রণেতার ভোট। দেশটির পার্লামেন্টে ইওলের দলের আইনপ্রণেতার সংখ্যা ১০৮। প্রেসিডেন্ট ইওল যদি অভিশংসিত হন, সেক্ষেত্রে ৬০ দিনের মধ্যে বাছাই করতে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। আর এই দুই মাস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে ইউন সুক ইওলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযাগ এনেছে প্রধান বিরোধী দল। আরও ৬টি বিরোধী দলের দাবি, ইওলের পদত্যাগ। তাঁকে মুখোমুখি হতে হবে অভিশংসনের। যদিও ১৯৮০ সালের পর দেশটির ইতিহাসে এমন ঘটনার স্বাক্ষী হননি কোনো প্রেসিডেন্ট।

ইউন সুক ইওলের পদত্যাগের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে দেশটির সবচেয়ে বড় শ্রমিক সংগঠন কোরিয়ান কনফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়ন। এ ছাড়া, ইওল বিরোধী বিক্ষোভ-স্লগানে উত্তাল দক্ষিণ কোরিয়া। তাঁকে গ্রেপ্তারের দাবিও জানান বিক্ষুব্ধ জনতা। এমন অবস্থায়, অনিশ্চয়তার মুখে সিউল প্রধানের ভবিষ্যৎ।